পূর্বাঞ্চল তখন ১১৬-৫। ব্যাট হাতে ক্রিজে একসঙ্গে লড়াই শুরু করলেন মনোজ তিওয়ারি ও লক্ষ্মীরতন শুক্ল। এতক্ষণ পশ্চিমাঞ্চলের যে বোলাররা ব্যাটসম্যানদের কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন, সেই বোলারদেরই মনোজ-লক্ষ্মীর ব্যাটের দাপটে ‘ছেড়ে দে মা...’ অবস্থা। দু’জনে মিলে ৫০ বলে ৬৯ রান তুললেন। এর মধ্যে লক্ষ্মীর ব্যাটেই ঝড় উঠল বেশি। ৩১ বলে ৫৪। শ্রীকান্ত মুন্ধে তাঁকে এলবিডব্লু-র ফাঁদে না ফেললে হয়তো এই ঝড় আরও কিছুক্ষণ চলত। তবে মনোজের সাবলীল ব্যাটিং বিপন্ন পূর্বাঞ্চলকে দুশোর গণ্ডি পার করিয়ে দেয়। কিন্তু পূর্বাঞ্চল ৭৫ ওভারে ২৭৮-এ অল আউট। পাল্টা ব্যাট করতে নেমে দিনের শেষে পশ্চিমাঞ্চল ১০-০।
রোহতকের লাহলিতে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেস সহায়ক উইকেটে এ দিন সকালে টস জিতে প্রত্যাশিত ভাবেই পূর্বাঞ্চলকে ব্যাট করতে পাঠান পশ্চিমের অধিনায়ক চেতেশ্বর পূজারা। উদ্দেশ্য একটাই, বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের চটপট আউট করে দেওয়া। উদ্দেশ্যে বেশ কিছুটা সফলও হন ধবল কুলকার্নি (৩-৬২), ইউসুফ পাঠানরা (২-৫৫)। ১১৬-র মধ্যেই সৌরভ তিওয়ারি (১৬), ঋদ্ধিমান সাহা (৪)-সহ পাঁচ ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পরই লক্ষ্মীদের লড়াই শুরু হয়। লাহলি থেকে এ দিন ফোনে লক্ষ্মী বলেন, “কোনও প্ল্যান ছিল না। বোলারদের দাপট কমানোটাই তখন আমাদের প্রধান কাজ ছিল। সেই জন্যই ও রকম ব্যাট চালাতে হল।” ২৮ বলে পঞ্চাশে পৌঁছন লক্ষ্মী, যা দলীপের দ্রুততম ইনিংসগুলির তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে।
উল্টো দিকে মনোজ সাবলীল ব্যাটিং করে যান। ১৪০ বলে অপরাজিত সেঞ্চুরি করলেও তিনি বাউন্ডারির বাইরে থেকে অর্ধেকের বেশি, ৫২ রান অর্জন করেন। চারটি চার ও ছ’টি ছয়। অর্থাত্ বাকি ১৩০ বল থেকে খুচরো রানে বাকি ৪৮ তোলেন তিনি। নির্বাচকদের নজরে থাকা মনোজের এই সেঞ্চুরি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁকে আসন্ন টেস্ট সিরিজে ডাক পেতে সাহায্য করবে কি না, তা জানা নেই। তবে ২০১১-র ডিসেম্বরে এই একই মাঠে বাংলার হয়ে সেঞ্চুরি করা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মনে করেন, মনোজের ডাক পাওয়া উচিত। এ দিন ইডেনের ক্লাব হাউসে তিনি বলেন, “মনোজ অসাধারণ। আমি জানতাম, ও এমনই ইনিংস খেলবে। এখন ওর যা ফর্ম, তাতে ভারতীয় দলে ডাক পাওয়া উচিত।”
বাংলার তরুণ ব্যাটসম্যান সুদীপ চট্টোপাধ্যায় এ দিন তিন নম্বরে নেমে ৩৭ রান করেন, নটরাজ বেহরার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ যোগ করেন তিনি।
বাংলার ২৬: লক্ষ্মীরতন শুক্লকেই বাংলার নেতৃত্বের দায়িত্বে রেখে দিলেন নির্বাচকরা। রাজু মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচক কমিটি বুধবার ৩২ জন ক্রিকেটারের মধ্যে থেকে যে ২৬ জনকে সম্ভাব্য তালিকায় রাখলেন, তাতে লক্ষ্মীর সহ-অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। মহম্মদ শামির নাম নেই, কারণ, তিনি ভারতীয় দলের কর্তব্যে ব্যস্ত। সিনিয়রদের সঙ্গে দলে অভিলিন ঘোষ, অভিজিত্ সিংহ, সত্যব্রত মুর্মু, আমির গনি, কণিষ্ক শেঠ, শুভজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বেশ কয়েকজন জুনিয়রকেও রাখা হয়েছে।
আজ শুরু দেড়শোর উত্সব: আজ ইডেনের ইতিহাস নিয়ে লেখা রাজু মুখোপাধ্যায়ের বই উদ্বোধন দিয়ে শুরু হবে ইডেনে দেড়শো বছর পূর্তির উত্সব। বইটি উদ্বোধন করবেন দুই প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সেলিম দুরানি ও চাঁদু বোরডে। সোমবার ইডেনে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ান ডে-কে স্মরণীয় করে রাখতে অন্যান্য নানা পরিকল্পনার সঙ্গে ইডেনের ছাদে সার দিয়ে এলইডি টিভি লাগানোর পরিকল্পনাও হয়েছে বলে জানালেন যুগ্মসচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়। আইএসএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও এমন ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়াও ওই অনুষ্ঠানের ধাঁচে স্টেডিয়াম জুড়ে আলোর কারিকুরি দেখানোর চেষ্টাও চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে লক্ষ্মণ
সিএবি-র ভিশন টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। এত দিন ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে থাকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সময়াভাবে দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন। ১৯ অক্টোবর পটৌডি স্মারক বক্তৃতা দিতে শহরে পা রাখছেন লক্ষ্মণ। শোনা যাচ্ছে ২২ অক্টোবর থেকে তিনি নতুন দায়িত্ব নিতে পারেন।