স্বপ্না বর্মন, তিয়াসা সমাদ্দার, লিলি দাশের পর বাংলার অ্যাথলেটিক্সের আকাশে আরও এক সোনার মেয়ের উদয় হল— রাজশ্রী প্রসাদ। হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত জুনিয়র জাতীয় মিটে পরপর দু’দিন জোড়া সোনা জিতে হইচই ফেলে দিল ইচ্ছাপুর দেবীতলার হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এক মেয়ে। রাজশ্রী অবশ্য বেশি বাহবা পাচ্ছে অ্যাথলেটিক্সের সেরা দু’টো ইভেন্ট, ১০০ এবং ২০০ মিটারে সোনা জেতার জন্য।
বাবা সবজির ব্যবসা করেন। মা সেলাই করে সংসার চালান। মা লিপিকা প্রসাদই টালির চালায় বসে স্বপ্ন দেখতেন, মেয়ে বিদেশ যাবে। নাম করবে। কাঁচরাপাড়ায় জুনপুর কোচিং সেন্টারে সে জন্যই জোর করে মেয়েকে পাঠিয়েছিলেন মা, কোচ গোপাল দেবনাথের কাছে। মা-র দিন আনি, দিন খাইয়ের সংসার থেকে অবশেষে ফ্রান্স আর ব্যাঙ্ককের বিমানে ওঠার টিকিট পেল রাজশ্রী। রূপকথার নায়িকার মতোই তার উত্থান। জাতীয় শিবিরে ডাক পেল ইচ্ছাপুর গার্লস স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রাজশ্রী। হায়দরাবাদে সফল হওয়ার জন্য ব্যাঙ্ককে জুলাইয়ে এশীয় জুনিয়র মিটে এবং ফ্রান্সে জুনে বিশ্ব স্কুল অ্যাথলেটিক্সে সুযোগ পেয়েছে রাজশ্রী। সোমবারই কলকাতায় আসার ট্রেনে উঠে পড়েছে বলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। রাজশ্রীর কোচ গোপালবাবু বলছিলেন, ‘‘ও একটু ভয় পাচ্ছে প্রথম বার বিমান চড়ে বিদেশ যাবে ভেবে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমার আশা হায়দরাবাদে চল্লিশ ডিগ্রি গরমে যে সময় করেছে (১০০ মিটারে ১২.৩৭, ২০০ মিটারে ২৫.২২) তার চেয়ে অনেক ভাল করবে বিদেশে। ও জন্মগত প্রতিভা। ঠিক মতো খেতে পায় না। জাতীয় শিবিরে গিয়ে ভাল খাবার পেলে আরও ভাল করবে মেয়েটা।’’