মাস দুয়েক আগের ঘটনা। লাহলিতে আতঙ্কের বাইশ গজেও সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৯৯-এ আউট হয়ে ফিরতে হয়। যা নিয়ে তাঁর আফসোস বেশ কিছু দিন ছিল।
গত বার রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে রেলওয়েজের বিরুদ্ধে চার রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করাও তাঁর কাছে কম আফসোসের নয়।
এ বার কী হবে?
বঙ্গ ক্রিকেটের নতুন ব্যাটিং প্রতিভা সুদীপ চট্টোপাধ্যায় এ বার আর আগের দু’বারের মতো ভুল করবেন না বলেই ঠিক করে নিয়েছেন। সোমবার সকালে যখন চকচকে লাল বলটা হাতে তাঁর দিকে ছুটে আসবেন বিশ্বকাপে খেলে আসা মুনাফ পটেল, তখন আত্মরক্ষা করতে পারবেন তো?
প্রথম ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরি থেকে ন’রান দূরে। এই মরসুমে রঞ্জির প্রথম ম্যাচের প্রথম দিনই মাতিয়ে দিয়ে টিম হোটেলে ফিরে ২৩ বছরের সুদীপ জানিয়ে দিলেন, “কাল সকালে খুব সাবধানে ব্যাট করতে হবে। উইকেটটা ভাল। আশা করি আজকের মতো কালও সাহায্য পাব। উইকেটে থেকে দলকে যথাসম্ভব বেশি রান দেওয়াটাই আসল লক্ষ্য। সেঞ্চুরিটা পরের ব্যাপার। এলে ভালই লাগবে।” আর ক্যাপ্টেন লক্ষ্মীরতন শুক্লর আশা, “ও ফোকাসটা খুব ভাল রাখতে পারে। আশা করি এ বার সেঞ্চুরিটা করে ফেলতে পারবে।”
ব্যাটসম্যানরা বেশ ভাল শুরু করার পর বাংলা বরোদার বিরুদ্ধে প্রথম দিনের শেষে ২৫৫-৩। শ্রীবত্স গোস্বামীর সঙ্গে ১১১-র অপরাজিত পার্টনারশিপই যে বাংলার শেষ আশা, তা-ও না। লক্ষ্মী, শুভজিত্, সৌরাশিস প্যাড আপ করে নামার অপেক্ষায়। উইকেটে বাউন্স আছে বলেই জানালেন সবচেয়ে বেশি সময় বাইশ গজে কাটানো সুদীপ। ক্যাপ্টেন লক্ষ্মীও বললেন, “বেশ শক্ত উইকেট। সহজে ভাঙবে বলে মনে হচ্ছে না।” অর্থাত্ চেষ্টা করলে সোমবারও প্রচুর রান তুলতে পারে বাংলা। এমন উইকেটে মনোজ তিওয়ারির মাত্র সাত রানে এলবিডব্লু হয়ে ফিরে গেলেন, সেটাই যা আক্ষেপের। তার আগে অবশ্য ইউসুফকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠান একবার। কোচ অশোক মলহোত্র বললেন, “মুনাফ একেবারে নিখুঁত লাইন-লেংথ রেখে বলটা করেছিল মনোজকে।” এই স্পেলে মুনাফের বোলিং হিসাব ছিল ৫-৪-৪-১।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তটা যে সঠিক, তা শুরু থেকেই প্রমাণ করলেন বাংলার ব্যাটসম্যানরা। অরিন্দম দাসের সঙ্গে ৭৮-এর পার্টনারশিপ গড়ে অন্য ওপেনার রোহন বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে যান ৩৫-এ। অরিন্দম প্রথম শ্রেণির ২৩ নম্বর হাফ সেঞ্চুরিটা (৫৪) করে এর পর ফিরে যান। তার পর সুদীপ-শ্রীবত্সের ব্যাটিং-অভিযান শুরু। ২৫-এর মাথায় অবশ্য অরিন্দমের ক্যাচ পড়ে স্টাম্পের পিছনে। কিন্তু তার পর হাফসেঞ্চুরি করে চলে যান অরিন্দম। বাংলাকে রানের মাল্টিস্টোরিড সৃষ্টির ভিত তৈরি করে দিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলা ২৫৫-৩ (সুদীপ ৯১ ব্যাটিং, শ্রীবত্স ৬১ ব্যাটিং, অরিন্দম ৫৪, মুনাফ ১-৩২)।