আদালতের দুপুর, ক্রিকেটের বিকেল

টেস্টের ভবিষ্যৎ বাজি রেখে লেনদেনের ছাড়পত্র আদায় বোর্ডের

বিরাট কোহালিরা রাজকোটের মাঠে নামার আগেই মাঠের বাইরের যুদ্ধে আপাতত এগিয়ে গেল তাঁদের বোর্ড। যেখানে প্রতিপক্ষ বিচারপতি লোঢা কমিটি। আর আম্পায়ার সুপ্রিম কোর্ট। দিনভর নাটকের পর মঙ্গলবার দিনের শেষে সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে প্রথম টেস্টের জন্য ৫৮ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমতি আদায় করে নিল বিসিসিআই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:২৩
Share:

বিরাট কোহালিরা রাজকোটের মাঠে নামার আগেই মাঠের বাইরের যুদ্ধে আপাতত এগিয়ে গেল তাঁদের বোর্ড। যেখানে প্রতিপক্ষ বিচারপতি লোঢা কমিটি। আর আম্পায়ার সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

দিনভর নাটকের পর মঙ্গলবার দিনের শেষে সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে প্রথম টেস্টের জন্য ৫৮ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমতি আদায় করে নিল বিসিসিআই। যে রাস্তা একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, শর্তসাপেক্ষে হলেও সেই রাস্তা কিন্তু বোর্ডের সামনে ফের খুলে দিল আদালত।

যদিও আয়োজক রাজ্য সংস্থাকে না দিয়ে সরাসরি সংশ্লিষ্ট পার্টিকে এই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর এ ভাবেই পরের দুটো টেস্টেও প্রয়োজনীয় খরচ করতে পারবে বোর্ড। কিন্তু তার অঙ্ক নির্ধারণ করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটা টিম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লোঢা কমিটিকে। যে টিমের পেশাদারদের পারিশ্রমিক বোর্ডকেই দিতে হবে। খরচের হিসাবও তাঁদের কাছেই পেশ করতে হবে।

Advertisement

টেস্ট সিরিজ শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগেই প্রথম টেস্ট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় বোর্ড। এই ‘প্রেশার ট্যাকটিক’-এই প্রথম তিন টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডের ছাড়পত্র বার করে নিল বোর্ড। যে ঘটনাকে কার্যত অনুরাগ ঠাকুরদের নৈতিক জয় বলে মনে করছে আইন মহল।

আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ব্যবস্থা। অর্থাৎ প্রথম তিন টেস্টের জন্য। ৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানিতে পরের ম্যাচগুলোর ভবিষ্যৎ ঠিক হবে। কিন্তু এ দিন আদালত বলে দিল, আইপিএলের মহার্ঘ্য টিভি-চুক্তি দশ বছরের জন্য হয়তো চূড়ান্ত হয়ে যাবে আগামী দশ দিনের মধ্যে। এবং সে-ও লোঢা নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে। বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে তাঁরাও খতিয়ে দেখবেন সব টেন্ডার। পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকবেন বিচারপতি লোঢা ও তাঁর দলবল।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত যেখানে বলেই দিয়েছিল, লোঢা সুপারিশ কার্যকর করার দিকে বোর্ড কী ভাবে এগোচ্ছে, তার রিপোর্ট জমা না দেওয়া পর্যন্ত তাদের আর্থিক লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হবে না। রাজ্য সংস্থাগুলো সুপারিশ মানার লিখিত প্রতিশ্রুতি না দিলে তাদের বোর্ড কোনও আর্থিক অনুদানও দিতে পারবে না। সেখানে সিরিজের জন্য আর্থিক ব্যয়ের অনুমতি আদায় করাটা বোর্ডেরই জয় বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

মঙ্গলবার সকালে আদালতে বোর্ডের কৌঁসুলি কপিল সিব্বল বিচারপতি এআর দাভে ও এএম খানউইলকরের কাছে জানিয়ে দেন, ‘‘যা পরিস্থিতি, তাতে আর্থিক ব্যয়ের অনুমতি বিসিসিআই-কে যদি না দেওয়া হয় , তা হলে বুধবার থেকে রাজকোটে টেস্ট শুরু করা যাবে না।’’

লোঢা প্যানেলের কৌঁসুলি বিচারকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ না করে বোর্ড ইতিমধ্যেই আদালত অবমাননা করেছে। সিব্বল আবার পাল্টা দেন, ‘‘আদালত অবমাননার অভিযোগ আপনারা তুলতে পারেন। কিন্তু তাই বলে তো আর ম্যাচটা বন্ধ হতে দেওয়া যায় না।’’ বিচারপতি দাভে জানান, লাঞ্চে বিষয়টা নিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের সঙ্গে আলোচনা করে তার পর তিনি এই বিষয়টা আবার শুনবেন।

বুধবার রাজকোটে বল পড়বে, নাকি পড়বে না, তার ভাগ্য তখনও ঝুলে সুপ্রিম কোর্টে। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরতি শুনানিতে যার নিষ্পত্তি হয়। তখনও একই অবস্থানে ছিলেন বোর্ডের কৌঁসুলি সিব্বল। ‘ফান্ড রিলিজ’-এর অনুমতি না দিলে যে কিছুতেই ম্যাচ শুরু করা যাবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। এর মধ্যে অবশ্য বারবার বোর্ডকে অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন লোঢা কমিটির কৌঁসুলি। এমনকী কমিটির সম্পর্কে কতটা আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন বোর্ডের শীর্ষকর্তারা, তাও বিচারপতিদের সামনে তুলে ধরা হয়। কিন্তু বিচারপতিরা জানান, ম্যাচ হওয়ার চেয়ে কোনও কিছুই বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই বিকল্প রাস্তা তৈরি করে দিয়েই বোর্ডকে সেই রাস্তায় হাঁটার পরামর্শ দেন তাঁরা। যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement