বিরাট-লাফ: ওয়ান্ডারার্সে টেস্ট জেতার পরে কোহালি বাহিনী। শনিবার জোহানেসবার্গে। ছবি: রয়টার্স।
কী বলা যায় একে? হার না-মানা হার? সিরিজ গিয়েছে। কিন্তু শেষ টেস্টে কঠিনতম পরিস্থিতিতে জিতে সম্মান অক্ষত রাখল বিরাট কোহালির দল।
নতুন এই ওয়ান্ডারার্স মাঠ এমনিতেই ভারতের খুব পয়া। কখনও এখানে টেস্ট হারেনি। পঁচিশ বছরের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যে দু’টো টেস্ট জয় আছে, তার একটা ছিল এখানে। শনিবার সংখ্যাটা দুই হয়ে গেল।
স্টেডিয়ামের ভিতরে নানা ব্লক দিয়ে হাঁটতে গিয়ে খটকা লাগবে, কোথায় এসেছি? ওয়ান্ডারার্স না ওয়াংখেড়ে? এ দিন মাঠে অন্তত সত্তর শতাংশ দর্শক ছিলেন ভারতীয়। নানা নাটক, বিতর্ক, আশা-আশঙ্কার দোলাচল কাটিয়ে টেস্ট জয়ের পরে কোহালিদের টিম বাসের সামনে তাঁরা তেরঙ্গা পতাকা দোলাচ্ছেন। সকলের একটাই কথা— সিরিজটা দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে। আমরাও হারিনি।
৬৩ রানে জয়ী ভারত
ম্যাচের সেরা ভুবনেশ্বর কুমার
ওয়ান্ডারার্সের পিচ নিয়ে তুলকালাম চলছিল। মাইকেল হোল্ডিং থেকে সুনীল গাওস্কর— প্রত্যেকে তোপ দেগেছেন। গত কাল ডিন এলগারের মাথায় বল লাগার পরেও ২০ মিনিট খেলা বাকি ছিল। কিন্তু ম্যাচ রেফারি সেখানেই খেলা স্থগিত করে দেন। বিরাটের সঙ্গে রবি শাস্ত্রীও চাপ রেখে যাচ্ছিলেন ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়ারদের উপরে। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, বিপজ্জনক পিচ বলে ম্যাচটাই না পরিত্যক্ত হয়ে যায়। ২৪১-এর টার্গেটকে অনেক বেশিই মনে হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: খেলা শুরু হচ্ছে না কেন, সরব বিরাট
কে জানত, এলগার এবং হাসিম আমলা ১১৯ রান যোগ করে সেটাকে খুব কাছের গ্রহে পরিণত করে দেবেন? শনিবার সকালে আবার অপ্রত্যাশিত ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। লাঞ্চ পর্যন্ত উইকেটই পড়েনি। এলগার এবং আমলা দারুণ খেলে দিচ্ছিলেন। পিচটা দেখেও মনে হচ্ছিল, রাতারাতি কোনও জাদুতে তার ‘রোগ’ সেরে গিয়েছে। কমেন্ট্রি বক্স থেকে বেরিয়ে শন পোলক পর্যন্ত বলে গেলেন, ‘‘কে ভেবেছিল, এমন হবে!’’
লর্ডসে তিন বছর আগে ঠিক এ রকমই হতাশার এক দুপুরে ত্রাতা হয়ে দেখা দিয়েছিলেন ইশান্ত শর্মা। ওয়ান্ডারার্সেও আমলাকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরালেন তিনিই। মহম্মদ শামি হয়তো পরে এসে পাঁচ উইকেট নিলেন। কিন্তু আমলা ও ডুপ্লেসি-কে ফিরিয়ে ইশান্তই আসল নায়ক। সহ-নায়ক? ডিভিলিয়ার্স-কে ফেরানো বুম বুম বুমরা।
বিপজ্জনক পিচে কোহালি, পূজারা, রাহানেদের ব্যাটিং মনে পড়িয়েছে গাওস্কর-যুগের ক্যারিবিয়ান সফরকে। নিজেদের দেশে গতির আগুনে পুড়িয়ে কোহালিদের ৩-০ হোয়াইটওয়াশ করে দু’বছর আগেকার ভারত সফরের বদলা নিতে চেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতীয় পেসারদের পাল্টা আগুনে নিজেরাই পুড়ে ছারখার হয়ে গেল তারা।