তীব্র গরম আর কার্ড নিয়ে চিন্তায় সঞ্জয়

সনি নর্দে, ইউসা কাতসুমিদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত অনুশীলন বয়কট তুলে নিয়ে দুপুরের রোদেই টিম নিয়ে স্টেডিয়ামে নেমে পড়লেন সঞ্জয় সেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১০
Share:

মহড়া: লুধিয়ানায় মিনার্ভা ম্যাচের প্রস্তুতি মোহনবাগানের। —নিজস্ব চিত্র।

সনি নর্দে, ইউসা কাতসুমিদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত অনুশীলন বয়কট তুলে নিয়ে দুপুরের রোদেই টিম নিয়ে স্টেডিয়ামে নেমে পড়লেন সঞ্জয় সেন। লুধিয়ানা থেকে ফোনে মোহনবাগান কোচ বলে দিলেন, ‘‘আমি তো ঠিক করেছিলাম অনুশীলন না করেই মাঠে নামব। কিন্তু ফুটবলাররা সবাই বলল স্যার স্টেডিয়ামটা একবার দেখে আসা দরকার। সে জন্যই তীব্র রোদেও অনুশীলন করালাম। দুপুর বারোটায় মাঠে নামতে হচ্ছে। এর চেয়ে খারাপ ভারতীয় ফুটবলের পক্ষে আর কী হতে পারে।’’

Advertisement

বাধ্য হয়ে একচল্লিশ ডিগ্রি গরমে অনুশীলন করলেও সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মোহনবাগানকে তেরো বছর পর আই লিগ দেওয়া কোচ। মিনার্ভা পঞ্জাবের মালিকদের সামনেই সঞ্জয় বলে দেন, ‘‘এটা অত্যন্ত অন্যায়। চোদ্দো ঘণ্টা বিমান ও বাস যাত্রার পর ওদের কাছে বিকেলে মাঠ চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা চূড়ান্ত অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। অমানবিক আচরণ করেছে। এটুকু ভদ্রতা ওরা দেখাতেই পারত।’’ মিনার্ভার লোকজন নাকি সনিদের কোচকে প্রেস রুমেই বোঝাতে গিয়েছিলেন, ‘‘মাঠে জল দেওয়ার ব্যাপার ছিল।’’ সঞ্জয় তাতেও দমেননি। পাল্টা বলে দেন, ‘‘আমরা তো এক ঘণ্টার জন্য মাঠ চেয়েছিলাম অনুশীলনের জন্য। তার পর তো জল দেওয়াই যেত।’’ এ নিয়ে সামান্য বিতণ্ডাও হয় দু’পক্ষের বলে খবর।

মাঠ নিয়ে ফেডারেশনকে চিঠি দেওয়া থেকে চাপান-উতোর চলার মধ্যেও মোহনবাগান অবশ্য চিন্তিত পঞ্জাবের টিমের টাফ ফুটবল নিয়ে। কলকাতায় এই ম্যাচটা চার গোলে জিতেছিলেন সনিরা। কিন্তু এখানে পরিস্থিতি ভিন্ন। এই ম্যাচটার পর হাতে থাকবে খেতাবের জন্য আরও দু’টো ম্যাচের লাইফ লাইন। সে জন্যই কলকাতার তাঁবুতে যখন পয়লা বৈশাখের উৎসবের প্রস্তুতি চলছে, তখন লুধিয়ানার ক্লাবের টিম হোটেলে ঘুরছে কার্ড আর রেফারিং-এর কথা। এ জন্য টিম মিটিংয়ে এ দিন শেহনাজ সিংহ-এদুয়ার্দো পেরিরাদের সতর্ক করে দিয়েছেন সবুজ-মেরুন কোচ। বলে দেন, ‘‘মাঠে কোনও প্ররোচনাতেই মাথা গরম করা চলবে না। রেফারির সঙ্গে তর্ক করে কেউ যেন কার্ড না দেখে। তা হলে আমাদের পরে ভুগতে হবে।’’

Advertisement

তীব্র গরমের মধ্যেই এ দিন অনুশীলন করেন সনি, ড্যারেল ডাফিরা। তবে মূলত দৌড়োদৌড়ি, স্ট্রেচিং, সেট পিস অনুশীলনই হয়। লিগ টেবলে নীচের দিকে থাকলেও পঞ্জাবের মননদীপ সিংহ, অর্ণব দাশ শর্মাদের যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে মোহনবাগান। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘বেঙ্গালুরু, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে একটা স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা যায়। ছোট টিমের ক্ষেত্রে সেটা করা কঠিন। ওরা মরিয়া হয়ে জেতার জন্য অলআউট ঝাঁপাবে ধরে নিয়েই এগোতে হবে। এটা কিন্তু আমাদের কাছে ফাইনাল। জিততে না পারলেই সমস্যা হবে।’’

সঞ্জয়ের ভাবনা যে কতটা ঠিক তা বোঝা যায় মিনার্ভা কোচ সুরিন্দর সিংহের কথা শুনলেই। ‘‘মোহনবাগান শীর্ষে আছে এবং ওটা ধরে রাখাটাই ওদের উপর চাপ বাড়াবে ম্যাচে। সনি-কাতসুমিদের জন্য আমাদের প্ল্যান তৈরি। বেঙ্গালুরু, আইজলকে আমরা আটকেছি। মোহনবাগান ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্টই পাব আশা করছি।’’ বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই লুধিয়ানা থেকে ফোনে বলে দেন ফেডারেশনের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমের কোচ। জানিয়ে দেন, ‘‘ফেডারেশন কাপে খেলতে হলে এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট আমাদের দরকারই। সেটা সবাই জানে।’’ দাবি করলেন, মোহনবাগানের শেষ চারটে ম্যাচের খেলা দেখেছেন তিনি।

মিনার্ভাকেও দেখেছেন সঞ্জয়। সে জন্যই, ডার্বি এবং শিলং লাজং ম্যাচে যে প্রথম একাদশ নামিয়েছিলেন সেটাই অপরিবর্তিত রাখছেন মোহনবাগান কোচ। দু’দলই নামছে চার বিদেশি নিয়ে। মিনার্ভা কোচ বললেন, ‘‘মোহনবাগানের সব শক্তি ওদের বিদেশিরাই। সেটা আমরা মাথায় রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন