সুপার কাপ নিয়ে ফেডারেশনকে দুষছেন সুনীল

সুপার কাপের ডামাডোলের জন্য সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এবং আই লিগের ক্লাব জোট, দু’পক্ষের বিরুদ্ধে সরব হলেন সুনীল ছেত্রী। 

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৩
Share:

সুপার কাপের ডামাডোলের জন্য সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এবং আই লিগের ক্লাব জোট, দু’পক্ষের বিরুদ্ধে সরব হলেন সুনীল ছেত্রী।

Advertisement

ফেডারেশেনের বিরুদ্ধে ভারত অধিনায়কের অভিযোগ, ‘‘সুপার কাপ শুরুর আগেই ক্লাব জোটের চিঠি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত ছিল ফেডারেশনের। সমস্যার সমাধান করার দরকার ছিল। তা হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।’’ পাশাপাশি বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে ক্লাব জোটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ জানিয়েছেন সুনীল, ‘‘ক্লাবগুলির প্রতিযোগিতা বয়কট করার সিদ্ধান্তও খুবই দুর্ভাগ্যজনক। দুঃখেরও। আমার ফুটবলার জীবনে কখনও এ রকম পরিস্থিতি দেখিনি। ক্লাবগুলির দাবির কিছু যুক্তি নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তা বলে একটা প্রতিযোগিতা বয়কট করা হবে কেন? অন্য রাস্তা খোঁজা উচিত ছিল।’’

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেঙ্গালুরু এফসি। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে সুনীল ছেত্রীদের ক্লাবই একমাত্র দল যারা দেশের সব খেতাব জিতেছে। প্রতিটি জয়ী দলেই ছিলেন সুনীল। অধিনায়ক হিসেবে এ বার আইএসএল জেতার পর সুপার কাপ জয়ই আপাতত লক্ষ্য তাঁর। সে জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন জোরকদমে। কিন্তু প্রথম ম্যাচই তো সুনীলরা ওয়াকওভার পেতে চলেছেন। কারণ বেঙ্গালুরুর প্রতিপক্ষ মোহনবাগান কাপ বয়কট করে বসে আছে। কোনও ফুটবলারের নামও নথিভুক্ত করায়নি। সুনীল বললেন, ‘‘কী বিশ্রী অবস্থা! আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি মোহনবাগানকে হারানোর জন্য। আর ওরা শুনছি দলই নামাচ্ছে না। সনি নর্দেরা আবার অনুশীলনও করছে। অথচ খেলার সুযোগ পাবে না ওরা। অদ্ভুত অবস্থা। ফেডারেশন এবং ক্লাবের মাঝে পড়ে ফুটবলাররাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারাও তো আমাদের মতো মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন খেলার জন্য। আমরাও জিতে পরের পর্বে যেতে চাই।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘সুপার কাপই করা হয়েছিল আইএসএল এবং আই লিগের ক্লাবগুলির শক্তি যাচাইয়ের জন্য। আই লিগের সাত-আটটা ক্লাবই যদি না খেলে, তা হলে প্রতিযোগিতার লক্ষ্যটাই তো মাটি হয়ে যাবে।’’

Advertisement

পরের মরসুমে ভারতীয় ফুটবলের রূপরেখা কী হবে তা জানতে চেয়ে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছিল আই লিগের ক্লাবগুলি। নয় দলের জোটের দাবি ছিল, একটাই লিগ হোক এবং সেটা কুড়ি দলের। সুনীলের এতে আংশিক সমর্থন আছে। দেশের জার্সিতে ৬৭টি গোল করে ফেলা বিরাট কোহালির বন্ধু বললেন, ‘‘আমি চাই দেশে একটাই লিগ হোক। সেখানে ওঠা, নামা থাকুক। প্রতিযোগিতার নাম যাই হোক, আপত্তি নেই। তবে দশের বেশি দল খেলুক নতুন লিগে। যত বেশি দল খেলবে ততই ভাল। সেটা কুড়ি হতে পারে, সতেরো বা আঠারোও হতে পারে। যাদের যোগ্যতা আছে তারাই খেলার সুযোগ পাক দেশের সেরা লিগে। এতে ফুটবলাররা বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।’’

তবে ভারতীয় ফুটবলের পোস্টারবয় চান না আই লিগ এবং আইএসএলের সব দলই দেশের এক নম্বরে লিগে খেলুক। ক্লাব জোটের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর ফর্মুলা, ‘‘আমাদের বেঙ্গালুরু আই লিগ থেকে আইএসএলে গিয়েছে। অনেক মাপকাঠি পূরণ করতে হয়েছে এ জন্য। আই লিগে এখন যে দলগুলি আছে সেই দলগুলির কি সেই মাপকাঠি পূরণের ক্ষমতা আছে? তাই আমি চাই লিগের দল বাড়ুক, কিন্তু তাতে যেন মানের অবনতি না হয়।’’

সুনীল নিজে চারটি আই লিগ এবং একটি আইএসএল জিতেছেন? কোনটা জিতে বেশি আনন্দ পেয়েছেন? দেশের এক নম্বর স্ট্রাইকার সতর্ক। বললেন, ‘‘দু’টো প্রতিযোগিতার কোনও তুলনা হয় না। তবে তিনটি দলের জার্সিতে চারটি আই লিগ পেয়েছি বলে আই লিগ জিতেই আনন্দই বেশি পেয়েছি।’’

স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের জায়গায় নতুন জাতীয় কোচ চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে ফেডারেশন। ২৯ মার্চ আবেদনের শেষ তারিখ। শোনা যাচ্ছে, সুনীলের পছন্দ বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন স্প্যানিশ কোচ আলবার্তো রোকা। যাঁর সঙ্গে ফেডারেশন কথাও বলেছে বলে খবর। সুনীল সেটা মানতে চাইলেন না। বললেন, ‘‘কোচ নির্বাচনের আগে আমার মত জানতে চাইলে আমি গোপনে সেটা ফেডারেশনকে বলে আসব। তবে জানিয়ে রাখি, আমার সঙ্গে শুধু রোকা নয়, অ্যাশলে ওয়েস্টউড, বর্তমান কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত—সবারই সম্পর্ক ভাল। যা বলা হচ্ছে সেটা রটনা।’’ তা হলে এই তিনজনই কি আবেদন করছেন দেশের জাতীয় কোচ হওয়ার জন্য? হেসে ফেলেন সুনীল। বলে দেন, ‘‘সেটা আমি জানব কী করে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন