একটা জয়ই বাগানে আত্মবিশ্বাসের ফুরফুরে বাতাস বয়ে এনেছে। টুর্নামেন্টের বিজনেস এন্ডে পৌঁছে জয়ের সরণিতে প্রত্যাবর্তন ঘটানোয় সনি নর্ডি এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে, আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সেলিব্রেশন নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন! যতই এখনও শনিবার ওডাফা-কাঁটা উপড়ানো আর তার পরে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে সুনীল-বধ বাকি থাক না কেন বাগানের!
চব্বিশ ঘণ্টা আগে ওয়াহিংডোর বিরুদ্ধে ফ্রি-কিক থেকে দুরন্ত গোল করা সনি এ দিন বলেই ফেললেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে সেলিব্রেট তো করবই। কিন্তু কী ভাবে, ঠিক করিনি। স্পোর্টিং ম্যাচ জিততে হবে। তার পর বেঙ্গালুরু। এই ম্যাচ দু’টোতেই এখন ফোকাস করতে চাই।’’
এক সময়ে বাগানের ত্রাতাই আপাতত তাদের সবচেয়ে বড় কাঁটা। মারগাওতে ওডাফা একাই হারিয়েছিলেন সবুজ-মেরুনকে। বারাসতে তার বদলা নিতে চাইছেন সনি। ‘‘জেতা ছাড়া আমাদের হাতে অন্য রাস্তা নেই। স্পোর্টিং অবনমন থেকে বেরিয়ে এসেছে। তাই ওদের ফোকাস শনিবারের ম্যাচে যতটা বেশি থাকবে, তার চেয়ে আমাদের ট্রফির খিদে থাকবে অনেক বেশি।’’
ফ্রি-কিক থেকে এর আগে বহু গোল করেছেন সনি। তবে আই লিগের শেষ ল্যাপে পৌঁছে মারাত্মক চাপের মুখে ওয়াহিংডোর বিরুদ্ধে করা গোলকে ‘ভেরি স্পেশ্যাল’ আখ্যা দিচ্ছেন বাগানের এক নম্বর স্ট্রাইকার। ‘‘যদিও বলটা একজন ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে গোলে ঢুকেছিল। তবু গোলটা খুব দরকার ছিল।’’ রোজই প্র্যাকটিসে ফ্রি-কিক থেকে একের পর এক শট গোলে রাখেন সনি। শেখ জামালের হয়ে যখন আইএফএ শিল্ড খেলতে কলকাতায় এসেছিলেন, তখন ফ্রি-কিক থেকে করা তাঁর দুরন্ত সব গোল দেখে মুগ্ধ হয়েছিল ময়দান। বাগান কোচ সঞ্জয় সেন তো বলেই ফেললেন, ‘‘সনি বরাবরই ফ্রি-কিক দারুণ মারে।’’ স্পোর্টিং ম্যাচ জিততেই হবে এ রকম পরিস্থিতিতে বাগান কর্তারা টিমকে নানা ভাবে উজ্জীবিত করতে মরিয়া। টুটু বসু আরও ত্রিশ লক্ষ টাকা দিয়েছেন কোচিং এবং সাপোর্ট স্টাফের বকেয়া বেতন মেটানোর জন্য। ভিটামিন-এম-এর ঘাটতির প্রভাব খেলায় যাতে কোনও ভাবে না পড়ে, সে জন্যই এই ব্যবস্থা। এমনকী দীর্ঘ দশ বছর বাদে বলরাম চৌধুরী শুক্রবারই মোহনবাগান মাঠে প্রথম আসছেন। সদ্য সচিব নির্বাচনে হেরে যাওয়া সত্ত্বেও। তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো ওয়াহিংডো ম্যাচের দুই গোলদাতা প্রীতম কোটাল এবং সনি নর্ডিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেবেন আজ সকালে বলরাম।।
আই লিগের জটিল অঙ্কের হিসেব বলছে, স্পোর্টিং হারাতে পারলে, সে ক্ষেত্রে বেঙ্গালুরু এফসি ম্যাচ ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে মোহনবাগান। তবে ওয়াহিংডো যে রকম ছন্দে রয়েছে তাতে বেশ চিন্তায় সঞ্জয়। বিশেষ করে গোলের মধ্যে থাকা ওডাফাকে নিয়ে। ‘‘আমাদের ডিফেন্সকে আরও সংগঠিত ভাবে, সতর্ক হয়ে খেলতে হবে।’’