টেবিল টেনিসের দুনিয়ায় হইচই ফেলে দিতে শিলিগুড়ির খেলোয়াড়দের জুড়ি নেই। দেশ তো বটেই, বিদেশেও ‘টিটি ওয়ার্ল্ড’-এ সমীহ আদায় করে নেয় শিলিগুড়ি। কিন্তু শিলিগুড়ির ব্যাডমিন্টন আজও সেই মান্ধাতা আমলে পড়ে রয়েছে। অথচ বাম আমলে শহরের উপকণ্ঠে দাগাপুরে লন টেনিস অ্যাকাডেমি গড়ার জন্য জমি দিয়েছিল শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এসজেডিএ-এর সেই জমিতে অ্যাকাডেমি শুরুর পরে তা এখন বন্ধ হয়ে আগাছার ঝোপে ঢাকা। এসজেডিএ-এর আওতায় থাকা সেই শহরে ব্যাডমিন্টন খেলার মতো আধুনিক কোর্টের আজও আকাল। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অত্যাধুনিক ইন্ডোর স্টেডিয়াম হয়েছে। ফলে, নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন শহরের ক্রীড়াপ্রেমীরা। সে জন্য একঝাঁক নবীন ও প্রবীণ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় জোট বেঁধে তৈরি করেছেন ‘শিলিগুড়ি ব্যাডমিন্টন ক্লাব’। আজ, রবিবার শিলিগুড়ির বিধান রোডের একটি হোটেলে ওই ক্লাবের পথ চলার সূচনা হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। সব ঠিক থাকলে সেখানে থাকবেন অন্তত ৪৫ জন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। সেখানে মন্ত্রী গৌতম দেবেরও উপস্থিত থাকার কথা।
শনিবার উদ্যোক্তাদের পক্ষে ব্যাডমিন্টন ক্লাবের সভাপতি বিপ্লব ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা শহরের ব্যাডমিন্টন খেলার বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক পরিকাঠামো গড়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছি। সে জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার। জলপাইগুড়িতে বিশ্ব মানের ইন্ডোর স্টেডিয়াম দেখে বিশেষজ্ঞরা অভিভূত। আমরা চাই শিলিগুড়িতেও ওই রকম একটা ইন্ডোর স্টেডিয়াম হোক। যেখানে ব্যাডমিন্টন খেলার যাবতীয় পরিকাঠামো থাকবে।’’ তিনি জানান, অতীতে শিলিগুড়িতে যেমন নানা ক্লাবে ব্যাডমিন্টনের চর্চা ছিল সেই ঐতিহ্য ফেরাতেই খেলোয়াড়রা একজোট হয়েছেন।
বস্তুত, শিলিগুড়িতে ব্যাডমিন্টনের চর্চা বহু পুরানো। একটা সময়ে কলেজপাড়ার বাঘাযতীন ক্লাব, রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সঙ্ঘ, তিস্তা ব্যারাজ ক্লাব সহ অনেক ক্লাবে খেলা হতো। এখন তা কমে সাকুল্যে ২টি জায়গায় খেলা হয়। রামকৃষ্ণ ও রেলের ক্লাবে। ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি গড়ার জন্য সে ভাবে চেষ্টাও হয়নি বলে খেলোয়াড়দের অনেকেরই অভিযোগ। অথচ একটা সময়ে শিলিগুড়ির খেলাোয়াদের অনেকেই রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তা সত্ত্বেও ব্যাডমিন্টনের খেলার পরিকাঠামো তৈরি করতে পুরসভা, প্রশাসন হয়নি কেন তা নিয়েই নানা বিতর্ক রয়েছে।
শিলিগুড়ি ব্যাডমিন্টন ক্লাবের উদ্যোক্তারা অবশ্য কোনও বিতর্ক চান না। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলার ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন, পুরসভা, প্রশাসনের সহোগিতা নিয়ে তাঁরা শহরে কিংবা লাগোয়া এলাকায় অ্যাকাডেমি গড়তে চান। শিলিগুড়ি জেলা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন বসু বলেন, ‘‘এমন সংগঠন যত বেশি হবে ততই ব্যাডমিন্টনের প্রসার হবে। অতীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েকজন চেষ্টা করলেও ফলপ্রসূ হয়নি।’’ তিনি জানান, নতুন কোনও সংগঠন অ্যাকাডেমি গড়ে তাঁদের অ্যাসোসিয়শনের সঙ্গে চলতে চাইলে সহযোগিতা করা হবে।