মনোরঞ্জনের হাতে এখন খালিদের ভাগ্য

খালিদের শেষ লাইনটাতেই জল্পনা বাড়ছিল। তার উপর কোচকে একা ফেলে রেখে পুরো টিম চলে গেছে দেখে হঠাৎ-ই রটে যায় তাঁর চাকরি যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৬
Share:

বিমর্ষ: ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল কোচ ও ম্যানেজার। নিজস্ব চিত্র

টিম বাস চলে গিয়েছে প্রায় এক ঘণ্টা আগে। খালিদ জামিল তখনও স্টেডিয়ামে ছাড়েননি। ড্রেসিংরুম ছেড়ে চলে এসেছেন মাঠের ভিতর। মিনার্ভা পঞ্জাব যে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেছিল, সেখানে এসে দাঁড়ালেন। রাতের অন্ধকারে কাকে যেন ফোন করে চলেছেন। দীর্ঘক্ষণ চলল সেই কথোপকথন। তারপর মাঠের ভিতর দিয়েই হেঁটে চলে গেলেন বারাসত স্টেডিয়ামের প্রধান গেটের দিকে। রাত সাতটা নাগাদ অন্ধকারে পা বাড়ালেন বাড়ির পথে।

Advertisement

এ দিন ম্যাচের পর তীব্র বিক্ষোভ, তাঁর বিরুদ্ধে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শোনা সত্ত্বেও তাতে গুরুত্ব দেননি খালিদ। বরং সরাসরিই বলে দেন, ‘‘ও সব হতেই পারে। আমি এ সব হবে জেনেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখানে কোচিং করতে এসেছি। আমি পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। কর্তারা আমার পাশে আছেন। তবে কাল কী হবে কেউ কি বলতে পারে?’’

খালিদের শেষ লাইনটাতেই জল্পনা বাড়ছিল। তার উপর কোচকে একা ফেলে রেখে পুরো টিম চলে গেছে দেখে হঠাৎ-ই রটে যায় তাঁর চাকরি যাচ্ছে। কিন্তু সেটা যে নয় তা কিছুক্ষণ পরেই পরিষ্কার হয়ে যায়। ক্লাব সূত্রে জানা যায়, খালিদকে সরানোর কোনও পরিকল্পনা আপাতত লাল-হলুদ কর্তাদের নেই। কর্তারা খালিদের রাখা না রাখার পুরো ব্যাপারটাই ছেড়ে দিয়েছেন টিমের ম্যানেজার কাম পরামর্শদাতা মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের উপর। তিনি যা বলবেন, তা-ই হবে। শীর্ষ কর্তারা সে রকমই বলছেন। যাঁর উপর খালিদের লাল-হলুদের কোচিং ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সেই মনোরঞ্জন রাতে অবশ্য কোচের পাশে দাঁড়িয়ে বলে দিলেন, ‘‘আর তো মাত্র ছ’টা ম্যাচ। লিগ টেবলে তিন নম্বরে আছি। আই লিগ জেতার সম্ভাবনা নেই। শেষ চারে থেকে সুপার কাপ জেতার চেষ্টা করতে হবে। এখন কোচ বদলে লাভ কী? বরং পরের টুনার্মেন্ট জেতার চেষ্টা করা যেতে পারে। আমি তো কোচ হয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে পারব না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট নষ্টে অগ্নিগর্ভ বারাসত স্টেডিয়াম

মনোরঞ্জনের কোচিং লাইসেন্স থাকলে হয়তো এ দিনই বিদায় হয়ে যেত খালিদের। লাল-হলুদ কোচের দল চালানো-সহ কিছু কাজে বেশির ভাগ কর্তাই বিরক্ত, ক্ষুব্ধও। কিন্তু তাঁদের হাতে মোহনবাগানের মতো কোনও শঙ্করলাল চক্রবর্তী নেই। যাঁকে সঞ্জয় সেনের মতো চাপ দিয়ে সরিয়ে বদলি হিসাবে আনা যেতে পারে। সে জন্যই বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলে বা খালিদ নিজে সরে না গেলে মরসুমটা শেষ করেই মুম্বইয়ের বিমান ধরবেন আইজলকে আই লিগ দেওয়া কোচ।

পড়শি ক্লাবের মতো কোচ না বদলালেও খালিদ জামিলের মুঠি কিন্তু আজ বুধবার থেকে আরও আলগা হচ্ছে। যা খবর তাতে আজ থেকে ডুডু ওমেগবেমি, আনসুমানা ক্রোমাদের অলিখিত কোচ হিসাবে দেখা যাবে মনোরঞ্জনকেই। দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার অবশ্য বললেন, ‘‘টিমটার রোগ কোথায় সেটা দেখতে চেয়েছিলাম। দেখেছি। গত চার দিনে পনেরো মিনিট নিজের মত দিয়েছি। এ বার টিমটা ভাল করে দেখতে হবে। নিজের মতো সংগঠন করতে হবে।’’ জানা গিয়েছে, লাল-হলুদ কর্তারা যে চিঠি মনোরঞ্জনকে দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, রক্ষণ সংগঠন দেখভাল করতে। দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার বললেন, ‘‘চিঠিটা আমি ফেরত দিয়েছি।’’ গত সাড়ে ছয় মাস যাঁকে পাত্তাই দিতেন না, সেই মনোরঞ্জনের অভিভাবকত্ব অবশ্য চাপে মেনে নিয়েছেন লাল-হলুদ কোচ। এ দিন বলেও দিলেন, ‘‘ওর সঙ্গে আগেও পরামর্শ নিতাম। এখনও নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন