নেমে গেল পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ডেম্পো

ইস্টবেঙ্গলের সবচেয়ে বড় হার দেখে ফুঁসছেন প্রাক্তনরা

মহানাটকের আই লিগ! পাঁচ বছর ধরে যারা একটাও ট্রফি জেতেনি, সেই মোহনবাগান এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল খেতাবের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। পাঁচ বছর ধরে যারা দেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক, সেই ইস্টবেঙ্গল আই লিগে নিজেদের বৃহত্তম হারের লজ্জায় ডুবে। পাঁচ বার যারা আই লিগ চ্যাম্পিয়ন, সেই ডেম্পো এ বার অবনমনের শিকার। ইস্টবেঙ্গলকে আটটা ট্রফি দেওয়া ট্রেভর মর্গ্যানের হাতে! সবুজ-মেরুন রথে চেপে আই লিগের ট্রফি বাংলার মাটিতে পা রাখে কি না, সেটা সময় বলবে। তবে খেতাবের ফয়সালা হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগেই নিশ্চিত ভাবে ইতিহাসে ঢুকে পড়ল এ বারের আই লিগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০৩:১৮
Share:

লাজং এফসি-৫(জর্ডিলিয়ানা, গ্লেন-হ্যাটট্রিক, লেন) : ইস্টবেঙ্গল-১(লোবো)

Advertisement

মহানাটকের আই লিগ!
পাঁচ বছর ধরে যারা একটাও ট্রফি জেতেনি, সেই মোহনবাগান এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল খেতাবের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে।
পাঁচ বছর ধরে যারা দেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক, সেই ইস্টবেঙ্গল আই লিগে নিজেদের বৃহত্তম হারের লজ্জায় ডুবে।
পাঁচ বার যারা আই লিগ চ্যাম্পিয়ন, সেই ডেম্পো এ বার অবনমনের শিকার। ইস্টবেঙ্গলকে আটটা ট্রফি দেওয়া ট্রেভর মর্গ্যানের হাতে!
সবুজ-মেরুন রথে চেপে আই লিগের ট্রফি বাংলার মাটিতে পা রাখে কি না, সেটা সময় বলবে। তবে খেতাবের ফয়সালা হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগেই নিশ্চিত ভাবে ইতিহাসে ঢুকে পড়ল এ বারের আই লিগ।
‘থার্ড বয়’ হয়ে সান্ত্বনা পুরস্কারের স্বপ্ন ভাসছিল চোখে। সেটা তো হল-ই না, উল্টে ব্যাগ ভর্তি কলঙ্ক নিয়ে পাহাড় থেকে ফিরছে ইস্টবেঙ্গল। লাজংয়ের কাছে ১-৫ হেরে। গত চার বছরে তিন বার রানার্স আর এক বার তৃতীয়। সেখানে এক ধাক্কায় এত বড় অঘটন ঘটে যাবে, একেবারেই বোঝা যায়নি।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী যেখানে সাফল্যের চূড়ায় অপেক্ষায়, তার আগের দিনই লাল-হলুদের ব্যর্থতার অতল দেখে ফুটবলারদেরই দায়ী করছেন প্রাক্তনরা। ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে সমরেশ চৌধুরী এতটাই ক্ষুব্ধ যে, বলেই ফেললেন, ‘‘কে বলেছে ইস্টবেঙ্গল হেরেছে? লজ্জা, ঘৃণা, ভয়—তিনটেকেই তো জয় করেছে ওরা। আমাদের সময় হেঁটে বাজারে যেতাম। বাসে-ট্রেনে চেপে অফিস করতাম। তাই সাধারণ মানুষের অপমানও সরাসরি সহ্য করতে হত। এখনও মনে আছে, একটা ম্যাচ হেরে দু’দিন বাজারে যেতে পারিনি বলে বাসি খাবার খেয়ে থেকেছি। সেখানে আমাদের ক্লাবের এখনকার রাজপুত্ররা তো গাড়ি থেকে মাটিতে পা-ই রাখে না। সমর্থকদের আবেগ বুঝবে কী করে! টাকাই লজ্জা ঢেকে দিয়েছে।’’

Advertisement

আই লিগে এই নিয়ে তিন বার পাঁচ গোলের লজ্জায় মুখ ঢাকতে হল ইস্টবেঙ্গলকে। ২০০৭-এ ডেম্পোর কাছে ৫-৩। দু’বছর পরে মোহনবাগানের কাছেও ৫-৩। কিন্তু সেই সবকেও ছাপিয়ে শনিবার শিলংয়ে লাজং এফসির কাছে ১-৫ হার বেশি লজ্জার! কেন না অবনমনের লড়াইয়ে থাকা একটা টিমের সামনে অর্ণব-র‌্যান্টিদের অসহায় আত্মসমর্পণ যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ। লাল-হলুদের আর এক কিংবদন্তি শ্যাম থাপা রাতে বলছিলেন, ‘‘কোচ নয়, সব দোষ দেব ফুটবলারদের। শুধু টাকা নেওয়ার বেলায় আছে। পারফরম্যান্স শূন্য। এই লজ্জার জন্য কর্মকর্তারাও সমান দায়ী। কর্তাদের এখন বিদেশি ফুটবলাররা নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্লাবের মেরুদণ্ড শক্ত থাকলে সবার মাইনে কেটে নিক দেখি। তার জন্য মামলা হলে হবে। এই ইস্টবেঙ্গল টিম যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে চার পাশে, এ বার আমরাই না কোনও দিন জনতার চড়-থাপ্পড় খেয়ে যাই।’’

কিন্তু বাস্তব হল—লাল-হলুদ কর্তারা এই টিমের বেশিরভাগ ফুটবলারের সঙ্গেই যে আগাম চুক্তি সেরে ফেলেছেন!

আই লিগে লাল-হলুদের লজ্জা

লাজং ৫-১ (শিলং, ২০১৫)

বাগান ৫-৩ (যুবভারতী, ২০০৯)

ডেম্পো ৫-৩ (মারগাও, ২০০৭)

তথ্য হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন