গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি দেখল ইডেন গার্ডেন্স। কিন্তু এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সেপ্টেম্বরে এই ধরনের আবহাওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। এই সময় এই ধরনের বৃষ্টি হওয়া কিছু অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। তবে একটা ব্যাপারে বিশেষ কোনও প্রশ্ন নেই। আবহাওয়া যাই হোক, মাঠের অবস্থা এতটাই ভাল যে বৃষ্টি থেমে গেলেই এখানে খেলা শুরু করে দেওয়া যাবে।
আমরা দেখেছি, বছর দু’য়েক ধরেই ইডেনের গ্রাউন্ডসম্যানরা দারুণ কাজ করছে। আর সেটা শুধু মাঠ ঢাকা বা মাঠের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েই নয়। ম্যাচের ঠিক আগে কী ভাবে খেলাটা শুরু করা যায়, সেটাও ওরা জানে। সেই ভাবেই ওরা কাজ করে। গত বছর সেপ্টেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এখানে টেস্ট খেলেছিলাম। সে বার কোনও সমস্যা হয়নি। এ বারও আশা করব, সে রকমই হবে। তাই আমার মনে হয় আজ, বৃহস্পতিবার ইডেনে পুরো ম্যাচ না হওয়ার কোনও কারণ নেই। দর্শকদের হতাশ হওয়ারও কিছু থাকবে না।
প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ের পিচ এক রকম ছিল। ইডেনের পিচ কিন্তু অন্য রকম হতে চলেছে। সেটা কী রকম? ইডেনের পিচে ফাস্ট বোলাররা ভীষণ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে যাচ্ছে। বিশেষ করে গত দু’দিনের বৃষ্টির পরে।
পিচ পরীক্ষায় কোহালি ও শাস্ত্রী। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
তবে গত দু’দিন বৃষ্টি হয়েছে বলে ম্যাচ নিয়ে কোনও সংশয় তৈরি হবে বলে মনে হয় না। আমি বরং পিচ নিয়ে একটা বলতে চাই। এটা বলে দেওয়া যায়, ম্যাচ শুরুর আগে ঘণ্টা দু’য়েক যদি ভাল রোদ ওঠে, তা হলে পিচটা আরও শক্ত হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রেও কিন্তু ফাস্ট বোলারদের জন্য উইকেটে ভাল ক্যারি থাকবে।
ঠিক এই কারণে ইডেনে বৃহস্পতিবার টসটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। প্রথমে বল করার জন্য এই পিচটা একেবারে আদর্শ। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার ব্যাপারে দুই অধিনায়কের কেউ যেন দ্বিধা না করে। শুধু পিচের জন্যই নয়, দুই অধিনায়ক নিশ্চয়ই আবহাওয়ার ওপরও নজর রাখবে। আবহাওয়াটাও টস জেতার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে।
অস্ট্রেলিয়ার জন্য এই ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সিরিজে একবার ০-২ পিছিয়ে পড়লে কিন্তু ফিরে আসা কঠিন হবে। এই ম্যাচে দু’দলই কিন্তু এক জন করে বাড়তি ফাস্ট বোলার খেলাতে পারে। সে রকম সুযোগ থাকবে ক্যাপ্টেনদের হাতে। চেন্নাইয়ে ভারত দুই স্পিনার নিয়ে নেমেছিল। এখানে মনে হয় শেষ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকবে বাড়তি স্পিনার না পেসার— কাকে খেলাবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। তবে পিচ পেসারদের সাহায্য করলেও আমি হলে বাড়তি স্পিনার নিয়েই খেলতাম। কারণ, ট্রাভিস হেড বা মার্কাস স্টয়নিসরা যে ভাবে স্পিন খেলল, তাতে বাড়তি স্পিনারের কথা ভাবাই যেতে পারে। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া একটা ব্যাপার ভাবতে পারে। ম্যাথু ওয়েডের জায়গায় পিটার হ্যান্ডসকম্বকে খেলানোর কথা ভাবতে পারে ওরা। হ্যান্ডসকম্ব স্পিনটাই শুধু ভাল খেলে না, ও ভাল ফর্মেও আছে। উইকেটকিপিংটাও করতে পারে। এই ভারতীয় দলটার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারে গভীরতা প্রয়োজন।