সচিনের জন্যই অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখছেন সরিতা

বিতর্কিত সরিতা দেবীর জীবনটাই বদলে দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর! মাস্টার ব্লাস্টারের জন্যই তিনি এখন অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। একটা সময়ে মণিপুরের বক্সার ভেবেছিলেন, গ্লাভস খুলে রাখবেন। সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন, আর কোনও দিনও বক্সিং রিংয়ে ফিরবেন না। কিন্তু তাঁর এই ভাবনাকে বদলে দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। ‘‘সচিন আমার কাছে ভগবানের মতো।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

খুদে ভক্তদের মাঝে সরিতা। শনিবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

বিতর্কিত সরিতা দেবীর জীবনটাই বদলে দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর! মাস্টার ব্লাস্টারের জন্যই তিনি এখন অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখছেন।
একটা সময়ে মণিপুরের বক্সার ভেবেছিলেন, গ্লাভস খুলে রাখবেন। সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন, আর কোনও দিনও বক্সিং রিংয়ে ফিরবেন না। কিন্তু তাঁর এই ভাবনাকে বদলে দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। ‘‘সচিন আমার কাছে ভগবানের মতো। আমাকে রিংয়ে ফিরতে উদ্বুদ্ধ করেছেন,’’ শনিবার কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে বলছিলেন এশিয়াডে ব্রোঞ্জ জয়ী বক্সার।
ইনচিওন এশিয়াডে ব্রোঞ্জ জয়ের পর রেফারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছিলেন সরিতা। প্রত্যাখ্যান করেছিলেন পদকও। যার জেরে এক বছর নির্বাসিতও হতে হয় তাঁকে। সে সময় তাঁর এই আচরণের সমালোচনা করেছিলেন ভারতের অনেক নামী প্রাক্তন এবং বর্তমান ক্রীড়াবিদ। এই ঘটনায় এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন ৩০ বছরের সরিতা, সব ছেড়ে দিয়ে শুধু মাত্র সন্তান নিয়ে সংসার করার কথা ভাবতে শুরু করেছিলেন। তবে ভারতীয় খেলাধুলার আইকন সচিন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সরিতার। ক্রীড়া মন্ত্রককে চিঠি লিখে বিতর্কিত বক্সারকে সব রকম সাহায্য করার অনুরোধ করেন। নিজের বাড়িতে ডেকে সরিতার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে উৎসাহও দেন।
সেই বিতর্কিত দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আজও উদাসীন হয়ে পড়েন ভারতের তারকা বক্সার। ভিজে ওঠে চোখ। ‘‘আবেগপ্রবণ হয়েই প্রতিবাদ করেছিলাম সে দিন। ভুল-ঠিক ভাবার মতো মানসিক অবস্থা ছিল না। তবে ভারতের প্রাক্তন এবং বর্তমান তারকা ক্রীড়াবিদরা যে ভাবে সে সময় আমার সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন, তা দেখে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তখন আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সচিন,’’ সরাসরি বলে দেন সরিতা।

Advertisement

তবে জীবনের খারাপ অধ্যায়ের কথা ভুলে এখন রিও অলিম্পিকের প্রস্তুতিতে মন দিতে চান সরিতা দেবী। কবজির চোটে অস্ত্রোপচার হওয়ার জন্য বহু দিন রিংয়ের বাইরে ছিলেন। এখন অবশ্য ফিট হয়ে উঠেছেন। চার মাস বেঙ্গালুরুতে রিহ্যাব করার পর, এ বার পুণেতে গিয়ে পুরোদমে অলিম্পিকের প্রস্তুতিতে নেমে পড়তে চান তিনি। রিও-তে পদক জয়ের ব্যাপারেও রীতিমতো আশাবাদী সরিতা। বলে দেন, ‘‘চোট সারিয়ে আমি এখন অনেকটাই সুস্থ। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসও ফিরে পেয়েছি। এমনকী রিও থেকে পদক নিয়ে ফেরার ব্যাপারেও আমি আশাবাদী। ছেলেদের বক্সিংয়ের কথা বলতে পারব না। তবে মহিলা বক্সিং-এ আমি দু’টি পদক তো দেখতেই পাচ্ছি। আমার আর মেরির (কম)।’’

নিজে মহিলা বলেই হয়তো মহিলাদের আত্মরক্ষার ব্যাপারে বেশি সচেতন সরিতা। নিজেরও কন্যা সন্তান রয়েছে। আর সে জন্যই কলকাতায় এসে মেরি কমের মতোই মেয়েদের আত্মরক্ষার মন্ত্র দিয়ে গেলেন তিনি। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্রথম গোটা বাংলা মহিলা ক্যারাটে এবং সেলফ ডিফেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অনুষ্ঠানে এসে তিনি বললেন, ‘‘দিনে দিনে মহিলারা নানা ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচার জন্য মহিলাদের আত্মরক্ষার কৌশল আয়ত্ত করা খুবই জরুরি। যেটা মানসিক এবং শারীরিক ভাবে মেয়েদের শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন