বিতর্ক: সুয়ারেজের ‘ডাইভ’ নিয়ে সরকারি অভিযোগ। ফাইল চিত্র
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিওনেল মেসিদের স্বপ্নের প্রত্যাবর্তনে বিতর্কের ছায়া ভাল মতোই পড়তে শুরু করেছে। প্যারিস সঁ জরমঁ এখনও সেই হার মানতে পারছে না। তাদের ধারণা, খারাপ রেফারিংয়ের শিকার হয়েই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে তাদের। শুধু ভাবাই নয়, সরকারি ভাবে রেফারিং নিয়ে উয়েফার কাছে অভিযোগও করছে পিএসজি।
প্যারিসের এই ক্লাব যে চিঠি পাঠিয়েছে উয়েফার কাছে তাতে আলাদা আলাদা করে বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে।
মাসচেরানোর হ্যান্ডবল: জুলিয়ান ড্র্যাক্সলারের ক্রস হাভিয়ের মাসচেরানোর হাতে লেগেছিল এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, সেটা কি তিনি ইচ্ছে করে লাগিয়েছিলেন? রেফারি ২০ গজ দূরে ছিলেন। পুরো ঘটনাটা দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু মাসচেরানোকে শাস্তি দেওয়া হয়নি।
পিকে-কে কেন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড নয়: ম্যাচের ২৩ মিনিটে একবার হলুদ কার্ড দেখানো হয় জেরার পিকে-কে। এর পর ৪১ মিনিটে এডিনসন কাভানির জার্সি ধরে টানেন পিকে। কাভানি তখন গোলের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পিকে-কে আর কার্ড দেখানো হয়নি।
বক্সে নেমারের পড়ে যাওয়া: এখানে রেফারি ফাউল দেন। সিদ্ধান্ত নেন, টমাস মুনিয়ের পেনাল্টি বক্সে নেমারকে ফাউল করেন। যদিও পিএসজি দাবি করছে, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার নিজেই ডিফেন্ডারের গায়ে ধাক্কা মারেন। ১৫ গজ দূরে দাঁড়িয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি।
মার্কুইনহোসকে মারা: ম্যাচ ৩-১ অবস্থায় থাকার সময় ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কুইনহোসকে পাড়িয়ে দেন নেমার। পিএসজি মনে করছে, লাল কার্ড দেখানো উচিত ছিল নেমারকে।
সুয়ারেজের ডাইভ: মার্কো ভেরাত্তির সঙ্গে খুব হাল্কা ছোঁয়া লাগার পরে পিএসজি পেনাল্টি বক্সে পড়ে যান লুইস সুয়ারেজ। রেফারি পেনাল্টি না দিলেও কোনও কার্ড দেখাননি সুয়ারেজকে।
পিকের হ্যান্ডবল: ম্যাচের ৭৮ মিনিটে বার্সেলোনার পেনাল্টি বক্সে অ্যাঙ্খেল দি’মারিয়ার ক্রস পিকে-র হাতে লাগে। কিন্তু রেফারি পেনাল্টি দেননি।
আবার মাসচেরানো: মনে করা হচ্ছে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে গিয়েছিলেন অ্যাঙ্খেল দি’মারিয়া। কিন্তু মাসচেরানোর ট্যাকলে পড়ে যান দি মারিয়া। পেনাল্টি দেওয়া হয়নি।
সুয়ারেজের দু’নম্বর ডাইভ: পিএসজি-র অভিযোগ তালিকায় এই ঘটনার কথা বলা হয়েছে। এখানেও সুয়ারেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে পড়ে যান। পেনাল্টি থেকে পঞ্চম গোল করে বার্সা।
রেফারি ডেনিস আয়তেকিনের বিরুদ্ধে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে পিএসজি, তাতে সমস্ত ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিংও জমা দেওয়া হয়েছে। এই রিপোর্ট লেখার আগে আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রেফারিদের সঙ্গে কথা বলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সংবাদপত্রের রিপোর্টও তুলে দেওয়া হয়েছে।
পিএসজি-র প্রেসিডেন্ট সরাসরি উয়েফার কাছে অভিযোগ করেছেন, যে রেফারি বার্সেলোনাকে সাহায্য করেছেন। তবে তিনি এও স্বীকার করে নিয়েছেন, এই ফল মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।
ঘটনা হল, এ রকম রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি রেফারিকে শাস্তি দেওয়াও হয়, তা হলেও ম্যাচের ফল বদলাবে না। পিএসজি-র বিদায় ঘটেই গিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে।