দর্শক: ফের চোটের ধাক্কায় বাড়ল সমস্যা। এটিকের প্র্যাক্টিস হচ্ছে, মাঠে নামেননি রবি কিন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
রবি কিন ফের চোটের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেলেন! এ বার নিয়ে সাত বার ঘটল এ রকম ঘটনা।
এটিকে-র অস্থায়ী কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড যা হিসাব দিলেন তাতে এ মরসুমে ৪৩ বার চোট-আঘাত পেয়ে তাঁর ফুটবলাররা ম্যাচের বাইরে চলে গিয়েছেন। অনেক পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে রাখলেও ইন্ডিয়ান সুপার লিগের কর্তারা চোট পেয়ে বাইরে যাওয়ার কোনও রেকর্ড রাখার ব্যবস্থা করেননি। সেটা হলে সম্ভবত দু’বারের চ্যাম্পিয়নরা এক নম্বরে থাকতেন!
শহরের রাস্তায় এখনও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, দেবজিৎ মজুমদারদের ছবি-সহ অসংখ্য হোর্ডিং শোভা পাচ্ছে যেখানে লেখা, ‘‘বাংলা ফের গর্জে ওঠো, কাপ আমাদের রাখতেই হবে।’’ যা দেখে নিশ্চয়ই বেশ মজা পেয়েছেন কেরল ব্লাস্টার্স আর তাঁর কোচ বিশ্বের অন্যতম নামী কিপার ডেভিড বেঞ্জামিন জেমস। না হলে ম্যাচের আগের দিন কেন তাঁর মুখ থেকে বেরোবে, ‘‘ওরা হয়তো চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইতে তেমন ভাবে নেই। কিন্তু এটিকে-র একটা গৌরব তো আছে।’’
আজ বৃহস্পতিবারের যুবভারতী অ্যাশলের টিমের কাছে যেন অনেকটা ‘বিয়েবাড়ি সাজানো আছে, কিন্তু বর-কনেরই দেখা নেই এর মতো।’ খেতাব যুদ্ধে তো নেই-ই, কোনও অঙ্কেই শেষ চারে যাওয়ার সুযোগও নেই। তবুও তাদের খেলতে হচ্ছে। এবং শোনা যাচ্ছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিমের বাকি সব ম্যাচে অ্যাশলেই কোচ থাকবেন। লিগ কমিটি সে রকমই অনুমতি দিতে চলেছে।
এ রকম যখন পরিস্থিতি তখন কোন মোটিভেশন নিয়ে খেলতে নামবে আপনার টিম? অ্যাশলে বললেন, ‘‘পেশাদার ফুটবলাররা তো নিজেদের স্বার্থেই খেলে। আর ভারতীয় ফুটবলারদের কাছে তো এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জন্য যে, এখান থেকেই ঠিক হবে পরের মরসুমে তাঁদের জায়গা কোথায় হবে, আইএসএল না, আই লিগ।’’
এটিকে এবং কেরল ব্লাস্টার্স—উদ্বোধনী ম্যাচে যখন কোচিতে খেলেছিল, তখন যে দু’জন কোচ ছিলেন তাঁরা ছাটাই হয়ে গিয়েছেন। টেডি শেরিংহ্যামের জায়গায় এসেছেন অ্যাশলে, রেনে মিউলিস্টিনের জায়গায় চার বছর পর কেরলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে জেমসকে। অ্যাশলে আসার পর অবশ্য বদলায়নি এটিকে। হারের হ্যাটট্রিক হয়েছে জর্ডি মন্টেলদের। উল্টো ছবি জেমসের টিমের। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ দলের কিপার জেমস ভেঙে পড়া টিমকে জাগিয়ে তুলে শেষ চারে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। পারিবারিক ঝামেলার জন্য দেনা মেটাতে গিয়ে সব হারিয়েছেন জেমস। তিনিই এ দিন বললেন, ‘‘আমি আসার পর টিমের মধ্যে একটা জেতার মানসিকতা তৈরি করেছি।’’
এটিকে-তে আজ যেমন রবি কিন নেই, কেরলেও আজ অনিশ্চিত ইয়ান হিউম। অধিনায়ক সন্দেশ জিঙ্ঘান কার্ডের জন্য বাইরে। কেরলের সেরা অস্ত্র বালগেরিয়ার সর্বকালের সেরা গোলদাতা দিমিত্রি বার্বাটভও এ বার ফর্মে নেই। তিনিও অর্ধেকের মতো ম্যাচ খেলেননি রবি-র মতোই। তা সত্ত্বেও সচিন তেন্ডুলকরের টিমের কোচ বলে দিলেন, ‘‘রবি কিন যদি সত্যিই না খেলে তা হলে আমরা সামান্য হলেও এগিয়ে থাকব।’’
এমনিতে এ বার গত তিনবারের মতো আইএসএল নিয়ে সেই উৎসাহ নেই। কেরল ছাড়া প্রায় কোনও স্টেডিয়ামেই দর্শক হচ্ছে না। টুনার্মেন্ট শুরু হওয়ার পর এ বারই প্রথম শেষ চারে ঢুকতে পারছে না কলকাতা। ফলে যুবভারতীতেও দর্শক ক্রমশ কমছে। এই অবস্থায় টুর্নামেন্টের ফাইনাল এখানে শেষ পর্যন্ত হবে কী না তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এটিকে না থাকলে কে আসবে অন্য শহরের টিমের খেলা দেখতে? সেটাই নাকি ভাবাচ্ছে সংগঠকদের।
বৃহস্পতিবার—এটিকে: কেরল ব্লাস্টার্স (যুবভারতী ৮-০০)।