ছবি: উত্পল সরকার।
শুনলাম রিকি পন্টিংয়ের নাকি এ বার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রথম ছ’টা ম্যাচের পর হাতের নখ বলে কিছু ছিল না। টেনশনে কামড়েই শেষ! প্লেয়ার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার থেকেও এ বার কোচ হিসেবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে চ্যাম্পিয়ন করাটা পন্টিংয়ের বড় কৃতিত্ব। ভুলে গেলে চলবে না মুম্বই কিন্তু গোড়াতেই চারটে ম্যাচ হেরে সেখান থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ট্রফি নিয়ে গেল। পরের দশটায় ন’টা ম্যাচই জিতেছে। আর পর্দার আড়ালে আসল কাজটা করে গিয়েছে পন্টিংই।
এই মুম্বইয়ে আলাদা কী ?
মুম্বইয়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল ঠিক কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়া। গোড়ায় সেটা ভুগিয়েওছে। কিন্তু অ্যারন ফিঞ্চের জায়গায় ওপেনিংয়ে লেন্ডল সিমন্স আর বোলিংয়ে মিচেল ম্যাকক্লেনাঘন আসার পর যে ভাবে টানা সেই টিমটাই খেলিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল পন্টিং সেটা সুপারহিট।
পরিবর্তনটা টিমটার ব্যবহারের মধ্যেও স্পষ্ট। একটা চ্যাম্পিয়ন টিমের সঙ্গে একটা ভাল টিমের পার্থক্য একটাই— অ্যাটিটিউড। পন্টিংয়ের মতো দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, এ রকম অভিজ্ঞ একজন জানে কী ভাবে জিততে হয়। মাঠে নেমে ওর টিমের তাই কেউ ভয় পায় না নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে। রবিবারই দেখুন না প্রথম ওভারেই পার্থিবের ওই রকম অবিশ্বাস্য রান আউট হওয়ার পরে রোহিত শর্মা এসে একটু ধরে খেলবে সবাই এটাই ধরে নিয়েছিল। কিন্তু এই মুম্বই যে কোথায় আলাদা সেটা রোহিত তখনই বুঝিয়ে দিল নেমেই ওর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে।
জিতব আর হারব না এই দুটো মানসিকতা কিন্তু এক নয়। এ বার গোড়ার দিকে মুম্বইয়ের খেলা দেখে মনে হত টিমটা ‘হারব না’ ভেবে নামছে। আর এখন শুধুই জিতব। তাই ফাইনালে গোড়াতেই চাপে পড়লেও রোহিত হাত খুলেই খেলল। যা হওয়ার হবে, টিমটার এই মাস্তানিতে পন্টিংয়ের অস্ট্রেলীয় মানসিকতারই ছাপ যেন।
সুচিত, পান্ডিয়ার মতো জুনিয়র প্লেয়ারদের উপর বিশ্বাস রেখে মাঠে নামানোটাও একটা বড় ফ্যাক্টর। আসলে এই দু’মাসের টুর্নামেন্টে তো একটা প্লেয়ারের পুরো টেকনিক পাল্টে ফেলা যায় না। তবে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা যায় যেখানে সবাই চাপহীন থাকবে। নিজের স্বাভাবিক ক্রিকেটটা খেলবে। হারলে যাকে কেউ কড়া কিছু বলবে না। আর সে রকম পরিবেশ থেকেই নিজের উপর বিশ্বাসটা তৈরি হয়ে যায় ওখানেই। পন্টিং ঠিক সেটাই করেছে। জুনিয়রদের সেই আত্মবিশ্বাসটা আসার মতো পরিবেশ তৈরি করেছে।
কিন্তু নিজে বোধহয় টেনশন থেকে মুক্ত হতে পারেনি। না হলে হাতের নখগুলো অক্ষত থাকত নিশ্চয়ই!