ডন ব্র্যাডম্যান ব্যাটিং গড় ঠিক কত রেখে কেরিয়ার শেষ করেছিলেন, সেটা গোটা ক্রিকেটপৃথিবী জানে। সঙ্গে এটাও জানে, ওই গড় কোনও ব্যাটসম্যানের পক্ষে ছোঁয়া সম্ভব হবে না।
না, স্টিভ স্মিথ পারেননি। কিন্তু গত ক্রিকেট মরসুমে টেস্ট এবং ওয়ান ডে-তে যে গড়টা তিনি রেখেছিলেন, তা ব্র্যাডম্যানের অবিস্মরণীয় রেকর্ডকে ছুঁতে না পারলেও খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। অন্তত এক মরসুমের জন্য হলেও।
৯৩!
এবং ব্যাটিং গড় দেখে যদি আশ্চর্য লাগে, তা হলে সেই ব্যাটিং-উচ্চতায় পৌঁছনোর কাহিনি সমান রোমাঞ্চকর। যে উচ্চতা স্মিথকে এখন বিশ্বকাপের ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বর জায়গাটা দিয়ে দিয়েছে। বাকি পৃথিবীকে বাদই রাখা গেল। স্মিথের টিমমেটররাই তো তাঁর স্টান্স দেখে আঁতকে উঠেছিলেন!
লেগ স্টাম্প গার্ড নেওয়ার জন্য আম্পায়ারকে জিজ্ঝেস করছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিচ্ছেন লেগ স্টাম্প থেকে আরও কিছুটা সরে! শ্রীলঙ্কা ম্যাচে তো অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক তো স্মিথের রকমসকম দেখে তাঁকে জিজ্ঞেসই করে বসেন, মেট হচ্ছেটা কী?
“আসলে ও ভাবে স্টান্স নিলে বল হিট করার সময় যে জায়গাটায় আমি পৌঁছতে চাই, সেখানে পৌঁছতে পারছি। লেগ স্টাম্প গার্ড চেয়ে আমি দাঁড়াচ্ছি আরও একটু দূরে। আরও কিছুটা লেগের দিকে সরে। অনেককেই যেটা দিয়ে বোকা বানানো গিয়েছে। পাপ (ক্লার্ক) তো আমাকে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে সব দেখে জিজ্ঞেসই করে বসল, এটা কী হচ্ছে?” অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে নিজের সাফল্য-রহস্য ফাঁস করে দিয়েছেন স্মিথ। মাঝে একটা সময় ফর্মের কিছুটা ভাঁটা চলছিল। স্মিথ যদিও মানেন না যে অফ ফর্মে চলে গিয়েছিলেন। বরং বলছেন, “গত গ্রীষ্মে টেস্টে নিজের ব্যাটিং ফুটেজ দেখছিলাম। দেখলাম যে, লেগের দিকে আরও সরে যাচ্ছি। মাঝে হঠাৎ কোনও কারণে সেটা ভুলে গিয়ে আবার লেগ স্টাম্পের দিকে সরে আসছিলাম। যে কারণে একটু বেশিই অ্যাক্রস চলে যাচ্ছিলাম। তবে এখন যেখান থেকে নিজের ট্রিগার মুভমেন্টটা শুরু করতে চেয়েছিলাম, করতে পারছি।”
সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “কখনওই আমার মনে হয়নি ফর্ম চলে গিয়েছে। বলব, নিজের মুভমেন্ট নিয়ে সমস্যায় পড়ছিলাম। কিন্তু সেটা ফেরত এসেছে। নিজের ব্যাট সুইংটাও ফেরত এসেছে। তাই মনে হচ্ছে ভারতকে মাঠের বাইরে ফেলে দিতে আমার খুব অসুবিধে হবে না,” বলছেন বিশ্বকাপে শেষ তিনটে ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা স্টিভন স্মিথ।