আক্রমণ: মুম্বইয়ের রক্ষণে হানা আমনার। ছবি: এআইএফএফ
মুম্বই সিটি ১ : ইস্টবেঙ্গল ২
জয়ের গোল করার পরে মহম্মদ আল আমনা দুটো হাত ঝাঁকিয়ে নিজেকেই যেন উদ্বুদ্ধ করলেন। তারপর দৌড়ে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের ঘাসে মাথা ছোঁয়ালেন। তাঁর পিছন পিছন দৌড়ে এসে ডুডু ওমাগবেমি, লালডানমাওয়াইয়া রালতে-রাও আমনাকে একবার ছুঁয়ে নিলেন। তারপর একসঙ্গে মাটিতে মাথা ঠেকালেন। সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল যে চাপে ছিল, সেটা বোঝা গেল এ সব দৃশ্য দেখেই। কলকাতার মাঠে খেলা থাকলে দর্শক হয় না। অথচ কী আশ্চর্য, ভুবনেশ্বরের মাঠে কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে হাজির ছিলেন প্রচুর লাল-হলুদ সমর্থক। আমনার গোলের পর তাঁদের নাচতে দেখা গেল গ্যালারিতে।
প্রথমার্ধের মাঝামাঝি পিছিয়ে পড়েও পাল্টা জোড়া গোল করে সুপার কাপের শেষ আটে উঠল ইস্টবেঙ্গল। জয়ের নায়ক ফের আমনা। যদিও ম্যাচের আগে তাঁকে নিয়ে উদ্বেগ ছিল লাল-হলুদের শিবিরে। কারণ, তিনি খালিদ জামিলের ঘনিষ্ঠ। সুভাষ ভৌমিক-কে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) হিসেবে কোচ খালিদের মাথায় বসিয়ে দেওয়ার পর আমনা মাঠে কী ভূমিকা নেন তা নিয়েই ছিল সংশয়। ম্যাচের পরে ভুবনেশ্বরে ফোনে ধরা হলে সুভাষ ভৌমিক বললেন, ‘‘মুম্বই সে ভাবে খেলতেই পারিনি। বিক্ষিপ্ত দু’একটা আক্রমণ তুলে এনেছে শুধু। সংঘবদ্ধ ফুটবল খেলছে ইস্টবেঙ্গল।’’ সামাদ আলি মল্লিক ও রালতের প্রশংসাও শোনা যায় টিডি-র মুখে।
ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দুই বিদেশি নিয়ে মাঠে নেমেছিল ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ক্লাব মুম্বই সিটি। তাদেরই এক জন আচিলে এমানার দুর্দান্ত ফ্রি-কিক থেকে করা গোলে এগিয়ে যায় মুম্বই। ১-০ ফল অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মিনিটের মধ্যেই রালতের পাস থেকে সমতা ফেরান কাতসুমি ইউসা। বিরতিতে ফল ছিল ১-১। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণের ঝড় তোলে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম গোলের মতো আমনার গোলের ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান রালতের। তাঁর ডান প্রান্ত দিয়ে উঠে গিয়ে নেওয়া শট ফেরান মুম্বই গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংহ। ফিরতি বলে দৌড়ে এসে শট করেন আমনা।
ডুডু-কে সামনে রেখে ৪-২-৩-১ ছকে এ দিন দল নামিয়েছিলেন সুভাষ-খালিদ জুটি। তবে নতুন বিদেশি খালিদ আউচো ছিলেন দুই স্টপারের সামনে ব্লকার হিসেবে। তা সত্ত্বেও বলবন্ত সিংহ, শেহনাজ সিংহ-রা ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন। অভিষেক ম্যাচে নজর কাড়তে ব্যর্থ আউচো। এই পরিস্থিতিতে প্রবল চাপে মেজাজ হারিয়ে মুম্বইয়ের জাকির মুন্ডামপাড়ার সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন লাল-হলুদ ডিফেন্ডার গুরবিন্দর সিংহ। রেফারি অবশ্য কাউকে কার্ড দেখাননি। রবিবার কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ আইজল এফসি।
ইস্টবেঙ্গল: উবেইদ, সামাদ আলি মল্লিক, এদুয়ার্দো ফেরিরা, গুরবিন্দর সিংহ, লালরাম চুলোভা, মহম্মদ আল আমনা, ইউসা কাতসুমি, খালিদ আউচো, কেভিন লোবো, লালডানমাওয়াইয়া রালতে ও ডুডু ওমাগবেমি।