খাদ্যরসিক: নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সচিন তেন্ডুলকর।
বাইশ গজে তিনি যখন ব্যাট হাতে নামতেন, ভালবাসতেন রান করতে আর রেকর্ড ভাঙতে। বাইশ গজের বাইরের জীবনেও সচিন তেন্ডুলকরের অনেক ভালবাসার জিনিস আছে। যার মধ্যে একটা হল খাদ্যপ্রেম। ঘনিষ্ঠ মহলে সচিন কিন্তু যথেষ্ট খাদ্যরসিক বলেই পরিচিত।
সেই সচিন তেন্ডুলকরকেই জীবনে প্রথমবার চাইনিজ খাবার খেতে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। যে ঘটনার কথা তিনি নিজেই তুলে এনেছেন তাঁর নতুন বইয়ে। আশির দশকের শুরুর দিকে মুম্বইয়ে চিনা খাবার খুব জনপ্রিয় হতে শুরু করেছিল। যে খবর কানে এসেছিল খুদে সচিন এবং তার বন্ধুদের। এর পরে সবাই মিলে ঠিক করা হয়, চাদা তুলে চিনা খাবার খেতে যাওয়া হবে। পুরনো স্মৃতিতে ডুব দিয়ে সচিন বলেছেন, ‘‘আমরা সবাই দশ টাকা করে চাঁদা দিয়েছিলেন। ওই সময় আমার কাছে দশ টাকার মূল্য অনেক ছিল। একটা নতুন অভিজ্ঞতা হবে বলে তখন আমি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম।’’
আরও পড়ুন: স্পিনারদের সামলে জিতল নিউজিল্যান্ড
রেস্তোরাঁয় গিয়ে অবশ্য সচিনের অভিজ্ঞতা একদমই ভাল হয়নি। তার জন্য অবশ্য খাবারের মান বা রেস্তোরাঁ দায়ী ছিল না। দায়ী ছিল সচিনের বন্ধুরাই। বয়সে ছোট হওয়ার কারণে সে দিন মুখ শুকনো করেই বাড়ি ফিরতে হয়েছিল সচিনকে। ‘‘রেস্তোরাঁয় গিয়ে শুরুতে অর্ডার দেওয়া হয়েছিল চিকেন আর সুইট কর্ন সুপ। আমরা সবাই মিলে একটা লম্বা টেবিলে বসেছিলাম। শেষ পর্যন্ত যখন সুপের বাটি আমার সামনে এল, প্রায় কিছুই ছিল না তাতে। আমাদের সিনিয়ররা প্রায় সবই শেষ করে দিয়েছে। আমরা, গ্রুপের ছোটরা কিছুই পেলাম না,’’ লিখেছেন সচিন।
সুপ আর চিকেনেই অবশ্য ঝামেলা মিটে যায়নি। ‘মেন ডিশ’ নিয়েও একই সমস্যা দেখা দেয়। সচিনের কথায়, ‘‘ফ্রায়েড রাইস আর চাউমিন নিয়েও একই ব্যাপার হল। দু’-এক চামচের বেশি আর আমার ভাগ্যে কিছু জোটেনি। গ্রুপের বড় ছেলেরা দারুণ মজা করেছিল সে দিন। আমি অবশ্য খিদে, তেষ্টা নিয়েই বাড়িতে ফিরেছিলাম।’’
সচিনের আত্মজীবনী ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’ থেকে অংশ বিশেষ নিয়ে ছোটদের জন্য বিশেষ ভাবে প্রকাশিত হয়েছে ‘চেজ ইওর ড্রিমস’। যে বইকে বলা হচ্ছে ছোটদের জন্য প্রথম প্রকাশিত কোনও ভারতীয় ক্রীড়াবিদের আত্মজীবনী। যেখানে সহজ ভাষায় সচিনের উত্থানের কথা আছে। কমিক চিত্র আছে। আর আছে সচিনের নানা অকথিত কাহিনি।
যেমন তুলে ধরা হয়েছে এই খাদ্যরসিক সচিনকে। যেখানে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ লিখেছেন তাঁর মায়ের কথা। ‘‘আমার মা অসাধারণ রান্না করত। মায়ের হাতে বানানো মাছ এবং চিংড়ি কারি ছিল সবার সেরা। এর বাইরে মা আমার জন্য বেগুন ভর্তা, ভারান ভাত বানাত। আমি যে খাবার এত ভালবাসি, সেটা কিন্তু আমার মায়ের জন্যই।’’
নিজের ছোটবেলার আরও ভালবাসার কথা তুলে ধরেছেন সচিন। যেমন তাঁর টেনিসপ্রেম। টেনিসের প্রতি সচিনের ভালবাসা এতটাই ছিল যে জন ম্যাকেনরোর মতো ঝাঁকড়া চুল রেখেছিলেন। মাথায় হেডব্যান্ড পরতেন। লিখেছেন কী ভাবে পেয়েছিলেন নিজের প্রথম বাইসাইকেল। আর অবশ্যই আছেন সচিন হয়ে ওঠার কাহিনিও।