রেফারিকে তোপ নেমারের

এই সিদ্ধান্তের পরে রেফারিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন পিএসজি-র কোচ উনাই এমেরি এবং স্বয়ং নেমার। কোচের দাবি, নেমারের মতো ফুটবলারকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রেফারি, যে কাজটা আদৌ ঠিকঠাক হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:২৪
Share:

মার্সেই বনাম প্যারিস সাঁ জারমাঁ ম্যাচে শিরোনামে চলে এলেন নেমার দ্য সিলভা জুনিয়র। তবে মাঠের পারফরম্যান্সের জন্য নয়। লাল কার্ড (জোড়া হলুদ কার্ড দেখা এবং পরে রেফারি এবং মার্সেই সমর্থকদের বিরুদ্ধে তোপ দাগার জন্য।

Advertisement

ফরাসি লিগে পিএসজি বনাম মার্সেই মানে বরাবর তীব্র রেষারেষির ম্যাচ। স্তাদ ভেলোদ্রমে রবিবার যে লড়াই শেষ পর্যন্ত ২-২ অবস্থায় শেষ হয়। আর মার্সেইয়ের ফুটবলারদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করার অভিযোগে দু’বার হলুদ কার্ড দেখানো হয় নেমারকে। এও অভিযোগ উঠেছে, মার্সেইয়ের আর্জেন্তাইন ফুটবলার লুকাস ওকাম্পোসকে ঢুঁসো মারার চেষ্টাও নাকি করেছেন নেমার।

এই সিদ্ধান্তের পরে রেফারিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন পিএসজি-র কোচ উনাই এমেরি এবং স্বয়ং নেমার। কোচের দাবি, নেমারের মতো ফুটবলারকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রেফারি, যে কাজটা আদৌ ঠিকঠাক হচ্ছে না। ‘‘ম্যাচে অন্তত চার বার খুব গুরুতর ভাবে ফাউল করা হয় নেমারকে। পুরো ম্যাচ জুড়ে নেমারকে মারার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কার্ড দেখতে হল নেমারকেই। রেফারির সিদ্ধান্তে আমরা অত্যন্ত হতাশ,’’ বলেছেন নেমারদের কোচ।

Advertisement

আরও পড়ুন: এ বার নেইমারের ঢুঁসো, মনে করালেন জিদানকে

নেমারের অভিযোগ, মার্সেই ফুটবলারদের নাটকে বিভ্রান্ত হয়ে রেফারি তাঁকে কার্ড দেখিয়েছেন। ‘‘যা হল সেটা মোটেই ফুটবল নয়। মার্সেইয়ের নাটুকেপনার ফাঁদে পড়ে গেল রেফারি,’’ বলেছেন প্রাক্তন বার্সেলোনা তারকা।

একই সঙ্গে নেমার আঙুল তুলেছেন দর্শকদের দিকেও। কিছুটা বিদ্রুপ করেই তিনি বলেছেন, ‘‘গ্যালারি থেকে আমার দিকে যা ছুড়ে মারা হয়েছে, তা দিয়ে আমার লাঞ্চটা হয়ে যেত।’’ গ্যালারি থেকে কী ছো়ড়া হয়েছিল আপনার দিকে? নেমার বলেছেন, ‘‘ঠান্ডা পানীয়ের ক্যান থেকে শুরু করে ব্যাগেত (ফরাসি রুটি)— সব কিছুরই লক্ষ্যবস্তু ছিলাম আমি।’’

ফরাসি লিগের তীব্র রেষারেষির এই ম্যাচকে বলা হয়ে থাকে ফ্রান্সের ‘ক্লাসিকো’। এই ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা এতই বেশি থাকে যে গত কাল পিএসজি সমর্থকদের স্টেডিয়ামে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি বড়সড় ঝামেলার আশঙ্কায়। তাতে অবশ্য ঝামেলা পুরোপুরি এড়ানো যায়নি। মাঠের বাইরেই দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। প্যারিসের নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়। ষোলো জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

ম্যাচের পরে নেমার বলেছেন, ‘‘আমরা সাধ্যমতো ভাল খেলার চেষ্টা করেও পারিনি। স্বীকার করছি, পিএসজি সেরা ফর্মে ছিল না। আমাদের এই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’’ ম্যাচে প্রথম গোল করে মার্সেইকে এগিয়ে দেন লুইজ গুস্তাভো। এর পরে ১-১ করে দেন নেমার। এই নিয়ে ক্লাবের হয়ে ১১ ম্যাচে ১০ গোল হয়ে গেল তাঁর। মার্সেই যখন ২-১ এগিয়ে রয়েছে, এই অবস্থায় দু’মিনিটের মাথায় জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠে ছাড়তে হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত দুরন্ত ফ্রি কিকে ২-২ করেন এডিনসন কাভানি। নেমারের কার্ড দেখা নিয়ে পরে পিএসজি কোচ বলেছেন, ‘‘নেমারকে পুরো ম্যাচ জুড়ে তাতানো হয়েছে। ওকে বার বার ফাউল করা হয়েছে। আমাদের দেখা উচিত এই রকম ফুটবলারদের যাতে ঠিকমতো সুরক্ষা দেওয়া হয়। আমাদের যেমন নেমার আছে, মার্সেইয়েরও তো দিমিত্রি পায়েত রয়েছে। মাঠে সবার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা উচিত।’’

অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞই আবার বলেছেন, মার্সেইকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল পিএসজি-র, সেটা তারা দেয়নি। ম্যাচ শুরুর আগে দানি আলভেজ তো বলে দেন, ‘‘মার্সেইয়ের এক জন ফুটবলারেরও নাম করতে পারব না আমি।’’ ম্যাচের পরে কিলিয়ান এমবাপে স্বীকার করে নেন, ‘‘ফরাসি ক্লাসিকোকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল আমাদের, সেটা আমরা দিইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন