শিরোনামে: রাঁচীতেও আগ্রহের কেন্দ্রে সেই পিচের চরিত্রই। —ফাইল চিত্র।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়া, দু’দেশের বোর্ডের হস্তক্ষেপে যতই শান্তি ফেরার আবহ তৈরি হোক, পিচ নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। পুণে থেকে বেঙ্গালুরু হয়ে এ বার তা রাঁচীতে পৌঁছলে অবাক হওয়ার নেই।
রাঁচী মানে আবার ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির শহর। যেখানে এই প্রথম টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। তবে ধোনির সরেজমিনে মাঠ তদারকি করা নয়, শিরোনামে উঠে এসেছে রাঁচীর বাইশ গজ। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এখন তাদের দলের হয়ে ক্রমাগত বিরাট কোহালিদের বাউন্সার দিয়ে যাচ্ছে। এ বার তাদের নিশানায় রাঁচীর পিচ।
রাঁচীর মাঠের কিউরেটর এখন বিতর্কের কেন্দ্রে। একটা অংশের দাবি, তিনি খুল্লমখুল্লা বলেছেন, রাঁচীতেও কোহালিদের ইচ্ছা অনুযায়ী পিচ হবে। ‘‘ভারতীয় দল যেমন বাইশ গজ চাইবে সেটাই আমরা দেব,’’ এমন একটা মন্তব্য নাকি তিনি ইতিমধ্যেই করে বসেছেন বলে অস্ট্রেলীয় মিডিয়াও অভিযোগ করছে।
সাধারণ প্রথা হল, ভারতে বিভিন্ন কিউরেটররা নিজেদের দল যেরকম উইকেট চায়, সেটাই তৈরি করে দেয়। কিন্তু প্রকাশ্যে সেটা কেউ বলেন না। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলীয় মিডিয়া পর্যন্ত রাঁচীর কিউরেটর প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করেছেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। পুণের কিউরেটর শ্যাম বাহাদুর সিংহ অবশ্য বলছেন, ‘‘পিচ নিয়ে এ রকম কিছুই আমি বলিনি।’’ ঘুরিয়ে পুণের প্রসঙ্গ এনে আবার অস্ট্রেলিয়া বলা শুরু করেছে, ঘূর্ণি বানাতে গিয়ে খুব খারাপ পিচ হয়ে গেলে ফের না ‘পুওর’ রেটিং পায় ধোনির শহরের পিচ। সে রকম হলে শুরুতেই টেস্ট কেন্দ্র হিসেবে রাঁচীর নামের পাশে কালো দাগ লেগে যেতে পারে।
ক্রিকেট বিশ্বে যদিও তর্ক উঠে গিয়েছে, পিচকে একতরফা ভাবে ব্যবহার করার রীতি নিয়ে। কেউ কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন, হোম টিমের ইচ্ছা মতো এমন উইকেট যদি বানানো হতেই থাকে তা হলে নতুন নিয়ম আনা হোক। সেক্ষেত্রে টস তুলে দিয়ে বিদেশি দলকে বাছতে দেওয়া হোক, তারা প্রথমে ব্যাট করবে না বল। তা হলে টসের দ্বারা এমন নির্মম ভাবে খেলা নিয়ন্ত্রিত হবে না। অতীতে সুনীল গাওস্করের মতো ব্যক্তিত্বও এমন প্রস্তাব দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জোড়া ধাক্কায় শেষ সাইনা-সিন্ধুর অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়শিপের স্বপ্ন
নিয়ম বদল যখন হবে, হবে। আপাতত অস্ট্রেলীয় শিবির ধরেই নিয়েছে, রাঁচীতেও তাঁদের শুকনো, ঘূর্ণি পিচে পড়তে হচ্ছে। মিচেল স্টার্ক ছিটকে যাওয়ায় এমনিতেই স্মিথদের মনোবলে প্রবল ধাক্কা লেগেছে। এর পর ধোনির শহরে গেলে অবধারিত ভাবেই শুকনো পিচ স্মিথদের স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষা করছে। ধরেই রাখা যায় সেই বাইশ গজ দেখে প্রসন্ন হবেন না বিদেশিরা।
এখানে যদিও তুমুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে আর একটি ব্যাপার নিয়ে। ধোনিকে যখন এত মগ্ন দেখাচ্ছে রাঁচীর মাঠের প্রস্তুতি নিয়ে, তিনি কি পিচ নিয়েও পরামর্শ দেননি? মাঠের আউটফিল্ড সবুজ মখমলের মতো করে ফেলা হয়েছে। তার পিছনেও শোনা যাচ্ছে ধোনির সাহায্য রয়েছে।
কেউ কেউ যে কারণে বলতে শুরু করেছেন, রাঁচীতে আরওই অবস্থা খারাপ হতে চলেছে স্মিথদের দলের। একে তো স্টার্কের মতো প্রধান ক্রিকেটারকে তাঁরা হারিয়েছেন। তার ওপর একই সঙ্গে দুই অধিনায়কের মোকাবিলা করতে হবে তাঁদের।
মাঠের ক্যাপ্টেন কোহালি এবং নেপথ্য থেকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।