বছর শেষে ভারতের পারফরম্যান্সের সারসংক্ষেপ লিখতে বসলে একটা জিনিস সেখানে রাখতেই হবে। এ বছর টিমের লোয়ার অর্ডারের অবদান। প্রথম চার-পাঁচজন ব্যাটসম্যান বড় রান না পেলেও যারা টিমকে ভাল স্কোরে পৌঁছে দিয়েছে। একটা-দুটো ম্যাচে নয়, ধারাবাহিক ভাবে টিমকে নিরাপদ স্টেশনে নিয়ে গিয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা, রবীন্দ্র জাডেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা।
বিরাট কোহালিদের ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার বলছেন, এর পিছনে রয়েছে আরও বেশি ব্যাটিং প্র্যাকটিস।
চলতি বছরে তিনটে টেস্ট সিরিজ খেলেছে ভারত। গত জুলাই-অগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাদের বিরুদ্ধে চারটে টেস্টে টিমের মোট রান ১৫৫৯। তার মধ্যে সাত থেকে ন’নম্বর ব্যাটসম্যানের মিলিত রান ৩০৫। গড় ৩০.৫০। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটে টেস্টে ভারত করেছে ১৯৮৪ রান। লোয়ার অর্ডার করেছে ৩১২, গড় ৫২। সদ্যসমাপ্ত ইংল্যান্ড সিরিজে পাঁচটা টেস্টে ভারতের রান ৩১৩৫। তার মধ্যে লোয়ার অর্ডারের অবদান ৭০৪ রান, গড় ৪১.৪১। সব মিলিয়ে ১২টা টেস্টে এ বছর লোয়ার অর্ডারের রান ১৩২১। গড় ৪০.০৩।
বিরাট কোহালির নেতৃত্বে ভারত টেস্টে পাঁচ বোলারের স্ট্র্যাটেজি এখন নিয়মিত নিচ্ছে। সেখানে লোয়ার অর্ডারের নিয়মিত অবদান প্রধান ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ অনেকটাই কমিয়ে দিচ্ছে। ইংল্যান্ড সিরিজ যার সবচেয়ে টাটকা উদাহরণ। মোহালি, মুম্বই আর চেন্নাইয়ে দু’দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন অশ্বিন, জাডেজা এবং জয়ন্ত যাদব।
‘‘আমি বিশ্বাস করি যে, স্কিলকে ধারালো করার একমাত্র রাস্তা হল প্রচুর পরিমাণে সঠিক ট্রেনিং। একটা পরিষ্কার প্ল্যানও সঙ্গে থাকতে হবে,’’ বলছেন বাঙ্গার। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘ইচ্ছে মতো সব শট খেলতে চাইলে শরীরটা সঠিক পজিশনে রাখতে হবে। তাই আমরা নিশ্চিত করেছিলাম যে, প্রধান ব্যাটসম্যানরা যতটা প্র্যাকটিস পাচ্ছে, লোয়ার অর্ডারও যেন ততটাই পায়।’’
ছয় বা সাতে নেমে নিয়মিত রান করেছেন অশ্বিন। যিনি দিনকয়েক আগেই আইসিসির বিচারে বর্ষসেরা এবং টেস্ট বর্ষসেরা হয়েছেন। ২০১৬ সালে অশ্বিন ৪৩.৭১ গড়ে ৬১২ রান করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুটো সেঞ্চুরি এবং তার পরে চারটে হাফসেঞ্চুরি। সঙ্গে আবার ৭২ উইকেট। ‘‘অশ্বিনের মাথা ঠান্ডা, ওর টেকনিক অনবদ্য। বল ব্যাটে আসতে দেয় ও,’’ বলে বাঙ্গার যোগ করেছেন, ‘‘অশ্বিনকে দমিয়ে রাখা যায় না। কাট, ড্রাইভ সব পারে। স্পিনের বিরুদ্ধেও দ্রুত রান তুলতে পারে।’’ এর পিছনে অধিনায়ক বিরাটেরও অবদান রয়েছে বলে মনে করেন বাঙ্গার। ‘‘অশ্বিনকে ছ’নম্বরে নামানোর কৃতিত্ব বিরাট আর টিম ম্যানেজমেন্টের। ওর অভিজ্ঞতার জোরে ওখান থেকেও ইনিংস নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে অশ্বিন। বিশেষ করে ঋদ্ধিমান যেখানে টেস্টে অত অভিজ্ঞ ছিল না,’’ বলেছেন বাঙ্গার।
এ দিকে, কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব টিমের কোচ হিসেবে সরে দাঁড়ালেন বাঙ্গার। নভেম্বরের শেষে ইস্তফা পত্র জমা দেন তিনি। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নেয় প্রীতি জিন্টার ফ্র্যাঞ্চাইজি। ২০১৪-এ প্রথমে সহকারী কোচ এবং পরে পঞ্জাবের হেড কোচ করা হয়েছিল বাঙ্গারকে।