চ্যাম্পিয়নের সাফল্যের নেপথ্য কাহিনি

স্ত্রী মিরকাকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন ফেডেরার

ফেডেরার বলছেন, ‘‘সত্যি বলছি এ ব্যাপারে কিছু ভাবিনি। আমি জানি না।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘গত ১২ মাসে তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছি। এটা বিশ্বাসই করতে পারছি না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

অপ্রতিরোধ্য: অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পরের দিন রজার ফেডেরার। সোমবার মেলবোর্নে। চ্যাম্পিয়ন বলেছেন, অবসর নিয়ে কোনও ভাবনা নেই, এ ভাবেই খেলতে চান। ছবি: গেটি ইমেজেস

সাতটা ম্যাচে ১৪ ঘণ্টাও কোর্টে কাটাননি এ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। যার মধ্যে পাঁচটা ম্যাচ জিতেছেন দু’ঘণ্টার মধ্যে। সেট হারিয়েছেন মাত্র দুটো। তাও ফাইনালে। কে বলবে এ রকম দাপট দেখানো খেলোয়াড়ের বয়স ৩৬! তিনি— রজার ফেডেরার।

Advertisement

রবিবার ঐতিহাসিক ২০ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পরে তাঁর কাছে প্রথমেই যে প্রশ্নটা উঠে আসছে সেটা হল, আর কত দিন এ ভাবে খেলে যেতে চান? ট্রফি ক্যাবিনেটে আর কতগুলো গ্র্যান্ড স্ল্যাম তাঁর লক্ষ্য?

ফেডেরার বলছেন, ‘‘সত্যি বলছি এ ব্যাপারে কিছু ভাবিনি। আমি জানি না।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘গত ১২ মাসে তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছি। এটা বিশ্বাসই করতে পারছি না। আমাকে একটা দারুণ সূচি মেনে চলতে হবে। আরও জেতার খিদেটা ধরে রাখতে হবে।’’

Advertisement

২০০৩-এ প্রথম জেতা উইম্বলডন থেকে রবিবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন প্রায় ১৫ বছরের যাত্রা। এত দিন ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ের টেনিসে টিকে থাকার রহস্য কী? ফেডেরার বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় বয়স শুধু একটা সংখ্যা। তবে আমায় আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। আগেই ঠিক করে নিতে হবে কোন জিনিসগুলোকে গুরুত্ব দেব, কোনগুলোকে এগিয়ে রাখব।’’

মেলবোর্ন পার্কে রবিবারের আবেগাপ্লুত জয় ফেডেরারকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সর্বোচ্চ ট্রফি জয়ীদের সঙ্গে একই আসনে বসিয়ে দিয়েছে। যে তালিকায় রয় এমার্সন এবং নোভাক জকোভিচের পাশে উঠে এসেছেন তিনি ছ’নম্বর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে। তাঁর দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী নাদাল, জকোভিচ, স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা এবং অ্যান্ডি মারে নতুন মরসুমে চোট সমস্যায় যেখানে জর্জরিত, ফেডেরার সেখানে ফাইনালে উঠছেন দুরন্ত ফিটনেস দেখিয়ে। রবিবারও তো ফাইনালে পঞ্চম সেটের শেষে তাঁর চেয়ে বেশি ক্লান্ত লাগছিল চিলিচকে। বয়সে যে ফে়ডেরারের চেয়ে সাত বছরের ছোট।

কে বলবে ফেডেরার ১৯৭২-এ কেন রোজওয়েল (৩৭) এবং ম্যাল অ্যান্ডারসনের (৩৬) পরে বয়স্কতম ফাইনালিস্ট হিসেবে ফাইনালে উঠেছিলেন। কী ভাবে তিনি এখনও সব বাধা কাটিয়ে এ ভাবে তরতাজা ভাবে খেলতে পারছেন সে প্রসঙ্গে ফে়ডেরার কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁর সূচিকে। তিনি বলেন, ‘‘যতগুলো সম্ভব টুর্নামেন্ট খেলার চেষ্টা না করা। বেছে বেছে খেলা। প্র্যাকটিস উপভোগ করা। এত ঘোরাফেরা, দৌড়োদৌড়ি করা নিয়ে কোনও সমস্যা না হওয়া। আর দারুণ একটা টিম থাকা। এগুলোই আমার জন্য সব সম্ভব করে তুলেছে।’’

সঙ্গে আরও এক জন আছেন। তাঁর স্ত্রী এবং প্রাক্তন সুইস ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় মিরকা। ২০০০ সিডনি অলিম্পিক্স থেকে ফে়ডেরারের সঙ্গে যাঁর প্রথম আলাপ। বিয়ে ২০০৯ সালে। ফেডেরার বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীর জন্যই সব সম্ভব হয়েছে। ওর সমর্থন না থাকলে এত দিন ধরে টেনিস খেলে যেতে পারতাম না। ও আমাকে প্রচণ্ড সমর্থন করেছেন এ ব্যাপারে। বাচ্চাদের সামলানোর বিরাট দায়িত্বটা নিজেই কাঁধে তুলে নিয়েছে। এই জীবনটা এমন থাকত না যদি মিরকা রাজি না থাকত।’’

পাশাপাশি ফেডেরার দারুণ খুশি তাঁর বাবা-মা রবার্ট এবং লিনেট ফেডেরার ছেলের খেলা উপভোগ করায়। ‘‘দিনের শেষে যখন দেখি আমার বাবা-মা খুব গর্বিত আমায় নিয়ে। টুর্নামেন্টে এসে বাবা-মা যে ভাবে সব উপভোগ করে সেটা আমায় আরও ভাল থাকতে এবং ভাল খেলতে উদ্বুদ্ধ করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন