বাউন্সের দেশে নজরে দীর্ঘকায় পেসাররা, তুলনা দু’দলের
বিরাট কোহালির পরে ভারতীয় দলের যে ক্রিকেটারকে নিয়ে বেশি চিন্তায় অস্ট্রেলীয়রা, সেই রোহিত শর্মার চিন্তা আবার অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘকায় বোলারদের নিয়ে।
যাঁরা ভারতের ব্যাটসম্যানদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন বলে মনে করেন সহ অধিনায়ক। তবে তাঁরা যে সেই চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি, তাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি রোহিত।
বুধবার ব্রিসবেনে প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু হচ্ছে ভারতীয় দলের অস্ট্রেলিয়া সফর। তার দু’দিন আগে রোহিত বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার দ্রুতগতির উইকেটে তাঁদের পেসারদের সামলানো সোজা কাজ হবে না। রোহিতের বক্তব্য, ‘‘শুরুতেই পারথ বা ব্রিসবেনে বরাবর খেলি আমরা। এই দুই জায়গাতেই কঠিন পরিবেশ। আর একাধিক লম্বা বোলার আছে ওদের। ওরা এই দুই মাঠের পরিবেশ ভাল কাজে লাগায়।’’
বাস্তববাদী রোহিত বলেন, ‘‘আমরা ওদের মতো লম্বা নই বলে আমাদের কাজটা সোজা হবে না। তবে এ বার যাতে আর আগের মতো না হয়, সেই ব্যাপারে বদ্ধপরিকর আমাদের ছেলেরা। আমরা চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য তৈরি।’’ অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা দলের অনেকেরই আছে বলেই এ কথা বলছেন রোহিত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে আমরা অনেকেই খেলে গিয়েছি বলে জানি পরিবেশ কেমন। যে কোনও ধরনের ক্রিকেটেই অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে আমাদের। তবে আমরা তৈরিই আছি।’’
ব্রিসবেনের উইকেট নিয়ে রোহিতের বক্তব্য, ‘‘ব্রিসবেন সম্ভবত সবচেয়ে গতিময় উইকেট। শুরুতেই ধাক্কা লাগতে পারে। তাই এখানকার বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কয়েক দিন আগেই এসে গিয়েছি আমরা। আশা করি আমাদের উদ্দেশ্য সফল হবে।’’
রোহিত নিজে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ায় সফল। ওয়ান ডে-তে তাঁর ব্যাটিং গড় এখানে ৫৭.৫০। ১৬ ম্যাচে করেছেন ৮০৫ রান। অস্ট্রেলিয়ার উইকেটের বাউন্স তাঁকে সাহায্য করে বলে জানান রোহিত। বলেন, ‘‘আসলে ছোট থেকে মুম্বইয়ে সিমেন্টের পিচে খেলে আসছি বলে ব্রিসবেন বা পারথে বাউন্সে ভরা পিচে ব্যাট করতে অসুবিধা হয় না। তবে লাল বলের ক্রিকেটে এখানে আমাকে আরও উন্নতি করতে হবে।’’ তবে এখন শুধু টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাবছেন। টেস্ট নিয়ে পরে ভাববেন বলে জানিয়ে দেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় কখনও টেস্ট সিরিজ জেতেনি ভারত। মোট ১১টির মধ্যে তিনটি টেস্ট ড্র হয়েছে, বাকি আটটিতে জেতে অস্ট্রেলিয়া। তাই এ বার সে দেশে স্মৃতিচিহ্ন রেখে ফিরতে চায় ভারতীয় শিবির। এ কথা জানিয়ে রোহিত বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া এমন একটা দেশ, যেখানে দল হিসেবে আমরা কখনও স্মৃতিচিহ্ন রেখে যেতে পারিনি। এ বার সেই চেষ্টাই থাকবে। গতবার আমরা টেস্ট সিরিজে দু’টো ম্যাচ হেরে একটাতে ড্র করেছিলাম। তবে কয়েকটা ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। বিশেষ করে এই ব্রিসবেনে। এ বার দলে খুব ভাল পরিবেশ। আমরা সবাই খুব উদ্বুদ্ধ হয়ে এসেছি।’’
আগামী বছর বিশ্বকাপ। তার আগে অস্ট্রেলিয়ায় ভাল পারফর্ম করা খুবই জরুরি বলে মনে করেন রোহিত। বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় ভাল খেললে দলের মধ্যে সত্যিই ভাল মনোভাব তৈরি হয়। বিশ্বকাপের আগে এ রকম একটা মনোভাব তৈরি হওয়া খুব দরকার। এতে আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়ে।’’
চলতি বছরে সব ধরনের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া ৩৬টির মধ্যে মাত্র ১৩টি ম্যাচ জিতেছে। হেরেছে ২২টিতে। এ বছরই সে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিতর্ক বল-বিকৃতি কাণ্ডও ঘটেছে। তাদের এ রকম দুঃসময়ে বিশেষজ্ঞরা ভারতের অধরা সাফল্য পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখলেও রোহিত বলেন, ‘‘দেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সব সময় বিপজ্জনক। এখানে সাফল্য পেতে গেলে সবাই মিলে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। দলের কেউ কেউ ভাল খেললে হবে না। ভাল খেলতে হবে গোটা দলকে।’’