PK Banerjee

‘পিকে আর আমি বৃষ্টিতে প্র্যাকটিস করছিলাম, বাঘাদার হুঙ্কারে প্রায় পালিয়ে গেলাম’

শুধু ক্লাবে নয়, জাতীয় দলের হয়েও একসঙ্গে খেলেছিলেন দু’জন। পুরনো দিনের স্মৃতিতে ডুব দিলেন নিখিল নন্দী।

Advertisement

কৃশানু মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ১৪:৫৮
Share:

পুরনো সেই দিনের কথা।

১৯৫৮ সাল। তিন প্রধানের বাইরে সে বারই প্রথম এবং শেষ বার কলকাতা লিগ জিতেছিল অন্য কোনও দল। ইস্টার্ন রেলের সেই জয়ের অন্যতম স্থপতি পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনন্যসাধারণ পারফরম্যান্সের কথা মনে করলে ৬২ বছর পরেও চোখের কোণ চিকচিক করে ওঠে প্রাক্তন অলিম্পিয়ান নিখিল নন্দীর।

Advertisement

তাঁর ভ্রাতৃসম পিকে সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। পদ্মশ্রী পিকে-র বর্ণময় জীবন রূপকথা হয়ে রয়ে গিয়েছে। পুরনো দিনের স্মৃতিতে ডুব দিয়ে নিখিলবাবু বলছেন, ‘‘আমার আর প্রদীপের একটা মজার কথা মনে পড়ছে। ১৯৫৮ সালের লিগের মাঝে কিছুদিন খেলা বন্ধ ছিল। সেই সময়ে খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। বাঘাদা (বাঘা সোম) সেই সময়ে আমাদের দিন কয়েকের জন্য অনুশীলন বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। একদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। আমি আর প্রদীপ ভেজা মাঠে অনুশীলন করছিলাম।’’

কিছু ক্ষণ পরেই পিকে ও নিখিলবাবু দেখতে পান ক্ষুব্ধ ‘বাঘাদা’ মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে। তার পরের ঘটনা স্মৃতিচারণ করে নিখিলবাবু বলছেন, ‘‘বাঘাদা রেগে গিয়ে আমাদের বললেন, তোমরা মাঠ ছেড়ে এখনই চলে যাও। না হলে কিন্তু সাসপেন্ড করবো।’’ বাঘা সোম যেমন ফুটবলারদের স্নেহ করতেন, তেমনই ছিলেন প্রচণ্ড কড়া। সবাই তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। ‘বাঘাদা’র হুঙ্কারে মাঠ ছেড়ে প্রায় পালিয়ে গেলাম দু’জন।

Advertisement

আরও পড়ুন: নক্ষত্রপতন, চলে গেলেন পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীর ভুলে বদলে গিয়েছিল নাম, ভারতীয় ফুটবলে জ্বেলেছিলেন প্রদীপ

সে বারের লিগের শুরুতে ইস্টার্ন রেলের কেউই বিশ্বাস করতে পারেননি যে কলকাতা লিগ জিতবে দল। লিগের শুরুর দিকে লিগ তালিকায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টার্ন রেল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিন প্রধানকে টপকে কলকাতা লিগ জিতে নিয়েছিল তারা। নিখিল নন্দী বলছিলেন, ‘‘১৯৫৮ সালে লিগ জেতার পিছনে যেমন আমাদের অবদান ছিল, তেমনই ছিল বাঘাদার।’’ সে বার ফুটবলারদের কী ভাবে উজ্জীবিত করেছিলেন বাঘা সোম? প্রাক্তন অলিম্পিয়ান বলছিলেন, ‘‘আমাকে আর প্রদীপকে বাঘাদা মাঝে মাঝেই ডেকে পাঠাতেন। ফুটবল নিয়ে আলোচনা করতেন। আমরাও যে চ্যাম্পিয়ন হতে পারি, সেই বিশ্বাস আমাদের জুগিয়েছিলেন বাঘাদাই। মাঠে নেমে আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছিলাম।’’

ভারতীয় ফুটবলে তখন পরিচিত নাম পিকে। নিখিলবাবুও তারকা। শুধু ক্লাবে নয়, জাতীয় দলের হয়েও একসঙ্গে খেলেছিলেন দু’জন। কড়া ট্যাকল করতে দক্ষ ছিলেন নিখিলবাবু। সতীর্থর প্রয়াণে আবেগপ্রবণ নিখিলবাবু বলছিলেন, ‘‘রোম অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে প্রদীপ গোল করেছিল। সে দিন প্রদীপ কী ভাবে গোলটা করেছিল, এত দিন পরে আর তা মনে পড়ছে না। তবে সেই সময়ে তো প্রদীপ দুর্দান্ত ছন্দে ছিল। উইংয়ে খেলত। দারুণ গতি ছিল। সেই সঙ্গে দারুণ শট নিতে পারতো।’’ আজ সব থেমে গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন