সিন্ধুজা রেড্ডি। ছবি: সংগৃহীত।
তেলঙ্গানার ধুধু গ্রাম থেকে সুদূর আমেরিকা। রাস্তাটা নেহাৎ কম নয়। বিয়ের পর স্বামীর হাত ধরে সেই পথই পাড়ি দিয়েছিলেন সিন্ধুজা রেড্ডি। চোখে ছিল একরাশ স্বপ্ন। ছিল সংশয়ও। বিদেশ-বিভুঁইয়ে সত্যিই যদি হারিয়ে যায় প্রাণের খেলাটা!
না, তেমনটা হয়নি। জমিয়ে সংসার সাজানোর পাশাপাশি মনের কোণায় টিম টিম করে জ্বালিয়ে রাখা ক্রিকেট তাঁকে যে এ ভাবে সাজিয়ে দেবে, তা ভাবতেও পারেননি বছর ছাব্বিশের সিন্ধুজা। তাঁর কাছে তাই এই সময়টা একেবারে অন্য রকম। প্রাপ্তিটাও এক্কেবারে আলাদা! উইকেট কিপার সিন্ধুজাকে এ বার খেলতে দেখা যাবে ইউএসএ মহিলা ক্রিকেট দলের হয়ে।
আরও খবর: মহিলা বিশ্বকাপে প্রথম ‘ডিআরএস’এই সফল ভারতীয় মেয়েরা
এ দেশে থাকার সময়, বিয়ের আগে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন। অন্য অনেক ক্রিকেটারদের মতো পড়াশোনা ফেলে শুধুই খেলে গিয়েছেন, এমনটা নয়। তাঁর নামের পাশে রয়েছে বি টেক, এমবিএ। হায়দরাবাদ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে সিন্ধুজা যখন খেলছিলেন, কিন্তু তখনও ভাবেননি কখনও জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন! এর পরেই বিয়ে হয়ে যায় প্রবাসী সিদ্ধার্থ রেড্ডির সঙ্গে। এ দেশে ক্রিকেট খেলার মায়া ছেড়ে চলে যান আমেরিকায়। সঙ্গে ছিলেন জীবনসঙ্গী। তাই হয়তো নিজের প্রিয় ক্রিকেটে ডুবে যাওয়া একটু সহজ হয়েছিল।
স্বামীর সঙ্গে বিদেশে গিয়ে সংসারের পাশাপাশি মাঝে মাঝে ব্যাট হাতে তাই নেমে পড়তেন আসপাশের ক্লাবে। সেখানেই তাঁর উপর নজর পড়ে ইউএস জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচকদের। এ বার তিনি খেলবেন ‘আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২০’-র যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বে। আমেরিকার জার্সিতে তেলঙ্গানার মেয়েকে দেখা যাবে বিশ্ব ক্রিকেট দরবারে।
আগামী অগস্টে স্কটল্যান্ডে বসতে চলেছে টি২০ বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বের আসর। তার আগে এখন শুধুই নিজেকে তৈরি করে নেওয়া। বিরাট এই ইভেন্টে কখনও অংশ নেবেন, স্বপ্নেও ভাবেননি। সিন্ধুজার এই খবরে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তেলঙ্গনার নালগোন্দা জেলার আমাঙ্গাল গ্রাম। ওখানেই তো থাকতেন সিন্ধুজা। ক্রিকেট নিয়ে কতটা পাগলামো ছিল তাঁর মেয়ের মধ্যে, সে কথা জানিয়েছেন সিন্ধুজার বাবা। জানান, ক্রিকেট ছাড়তে হবে ভেবে হতাশ হয়ে পড়েছিল সিন্ধুজা। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের জয় হল।
তাই, আনন্দে ভাসছে সুদূর আমেরিকা থেকে তেলঙ্গানার সেই ধুধু গ্রাম!