নিরুত্তাপ ম্যাচ হঠাৎ গরম পিচ-বিতর্কে

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যদি পিচের পাশে প্রথমে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত যদি হন প্রায় আধশোয়া, আনকোরা ক্রিকেট সাংবাদিকেরও খবরের গন্ধ পেয়ে যাওয়া উচিত! সাধারণ ক্রিকেট-শিক্ষা বলে যে, একটা টেস্ট ম্যাচে বাইশ গজের চরিত্র যতটা প্রাধান্য পেয়ে থাকে, ওয়ান ডে যুদ্ধে অতটা পায় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

ইডেন পিচে ‘ডাক্তার’ ধোনি। ছবি: উৎপল সরকার

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যদি পিচের পাশে প্রথমে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত যদি হন প্রায় আধশোয়া, আনকোরা ক্রিকেট সাংবাদিকেরও খবরের গন্ধ পেয়ে যাওয়া উচিত!

Advertisement

সাধারণ ক্রিকেট-শিক্ষা বলে যে, একটা টেস্ট ম্যাচে বাইশ গজের চরিত্র যতটা প্রাধান্য পেয়ে থাকে, ওয়ান ডে যুদ্ধে অতটা পায় না। এ তো আর পাঁচ দিন ধরে ক্রিকেটীয় নৈপুণ্যের মহাপরীক্ষা নয়, পঞ্চাশ-পঞ্চাশ একশো ওভারের হানাহানি মাত্র। পিচ কেমন হল, কী রকম হল, টিম দেখে থাকে অবশ্যই। কিন্তু বাইশ গজ নিয়ে বাড়াবাড়ি নাটক দেখা যায় না বিশেষ। অধুনা ওয়ান ডে ক্রিকেটের ধর্ম অনুযায়ী, ব্যাপারটা এখন আরও সহজ।

পিচ পাটা করো। ন্যূনতম সাড়ে তিনশো তোলো। এবং মাঠ থেকে বোলার-প্রজাতিকে স্রেফ বিলুপ্ত করে দাও!

Advertisement

শনিবাসরীয় ইডেনে এমএস ধোনিকে দেখে তাই বিস্ময় জাগলে দোষ দেওয়া যাবে না। একে ওয়ান ডে ম্যাচ। তার উপর নিরুত্তাপ, নিয়মরক্ষার। সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ কটকেই সমাপ্ত, কলকাতার প্রাপ্তি-খাতায় পড়ে শুধু ব্রাউনওয়াশের হাতছানি। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সেখানে পিচ নিয়ে এ দিন আচমকা সক্রিয় হয়ে উঠলেন। প্রথমে জাতীয় নির্বাচক দেবাঙ্গ গাঁধীকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পিচের দিকে, তার পর বাইশ গজের পাশে হাঁটু মুড়ে বসে পড়া। শেষে প্রায় সাষ্টাঙ্গে হুমড়ি খেয়ে পড়ার উপক্রম। শুধু তাই নয়, পিচ টিপেটুপেও দেখছেন বলে দূর থেকে মনে হল।

মুশকিল হল, দৃষ্টিগত বিচার মাঝেমধ্যেই ভ্রমাত্মক হয়। শনিবারও হল। ধোনি পিচ-টিচ দেখেছেন। সামান্য একটু ঘাস ছাঁটতেও বলেছেন বলে শোনা গেল। কিন্তু দিনের শেষে অপ্রত্যাশিত ভাবে শিরোনাম সৃষ্টি করলেন অন্য এক জন— পূর্বাঞ্চল কিউরেটর আশিস ভৌমিক।

সিএবি-তে দুপুরেও দেখা গেল, পূর্বাঞ্চল কিউরেটরকে নিয়ে কেউ কেউ বেশ অসন্তুষ্ট। এঁরা উত্তেজিত ভাবে বলাবলি করছিলেন যে, ডিজাইনার পিচ যদি করতেই হয়, তা হলে আগে থেকে এসে তিনি করতে পারেন। উষ্মার কারণ— শনিবার সকাল থেকে তাঁর ঘাস ছাঁটার অর্ডার। পিচে নাকি সবুজের কোনও চিহ্ন থাকবে না। যা নিয়ে ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর লেগেও যায়। পূর্বাঞ্চল কিউরেটর ঘাস ছাঁটতে বলায় নাকি সুজন বলে দেন, পারবেন না। একমাত্র সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ঘাস ওড়ানোর নির্দেশ দিলে তিনি ওড়াবেন, নইলে নয়!

সিএবি-র কিউরেটর-গ্রুপের কেউ কেউ বললেন, এর পর নাকি ভারতীয় টিমের ফিল্ডিং কোচ শ্রীধরকে দিয়ে বলানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ঘাস কিছুটা কাটা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়নি।

পূর্বাঞ্চল কিউরেটর আশিস—পুরো ঘটনাটা শুনে কোনও মন্তব্য করে চাইলেন না। সিএবি কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়— তিনিও কিছু বলতে চাননি। কিন্তু না বললেও বা কী এসে যায়? যা হওয়ার তা তো হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। নিরুত্তাপ যুদ্ধেও ফিরেছে আগুন, বড় অনভিপ্রেত যে আগুন।

বিতর্কের আগুন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন