Eden Gardens

এগিয়ে আল আমিন, গোলাপি বলের টেস্টে বাড়তি পেসার খেলানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ

ইডেনে এসে শুধু বিরাট কোহালির দলকে খেলতে হচ্ছে না। বরং গোলাপি বল নামের একটা থিমকেই সামলাতে হচ্ছে মোমিনুলদের। গ্যালারির উপরে উড়ছে গোলাপি বেলুন। ক্লাবহাউসের সদরদরজায় হাজির গোলাপি ম্যাসকট। ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডেও গোলাপি ছোঁয়া।

Advertisement

সৌরাংশু দেবনাথ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:৫৩
Share:

গোলাপি বলে টেস্টের প্রস্তুতিতে নেটে যাচ্ছেন বাংলাদেশের এক ব্যাটসম্যান। নিজস্ব চিত্র।

কাউন্টডাউন শেষ। ইডেনে ক্রিকেটপক্ষের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। বুধবার সকালে বাংলাদেশ প্র্যাকটিসে নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেটজ্বর জাঁকিয়ে বসল ময়দানে।

Advertisement

ইনদওরে সিরিজের প্রথম টেস্ট ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরেছে মোমিনুল হকের দল। তিন দিনেরও কমে দাঁড়ি পড়েছে টেস্টে। ইডেনে গোলাপি বলে টেস্টের উন্মাদনার মধ্যেও তাই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে কোথাও থাকছে সংশয়। যে, পাঁচদিন খেলা আদৌ গড়াবে তো!

২২ গজে রয়েছে ঘাসের আভা। তবে দিন কয়েক আগেও আউটফিল্ডের সঙ্গে আলাদা করা যাচ্ছিল না পিচকে। বুধবার সকালে অবশ্য উইকেট অতটা সবুজ দেখাল না। ক্রিকেটমহলে একটা মতবাদ ঘুরে বেড়াচ্ছে যে, দ্রুত খেলা শেষ হয়ে যাক, তা একেবারেই চাইছে না ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড ও সিএবি। আর তাই ঘাস যতটা সম্ভব ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। গোলাপি টি-শার্ট পরা কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় অবশ্য আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, “রোলার চলছে। রোদের তাপও যথেষ্ট। এই দুই কারণেই উইকেটের ঘাসকে বাদামি দেখাচ্ছে। এ বার খেলা ক’দিন চলবে, তা নির্ভর করছে ক্রিকেটারদের উপর।”

Advertisement

আরও পড়ুন: চার মারতে যেত আর আউট হত, ওর মানসিকতাটা বদলে ছাড়লাম, বলছেন ময়াঙ্কের কোচ​

মুশকিল হল, বাংলাদেশ থেকে আসা প্রায় জনা পঞ্চাশেক মিডিয়ার সদস্যেরও বিশেষ ভরসা নেই দলের উপর। শাকিব অল হাসান, তামিম ইকবাল নেই। তার প্রভাব অনভিজ্ঞ দলে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে নামতে হবে ইডেন গার্ডেন্সে। কিন্তু তার মানে মোটেই প্রতি বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর মানসিকতা নয়। বরং নিজেদের দুর্বলতা উপলব্ধি করে ঠিকঠাক হোমওয়ার্ক সেরে নামার ভাবনা জোরালো। কিন্তু, তা কতটা সম্ভবপর, দ্বিধা থাকছেই।

যা আভাস, তাতে বাড়তি পেসার নিয়ে নামতে পারে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে কোপ পড়তে পারে বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের উপর। বাঁ-হাতি মুস্তাফিজুর রহমান ও ডান-হাতি আল-আমিন হোসেন, দুই পেসারের মধ্যে দ্বিতীয়জনকেই দৌড়ে এগিয়ে থাকা দেখাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে ইনদওরে বড্ড বেশি চাপ পড়েছে দুই পেসার আবু জায়েদ ও এবাদত হোসেনের উপর। তৃতীয় পেসার সেই কারণেই জরুরি।

ফিসফাস শোনা যাচ্ছিল, চোট পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেনের জায়গায় সৌম্য সরকারকে উড়িয়ে আনতে পারে বাংলাদেশ। তা হলে, ওপেনার হিসেবে ইডেনে নামতে পারেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে বুধবার সকাল পর্যন্ত এমন কোনও খবর নেই। সৌম্য এখনও ঘরোয়া ক্রিকেটেই ব্যস্ত। ফলে, ইমরুল কায়েস ও শাদমান ইসলাম, দুই ওপেনারই সম্ভবত শুরু করবেন ইডেনে।

পদ্মাপারের মিডিয়ার কাছ থেকে শোনা গেল, ২০১৩ সালে একবার বাংলাদেশে গোলাপি বলে ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচ হয়েছিল। তবে সেই দলের কেউ বাংলাদেশের এই দলে নেই। এবং মোমিনুলের দলের কোনও ক্রিকেটারের গোলাপি বলে খেলার কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ইনদওরে টেস্ট জলদি শেষ হওয়ার পরই পরিচয় ঘটেছে গোলাপি বলের সঙ্গে।

চলছে বাংলাদেশের প্র্যাকটিস। বুধবার সকালে ইডেনে। নিজস্ব চিত্র।

আর ইডেনে এসে তো শুধু বিরাট কোহালির দলকে খেলতে হচ্ছে না। বরং গোলাপি বল নামের একটা থিমকেই সামলাতে হচ্ছে মোমিনুলদের। গ্যালারির উপরে উড়ছে গোলাপি বেলুন। ক্লাবহাউসের সদরদরজায় হাজির গোলাপি ম্যাসকট। ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডেও গোলাপি ছোঁয়া। বাদ নেই গ্যালারিও। গোলাপি রংয়ে সাজানো হচ্ছে স্ট্যান্ডগুলো। ইডেন জুড়ে এমন গোলাপি রংয়ের ছড়াছড়ি যে গোলাপি দুর্গ দেখাচ্ছে ক্রিকেটের স্বর্গোদ্যানকে।

আরও পড়ুন: ‘টি-টোয়েন্টির জগঝম্প হচ্ছে, টেস্ট কিন্তু কোনও দিন হারিয়ে যাবে না’​

বাংলাদেশ দল যতই ইনদওরে বিধ্বস্ত হওয়ায় ভিতরে ভিতরে কুঁকড়ে থাক, বহিরঙ্গে প্রকাশ করছে না। কোচ ডোমিনগো মাঠে ঢুকলেন হাত জড়ো করে নমস্কারের ভঙ্গিতে। স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি আবার ‘গুডমর্নিং’ বললেন সেদেশের মিডিয়াকে। কুড়ি বছর বয়সি সইফ হোসেনের হাতে লাগার পর বিদেশি ফিজিওর তরফে তা নিয়ে লুকোচুরিও চলল না। মুশফিকুর-মাহমুল্লাহদের উপরে চাপ নেই, এমন নয়। তবু কলকাতায় পা রেখে টাইগারদের অনেক স্বচ্ছন্দ দেখাল। সেই দেশের মিডিয়ার যুক্তি হল, একই জল-বাতাস, একই সংস্কৃতি, একই ভাষা বলেই দল এত ফুরফুরে।

খচখচানি একটাই, গোলাপি বলে দিন-রাতের ঐতিহাসিক টেস্টে বাইশ গজেও মোমিনুলদের জন্য কি এতটাই আতিথেয়তা, ভালবাসা আর সৌজন্য মজুত থাকবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন