চোট নিয়ে চিন্তা থাকলেও প্র্যাক্টিসে হাসিখুশি সনি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
যুদ্ধের আগে মোহনবাগানে উৎকণ্ঠা। ডিএসকে শিবাজিয়ান্স শিবিরে চরম সতর্কতা।
মোহনবাগানে উৎকণ্ঠার কারণ অবশ্যই সনি নর্দে। আর প্রতিপক্ষের শিবিরে স্ট্র্যাটেজি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা শিবাজিয়ান্সে!
শুক্রবার সকালে বাঁ হাটুতে স্ট্র্যাপ জড়িয়ে সনিকে মাঠে নামতে দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। ফের শুরু হয়ে যায় জল্পনা। ড্যারেল ডাফি, এদুয়ার্দো পাহিরা, প্রণয় হালদার ও আনাস এথাদোডিকার সঙ্গে সনিকে দৌড়তে দেখেও আশ্বস্ত হতে পারেননি ভক্তরা। বরং উদ্বেগ আরও বেড়ে যায় যখন ওয়ার্ম-আপ শেষ করে ফিজিক্যাল ট্রেনার গার্সিয়া মিরান্দা ও ফিজিওথেরাপিস্ট অভিনন্দন চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে নিয়ে আলাদা ভাবে অনুশীলন শুরু করেন নর্দে।
তাহলে কি ম্যাচ খেলার মতো সুস্থ নন তিনি? প্র্যাক্টিস শেষ হওয়ার পর সনির দাবি, তিনি খেলবেন। সবুজ-মেরুন তারকা বললেন, ‘‘এই ম্যাচটা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর ওপরেই নির্ভর করছে আমার ভবিষ্যৎ। খেলতে গিয়ে যদি আবার ব্যথা হয়, তাহলে অস্ত্রোপচার করাতে মুম্বই যাব।’’ তাহলে এত ঝুঁকি নিচ্ছেন কেন? ফের চোট লাগলে বা অস্ত্রোপচার হলে তো এই মরসুমে মাঠে নামাই কঠিন হয়ে যাবে। সনি বললেন, ‘‘এই ধরনের অস্ত্রোপচারের পর মাত্র দু’সপ্তাহ লাগে মাঠে ফিরতে। তাই দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘ব্যথা না বাড়লে তো কোনও সমস্যাই নেই। অস্ত্রোপচারও করাতে হবে না।’’
সনির আশ্বাসবাণীতেও সবুজ-মেরুন সমর্থকদের রক্তচাপ কমছে না। প্রথম লেগে শিবাজিয়ান্সের বিরুদ্ধে ড্র করে পুণে থেকে ফিরেছিল মোহনবাগান। সেই ম্যাচে নির্মল ছেত্রী একাই আটকে দিয়েছিলেন দুরন্ত ছন্দে থাকা সনিকে। এবার তো তিনি আহত। সাংবাদিক বৈঠকে মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন বলছেন, ‘‘সনি আমাদের অন্যতম প্রধান ফুটবলার। শনিবার খেলবেও। কিন্তু ওকে ছাড়াও অনেক ম্যাচ জিতেছি।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, এই মুহূর্তে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না। বললেন, ‘‘এটা আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে জিততেই হবে।’’ আর ডাফি বলে গেলেন, ‘‘প্রথম লেগে ওরা রক্ষণাত্মক খেলে আমাদের আটকে দিয়েছিল। এই ম্যাচেও মনে হয় না স্ট্র্যাটেজি বদলাবে।’’ ডার্বি দেখে ফেরার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত সবুজ-মেরুন সমর্থক সৌম্য মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে নীরবতা পালন করবেন সনিরা। আর সৌম্যর ছবি দেওয়া জার্সি পরে ওয়ার্ম-আপ করবেন শিবাজিয়ান্সের ফুটবলাররা।
তবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাদের স্ট্র্যাটেজি যে কী হবে, সেটাই এখন রহস্য। প্রতিপক্ষ তাঁর যাবতীয় পরিকল্পনা জেনে যাবে এই আতঙ্কে সুব্রত পাল, সঞ্জু প্রধানদের শুক্রবার প্র্যাক্টিসই করালেন না কোচ ডেভ রজার্স। এমনকী, সাংবাদিক বৈঠকেও আসেননি তিনি। আই লিগের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুনন্দ ধর সব শুনে বললেন, ‘‘সাংবাদিক বৈঠকে না এলে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা জরিমানা হয় সংশ্লিষ্ট ক্লাবের। এ ছাড়া নির্বাসিত করা হতে পারে কোচকে। তবে পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করছে ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্টের ওপর।’’
রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে বল গড়ানোর আগেই নাটক জমে উঠেছে!
আজ আই লিগে
মোহনবাগান বনাম ডিএসকে শিবাজিয়ান্স এফসি (রবীন্দ্র সরোবর, বিকেল ৪.৩৫)