Cricket

ফিটনেস বাড়াতে অভিনব কসরত অশ্বারোহী জাড্ডুর

আসন্ন আইপিএলে রবীন্দ্র জাডেজা যদি উড়ে গিয়ে দুরন্ত কোনও ক্যাচ নেন বা অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় কাউকে রান আউট করেন, তা হলে তার পিছনে ত্রয়ীর অবদানের কথা ভুললে চলবে না।

Advertisement

কৌশিক দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২০ ০৫:২০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

কেসর, মানেক, লালবীর!

Advertisement

আসন্ন আইপিএলে রবীন্দ্র জাডেজা যদি উড়ে গিয়ে দুরন্ত কোনও ক্যাচ নেন বা অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় কাউকে রান আউট করেন, তা হলে তার পিছনে এই ত্রয়ীর অবদানের কথা ভুললে চলবে না। চার-পাঁচ মাসের লকডাউন বিরতিতে এরাই যে জাডেজাকে ফিটনেসের তুঙ্গে থাকতে সাহায্য করেছে।

জাডেজা কি তা হলে এই সময় বিশেষজ্ঞ ফিটনেস ট্রেনারদের রেখে আলাদা অনুশীলন করলেন? উত্তরটা হ্যাঁ এবং না-ও! এই ত্রয়ীর অবশ্যই জাডেজার ফিটনেস ঠিক রাখার পিছনে অবদান আছে। কিন্তু এরা কেউ বিশেষজ্ঞ ট্রেনার নয়। এবং, সব চেয়ে বড় কথা এরা কেউ মানুষই নয়! জাডেজাই বোধ হয় বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি ফিটনেস ট্রেনিংয়ের জন্য ঘোড়ার সাহায্য নিয়ে আইপিএল খেলতে গেলেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: নেমাদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে ইউরোপ সেরা সেই অপ্রতিরোধ্য বায়ার্ন

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ভারতীয় অলরাউন্ডারের অশ্ব-প্রেমের কথা ক্রিকেটপ্রেমীদের অজানা নয়। কিন্তু ফিটনেস ঠিক রাখতে যে তিনি অশ্বারোহী হয়েছেন, এ কথা খুব অল্প লোকেরই জানা। যাঁর মধ্যে এক জন রবীন্দ্র জাডেজার দিদি নয়না। জামনগর থেকে ফোনে নয়না বলছিলেন, ‘‘এই লকডাউনে জাড্ডু সব চেয়ে বেশি নজর দিয়েছে ফিটনেসে। সাধারণ যা ট্রেনিং করার, সে তো করেই। কিন্তু এ বার বেশি মনযোগ দিয়েছিল ঘোড়ায় চড়ায়। ফার্মহাউসে গিয়ে নিয়মিত হর্স রাইডিং করেছে ভাই।’’

জাডেজাদের জামনগরের বাড়ি থেকে তাঁদের ফার্মহাউস প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে। প্রায় আট একর জমির উপরে তৈরি এই ফার্মহাউসে যেমন বড় বাংলো আছে, তেমনই আছে সুইমিংপুল। এবং, অবশ্যই প্রচুর সবুজ, ফাঁকা জমি। যেখানে চেন্নাই সুপার কিংসের এই অলরাউন্ডারের ঘোড়া ছোটাতে কোনও সমস্যাই নেই।

নয়নার কথায় জানা গেল, বিশেষ একটা পদ্ধতিতে ঘোড়ায় চড়েন জাডেজা। তিনি কোনও জিনের রেকাব (ঘোড়ার পিঠের আসনে বসে দু’পাশে পা রাখার জায়গা) ব্যবহার করেন না। শুধু লাগামটা হাতে থাকে। কেন? নয়নার কথায়, ‘‘ভাইয়ের মুখে শুনেছি, এটা একটা ব্যালান্সিং এক্সারসাইজ। যা শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখে। ভাল ফিল্ডারদের ক্ষেত্রে যা খুব জরুরি।’’

তবে ফার্মহাউসে জাডেজা শুধু শারীরিক ফিটনেস বাড়াতেই যান না, মানসিক ভাবে তরতাজা হতেও যান। নয়নার কথায়, ‘‘চার দিকে সবুজ। ওখানে শান্তি আছে। বাংলোর ছাদে উঠলে গণপতি বাপ্পার একটা মন্দির দেখা যায়। মনকে শান্ত রাখতে আর মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য জাড্ডু তাই অনেকটা সময় ফার্মহাউসে কাটিয়েছে।’’

আইপিএল খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি রওনা হওয়ার আগে বিশেষ একটি বিশেষ মন্দিরে পুজো দিয়ে এসেছেন জাডেজা। জামনগর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কচ্চ জেলার মাতানা মাধে। যেখানে রয়েছে আশাপুরা মাতার মন্দির। নয়না বলছিলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের রীতিই হল এই মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার। বছর পাঁচেক আগে জাড্ডু তো ৩৫০ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে ওখানে পুজো দিয়ে এসেছিল।’’ জানা গেল, এ বার বিশেষ অনুমতি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়েই পুজো দিতে গিয়েছিলেন আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে তিন নম্বরে থাকা এই অলরাউন্ডার।

লকডাউনে ভাইয়ের সঙ্গে কেমন কাটল সময়টা? ছোট থেকে মায়ের অভাব বুঝতে না দেওয়া দিদি বলছিলেন, ‘‘প্রথম দিকে সবাই খুব উপভোগ করছিল। কিন্তু এত দিন খেলা থেকে দূরে থাকায় ভাই বিরক্তও হয়ে যাচ্ছিল। বাইরে গিয়ে নেট প্র্যাক্টিসেরও ব্যাপার ছিল না।’’ বিশেষ কোনও শখ কি মাথাচাড়া দিয়েছিল জাডেজার মধ্যে, যেমন আঁকা? হাসতে, হাসতে নয়না বললেন, ‘‘ওর হাতের লেখা যা খারাপ, আঁকার ধারে কাছে যায় না। তবে পঞ্জাবি গান খুব শুনত।’’

বাকি ক্রিকেটভক্তদের মতো আইপিএল শুরু হলে তিনিও চোখ রাখবেন টিভির পর্দায়। আর ফিল্ডিংয়ে ‘সুপারম্যান’ জাডেজাকে দেখা গেলে হয়তো মনে, মনে ধন্যবাদ জানাবেন লালবীরদেরও!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন