—ফাইল চিত্র।
রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা সিএবি-র নতুন গঠনতন্ত্রে যে লুকিয়ে রয়েছে এক ঝাঁক প্রশ্ন, সেগুলো উঠে এল মঙ্গলবার, সংস্থার বিশেষ সাধারণ সভায়। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বোর্ডের নির্দেশ মেনে রাজ্য সংস্থা যে নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি করেছে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য সদস্যদের সঙ্গে এই বিশেষ সভায় বসেছিলেন বর্তমান শীর্ষকর্তারা। এই সভাতেই উঠে এল একাধিক প্রশ্ন।
এ দিন ইডেনের ক্লাব হাউসে এই সভায় ছিলেন সংস্থার নতুন আইনি উপদেষ্টা সম্রাট সেন। তবে সৌরভকেই বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায় বলে খবর। প্রস্তাবিত ট্রাস্টি বোর্ড ও সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারের (সিইও) যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ওম্বাড্সম্যানকে কেন অব্যহতি দেওয়া হল, সেই প্রশ্নও ওঠে। এ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন একাধিক সদস্য। যে সংশোধনগুলির প্রস্তাব এ দিন দেওয়া হয়েছে, সে গুলি করে এ রাজ্যের রেজিস্ট্রার অব সোসাইটিজে নথিভুক্ত করা হবে নতুন গঠনতন্ত্র। নথিভুক্তির পরে বৃহস্পতিবার তা বোর্ডের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান সৌরভ।
সিএবি-র প্রাক্তন যুগ্মসচিব ও কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে এ দিন প্রশ্ন তোলেন, ক্রিকেট প্রশাসনের নতুন আইনে বোর্ড বা কোনও রাজ্য সংস্থায় ট্রাস্টি বোর্ড থাকতে পারে না। তা সত্ত্বেও সিএবি-র গঠনতন্ত্রে ট্রাস্টি বোর্ডকে কেন টিকিয়ে রাখা হয়েছে? সৌরভ সভার পরে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘‘ট্রাস্টি বোর্ড লোঢা সুপারিশ ও বোর্ডের গঠনতন্ত্রে রয়েছে।’’ তবে আইনি মহল বলছে উল্টো কথা। মঙ্গলবার বোর্ডের প্রাক্তন আইনি উপদেষ্টা ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ও আনন্দবাজারে লেখেন, এমন কিছুই নেই লোঢা সুপারিশে।
সংস্থার সিইও-র যে যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে সংস্থার গঠনতন্ত্রে, তাও লোঢা সুপারিশ মেনে হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। সৌরভ অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের সিইও-র সেই যোগ্যতা আছে।’’ তবে তাঁর সেই যোগ্যতা নেই বলে দাবি করেছেন একাধিক সদস্য। তাঁদের বক্তব্য, সিএবি-তে যোগ দেওয়ার আগে তিনি আইএসএলের কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজি এটিকে-র অভিভাবক সংস্থা কলকাতা গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস প্রাইভেট লিমিটেড-এর কর্মী ছিলেন।
প্রশাসনে মোট ন’বছরের মেয়াদের মধ্যে ওয়ার্কিং কমিটিতে থাকার সময়কেও ধরা হবে কি না, এই প্রশ্নও ওঠে মঙ্গলবার। এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনার সময়ে সৌরভকে কিছুটা কড়া মেজাজে দেখা যায় বলে সভায় থাকা কয়েকজন সদস্য জানান। লোঢা সুপারিশ না মেনেই সিএবি গঠনতন্ত্রে সাব কমিটির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন ওম্বাড্সমান পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হল, এই প্রশ্নও ওঠে এদিনের সভায়। যার উত্তরে সৌরভ নাকি প্রথমে জানান, তিনি নিজের ইচ্ছেতেই এই পদ ছেড়েছেন। পরে আবার নাকি তিনি বলেন, আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে এই পদে বসাতে হবে, যা তিনি নন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের ভোটাধিকার দেওয়ার নিয়মকেও অবাস্তব বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও ইডেনে সিএবি-র বিশেষ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় এ দিন, যার জন্য পাঁচ বছরে আড়াই লক্ষ টাকা করে নেওয়া হতে পারে প্রস্তাব দেন সিএবি প্রেসিডেন্ট। এই সদস্যপদ বাবদ প্রায় ৬০ কোটি টাকা আয় করা যেতে পারে বলে সভায় জানিয়েছেন তিনি।