T20 World Cup

বিশ্বকাপ অবাস্তব, বলছে অস্ট্রেলিয়াই

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরা সরকারি ভাবে প্রকাশ্যে না-বললেও, ভিতরে-ভিতরে চাইছিলেন, বিশ্বকাপ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হয়ে যাক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৪:১২
Share:

প্রস্তুতি: মাঠে নামা হচ্ছে না। জিমেই চলছে হার্দিকের ট্রেনিং। ফেসবুক

আইসিসি যতই টালবাহানা জারি রাখুক, খোদ অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড আবারও জানিয়ে দিল, এ বছরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের আশা ‘অবাস্তব’। স্টিভ স্মিথদের ক্রিকেট বোর্ডের এমন ঘোষণা এক দিকে যেমন আইসিসি-র জন্য ধাক্কা, তেমনই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের জন্য মনোবল-বর্ধক।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরা সরকারি ভাবে প্রকাশ্যে না-বললেও, ভিতরে-ভিতরে চাইছিলেন, বিশ্বকাপ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হয়ে যাক। তা হলে তাঁদেরও আইপিএলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সুবিধে হয়। এ নিয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই যে, করোনার ধাক্কায় বিশ্বকাপ এবং আইপিএলের মতো দু’টো বড় ইভেন্ট এ বছরে আর করে ওঠা সম্ভব হবে না। যত সময় যাচ্ছে, ততই মনে হচ্ছে বিশ্বকাপের সম্ভাবনা কমছে, আইপিএলের দরজা খোলা থাকছে। যদি শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ এ বছরের মতো বাতিল হয়ে যায়, তা হলে দেশে হোক বা বিদেশে, অক্টোবর-নভেম্বরে আইপিএল করার মরিয়া চেষ্টা করবেন সৌরভরা।

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান আর্ল এডিংস এ দিন এক ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে বলে দেন, ‘‘আমি বলব ১৬টি দেশকে নিয়ে বিশ্বকাপ করা খুবই কঠিন। অবাস্তব এবং ভীষণ, ভীষণ কঠিন।’’ ১৬টি দেশ থেকে প্রত্যেক দলের অন্তত ২৫ জন করে সদস্য আসবেন বিশ্বকাপ খেলতে। অন্তত ১৬জন ক্রিকেটার এবং এখন প্রত্যেকটি দলে দশ জনেরও বেশি কোচ, সহকারী কোচেরা থাকেন। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে করোনার সময়ে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের।

Advertisement

এক শীর্ষ কর্তা বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপ মানে প্রায় শুধু দলগুলি মিলিয়ে ৪০০ জনকে সামলানো। তার পরে বিভিন্ন দেশের কর্তারা আছে। টিভি সম্প্রচারের কর্মীরা আছে। এত বড় আয়োজন করে ওঠাটা সত্যিই অবাস্তব লাগছে।’’ ওয়াকিবহাল মহলের মত, করোনার ধাক্কায় এই মন্দার বাজারে বিশ্বকাপ করে অস্ট্রেলিয়ার লাভের চেয়ে লোকসানই হবে বেশি। অস্ট্রেলিয়ার আয়ের বিরাট অংশ আসত বিশ্বকাপের সময়ে ট্যুরিজম, স্থানীয় স্পনসর এবং টিকিট বিক্রি থেকে। তিনটি দিকই জোরাল ধাক্কা খেয়েছে করোনার কারণে।

বরং স্টিভ স্মিথদের বোর্ড অনেক বেশি করে তাকিয়ে রয়েছে বৎসরান্তে তাদের দেশে বিরাট কোহালিদের পূর্ণাঙ্গ সফরের দিকে। মনে করা হচ্ছে, সেই সিরিজ থেকে করোনার সময়ে আর্থিক ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে উঠতে পারবে অস্ট্রেলীয় বোর্ড। এখন তাদের এমনই জেরবার অবস্থা যে, আঠারো মাস বাকি থাকতে সিইও কেভিন রবার্টসকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। অ্যালান বর্ডার অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন, একা রবার্টসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে কেন? দু’বছর আগেও ব্যাঙ্কে লক্ষ লক্ষ ডলার ছিল। মাত্র তিন মাসের লকডাউনে সব টাকা ফুরিয়ে গেল কী করে? প্রশ্ন তুলেছেন বর্ডার।

এ রকম আর্থিক অন্ধকারের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বকাপ করার জন্য মরিয়া ভাব দেখাতে পারছে না। আর অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি হয়ে দাঁড়াতে পারে ভারতের লাভ। অনেকেই মানছেন, ফাঁকা মাঠে বিশ্বকাপ হওয়াটা ঠিক দেখায় না। আইপিএল তবু ফাঁকা মাঠে করা যায়, যে-হেতু সেটা একটি দেশের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট। তাতে যতই আন্তর্জাতিক মানের সেরা ক্রিকেটারেরা খেলুন। এটাও ঠিক যে, খোদ অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড এমন ঘোষণা করায় আইসিসি-র উপরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ল। ভারতীয় বোর্ড কর্তারা দেশে বা বিদেশে (আমিরশাহি বা শ্রীলঙ্কায়) আইপিএল করার দরজা খোলা রাখছেন। তবে সবই নির্ভর করছে ওই সময়ে ভারতে করোনা নিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তার উপরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন