Renedy Singh

জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়কের চেষ্টায় মণিপুরি ফুটবলারদের পরিবার দিল্লিগামী

খেলোয়াড়দের বেশিরভাগেরই পরিবার গরিব। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের দিল্লি যাওয়ার টাকাও দেবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ১৯:২০
Share:

রেনেডি সিংহ। ছবি: টুইটার

গত বছর ক্যানসার আক্রান্ত ফুটবলার মাইবাম রোহিতের চিকিৎসার জন্য ফুটবল খেলে টাকা ওঠানোর পরে, এই বার ফের ত্রাতার ভূমিকায় নামলেন মণিপুরের ফুটবলার, জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রেনেডি সিংহ। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলে জাতীয় দলে ঠাঁই পাওয়া মণিপুরের আট ফুটবলারের পরিবার রেনেডির চেষ্টায় প্রথমবার পাড়ি দিচ্ছে দিল্লি। নিজের চোখে সন্তানদের দেশের হয়ে খেলতে দেখবেন ভেবে উত্তেজিত, আবগাপ্লুত তাঁরা।

Advertisement

২৮ লক্ষের ছোট্ট, দরিদ্র, জঙ্গি সমস্যায় ভোগা রাজ্য থেকে আট ফুটবলারের বিশ্বকাপ দলে ঠাঁই পাওয়া ছিল গর্বের ব্যাপার। খেলোয়াড়দের বেশিরভাগেরই পরিবার গরিব। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের দিল্লি যাওয়ার টাকাও দেবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সরকারি আশ্বাসই সার। কোনও সরকারি কর্তা টাকা বা বিমানের টিকিট নিয়ে অধিনায়ক অমরজিৎ সিংহ বা নিংথৌইনগানবা, বরিসদের বাড়ি আসেননি। এ দিকে খেলা আসন্ন।

আরও পড়ুন: অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় দলকে শুভেচ্ছা জানালেন কোহালি

Advertisement

আরও পড়ুন: রহস্যময়ী সেই নারীর পরিচয় দিলেন হার্দিক

খবর পেয়ে আসরে নামেন ভূমিপুত্র তথা এফসি পুনে সিটির সহকারী কোচ রেনেডি। ফোন করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র ও বেশ কিছু বাণিজ্য সংস্থার কর্তাদের। জরুরি ভিত্তিতে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি।

রেনেডি জানান, জাতীয় দলের ফুটবলারদের বাড়ির অবস্থা দেখে তিনি স্তম্ভিত। খেলোয়াড়দের বাবা-মায়েরা তাঁকে সামনে পেয়ে কেঁদে ফেলেন। তাই সকলের বাবা-মাকে অন্তত দিল্লি নিয়ে যাওয়ার সাধ্যমতো চেষ্টা করেন রেনেডি। অনেকেই হাত বাড়িয়ে দেন।

গত কাল ইম্ফলে একাধিক বাণিজ্য সংস্থার তরফে সকলের পরিবারের সদস্যদের জন্য দিল্লি যাওয়ার বিমান টিকিট, জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে খেলা দেখার টিকিট ও যাতায়াত- থাকা বাবদ পরিবারপ্রতি ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। আনন্দে কেঁদে ফেলেন ফুটবলারদের মায়েরা।

মিডফিল্ডার নিংথৌইনগানবার মা শুঁটকি মাছ বিক্রি করে সংসার চালান। তাঁদের বাড়ির অদূরেই বরিস থংজামের ভাঙা বাড়ি। অধিনয়াক অমরজিতের মাছ বিক্রেতা মায়েরও সামর্থ্য ছিল না ছেলের খেলা দেখতে দিল্লি যাওয়ার। ফুটবলার আবদুল মানাফের বাবাকে টাকা ও লোকবলের অভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে দর্জির দোকান। থৌবালের জিয়েকসন থৌনাওজাম অমরজিতের আত্মীয়। তাঁর বাবা অন্যের জমিতে খাটতেন। বছর দুয়েক আগে স্ট্রোকের পর থেক কাজ বন্ধ। মা কখনও সবজি কখনও জামাকাপড় বিক্রি করে সংসার টানছেন। জিয়েকসনের দাদা কলকাতার পিয়ারলেস ক্লাবে খেলে। এন নাওরেমের বাড়ি এতই দূরে যে তাঁর পরিবার ইম্ফলে সরকারি সাহায্য নিতে পৌঁছতেই পারেননি। এই প্রথম দেশের রাজধানীতে যাবেন তাঁরা। কোথায় থাকবেন, কোন ভাষায় কথা বলবেন- তা ভেবে চিন্তায় থাকলেও ছেলেদের গর্ব আর দিল্লি যাওয়ার আনন্দে আপাতত আত্মহারা সকলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন