চিংড়ি রাঁধব, খাব, উৎসব করব

আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার। ‘ফাইনালের’ ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। মোহনবাগানের ঐতিহাসিক আই লিগ জয়ের আগে মোট সাতটা আই লিগ ক্লাবে খেলে তিনটে ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। তাই কখনও আবেগে ভেসে গেলেন। কখনও টাইম মেশিনে চড়ে স্মৃতির সরণিতে। সোমবার রাতে বেলো রজ্জাক দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার। ‘ফাইনালের’ ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। মোহনবাগানের ঐতিহাসিক আই লিগ জয়ের আগে মোট সাতটা আই লিগ ক্লাবে খেলে তিনটে ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। তাই কখনও আবেগে ভেসে গেলেন। কখনও টাইম মেশিনে চড়ে স্মৃতির সরণিতে। সোমবার রাতে বেলো রজ্জাক দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০৩:০২
Share:

ম্যাচের সেরা আর সেরা ডিফেন্ডারের ট্রফির একটা তুলে দিলেন সচিবের হাতে। অন্যটা ফুটবল সচিবকে। সোমবার বাগান নায়ক। ছবি: প্রীতম সাহা।

আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার। ‘ফাইনালের’ ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। মোহনবাগানের ঐতিহাসিক আই লিগ জয়ের আগে মোট সাতটা আই লিগ ক্লাবে খেলে তিনটে ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। তাই কখনও আবেগে ভেসে গেলেন। কখনও টাইম মেশিনে চড়ে স্মৃতির সরণিতে। সোমবার রাতে বেলো রজ্জাক দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।
প্রশ্ন: চোদ্দো বছর তপস্যার ফল পেলেন অবশেষে?
বেলো: উফ! (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) ভেরি লং জার্নি। ভারতে প্রথম যখন আসি তখন ভাবিনি এত বছর এখানে টিকে থাকতে পারব।

Advertisement

প্র: তা হলে কি এ বার বুট তুলে রাখার পালা?

বেলো: বিশ্রাম তো নিতে হবেই। তবে আমাকে নয়, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী টিমগুলোকে। নইলে পরের বার আবার লড়বে কী করে! বড় কোনও ট্রফি ছাড়াই এত দিন খেলছিলাম। আই লিগ জেতার পর মনে হচ্ছে আরও চোদ্দো বছর খেলে দেব।

Advertisement

প্র: মোহনবাগানেই খেলবেন?

বেলো: এখনও পর্যন্ত সেটাই ঠিক আছে। যদি না কোনও অঘটন হয়! এই ক্লাব আমাকে সবচেয়ে বড় ট্রফিটা দিয়েছে। অন্য কোথাও যাওয়ার আগে তাই কম করে দশ বার ভাবব।

প্র: পেশাদার ফুটবলার হয়ে এতটা আবেগী হয়ে উঠছেন...

বেলো: পেশাদার। পাষাণ নই। আজ দেখেছেন কী ভাবে সমর্থকদের ঢল নেমেছিল নেমেছিল আমাদের জন্য। এত গরম। তবু এক বারও আমাদের নামে জয়ধ্বনি বন্ধ হয়নি। এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলাম।

প্র: চোদ্দো বছরে কখনও মনে হয়েছে, ফুটবল ছেড়ে দেব?

বেলো: ২০০৭-এ স্পোর্টিং ক্লুব ছাড়ার পরে এ রকম ভাবনা মাথায় এসেছিল। একটার পর একটা ব্যর্থতায় ভেঙে পড়েছিলাম। মনে হত এই পেশা আমার জন্য নয়। আমি ফুটবলের উপযুক্ত নই। ওই সময় তো প্রায় সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিলাম—চিরকালের জন্য নাইজিরিয়া ফিরে যাব।

প্র: তার পর?

বেলো: মহীন্দ্রা ইউনাইটেড নামে একটা বরদান পেলাম। আমার কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট বলতে পারেন। ওখানেই পুনর্জন্ম হয় আমার। আর এর জন্য ডেরেক পেরেরার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।

প্র: কেন?

বেলো: মহীন্দ্রা কোচ ডেরেক-ই প্রথম আবিষ্কার করেন যে, আমি প্রকৃত স্টপার। ওটাই আমার আসল জায়গা। তার আগে আমি লেফট ব্যাক খেলতাম।

প্র: ফুটবলার না হলে কী করতেন কখনও ভেবেছেন?

বেলো: টেবল টেনিস খেলতাম। ফুটবল আর টিটি একসঙ্গেই শুরু করেছিলাম ছোটবেলায়।

প্র: তা হলে ফুটবলার কেন?

বেলো: একা একা খেলতে ভাল লাগত না বলে। ফুটবল টিম গেম। সবাই মিলে খেলা যায়। জিতলে আনন্দ হারলে দুঃখ ভাগ করা যায়। মজাটাই আলাদা।

প্র: কিন্তু আমি তো শুনেছি, আপনি বেশি লোক পছন্দ করেন না?

বেলো: বন্ধুবান্ধবের বাইরে খুব একটা মিশতে পছন্দ করি না। তবে বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড়ের সময় আমিই নেতা। রান্না করা, নাচ, গান— সবের উদ্যোক্তা আমিই।

প্র: রান্নাও করতে পারেন?

বেলো: চিংড়ি আমার ফেভারিট। রাতে ট্রফি সেলিব্রেশন তো সেটা দিয়েই হবে।

সমর্থকদের স্যালুট বেলোর। সোমবার। ছবি উৎপল সরকার।

প্র: মালাইকারি নাকি?

বেলো: না-না, বাঙালি রান্না নয়। আমি মাছ-মাংস যাই রান্না করি নাইজিরিয়ান স্টাইলে করি। এখানকার রান্না খুব ঝাল হয়। আমি একেবারে ঝাল খেতে পারি না।

প্র: এ বারের আই লিগে আপনি একটাও কার্ড দেখেননি...

বেলো: আমি আগে বল দেখি, ম্যান দেখি না। আর সব সময় এক-দু’হাত দূরত্ব রেখে ট্যাকল করি। এক জন স্টপার হল গাড়ির ড্রাইভারের মতো। আগে থেকে ছকে নিতে হয়, সামনের গাড়িটাকে কতটা গ্যাপ রেখে ওভারটেক করতে হবে।

প্র: চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে র‌্যান্টি-ডুডুরা শুভেচ্ছা জানালেন?

বেলো: মেসেজ করেছে। ফোনেও কথা হয়েছে। ডুডু এমনিতেই আমার খুব পুরোনো বন্ধু। লাগোসে আমরা একই পাড়ার ছেলে...ব্যাস, এ বার ছাড়ুন! সকাল থেকে ঘেমো জার্সিটা পরে আছি...।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন