অমিতকে খেলানোর ঝুঁকিটা নিও বিরাট

শ্রীলঙ্কা সফরের ভারতীয় দলে কোনও চমক না থাকারই কথা। প্রত্যাশা অনুযায়ীই দলটা বাছল নির্বাচকরা। তবে চার বছর পরে অমিত মিশ্রর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে নাকি নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে শুনছি। আমার মনে হয়, এই প্রশ্ন ওঠা উচিত ছিল তখন, কর্ণ শর্মা যখন দলে ডাক পেয়েছিল। যে ছেলেটা তার রঞ্জি দলেরই সেরা বোলার নয়, সে ভারতীয় দলে সুযোগ পাবে কেন?

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৫০
Share:

শ্রীলঙ্কা সফরের দল গড়ার সভা। নির্বাচকদের সঙ্গে এই প্রথম বিরাট কোহলি। বৃহস্পতিবার।

শ্রীলঙ্কা সফরের ভারতীয় দলে কোনও চমক না থাকারই কথা। প্রত্যাশা অনুযায়ীই দলটা বাছল নির্বাচকরা। তবে চার বছর পরে অমিত মিশ্রর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে নাকি নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে শুনছি।

Advertisement

আমার মনে হয়, এই প্রশ্ন ওঠা উচিত ছিল তখন, কর্ণ শর্মা যখন দলে ডাক পেয়েছিল। যে ছেলেটা তার রঞ্জি দলেরই সেরা বোলার নয়, সে ভারতীয় দলে সুযোগ পাবে কেন? আমি নির্বাচক থাকলে তো তখন দল বাছাইয়ের বৈঠকে এই প্রশ্নটাই তুলতাম। শুনলাম সন্দীপ পাটিল সাংবাদিক বৈঠকে নাকি বলেছে, কর্ণকে চোটের জন্য দলের বাইরে রাখা হয়েছে। আমার মনে হয়, সুস্থ থাকলেও ওকে টেস্ট দলে নেওয়া উচিত নয়। বরং ওকে ‘এ’ দলে খেলানো উচিত ছিল। যাতে আরও কিছুটা হাত পাকিয়ে নিতে পারে।

টেস্ট দলে যদি কোনও লেগ স্পিনারকে নিতেই হয়, তা হলে অমিতের চেয়ে ভাল আর কোনও পারফর্মারের নাম আমার মনে আসছে না। শ্রীলঙ্কার উইকেটের কথা মাথায় রেখে আর পাকিস্তানের শ্রীলঙ্কা সফরে ওদের লেগস্পিনার ইয়াসির শাহর অসাধারণ সাফল্য (তিন টেস্টে ২৪ উইকেট) দেখেই সম্ভবত নির্বাচকরা একজন লেগস্পিনার দলে রেখেছে। সে জন্যই অমিতকে ফেরানো। যে পাঁচ বছর আগে শ্রীলঙ্কা সফরে কলম্বো টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে চারটে উইকেট পেয়েছিল (ভারত সেই টেস্ট পাঁচ উইকেটে জিতেছিল)।

Advertisement

তবে ইয়াসিরকে যেমন পাকিস্তান তিন টেস্টেই খেলিয়েছিল, তেমনই ভারতেরও অমিতকে খেলানোর ঝুঁকি নিতে হবে। পারবে ওরা? হরভজন, অশ্বিনের পর আর একজন স্পিনার? শ্রীলঙ্কা দলে প্রায় চার-পাঁচজন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান জেনেও? বিরাটের মনে রাখা দরকার, এক জন লেগ স্পিনার ফর্মে থাকলে সব সময় ম্যাচ উইনার। তা উল্টো দিকে যতই এক গাদা বাঁ হাতি থাকুক না কেন। তা ছাড়া অমিতের হাতে গুগলিটাও আছে। বাঁ-হাতিদের পক্ষে যেটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

সিদ্ধান্তটা নেওয়া বিরাট কোহলির পক্ষে সহজ হবে না। বিরাট যদি ‘নো রিস্ক, নো গেন’ প্রবাদে বিশ্বাসী হয় এবং সাহসী হয়, তা হলেই অমিতকে খেলানোর সিদ্ধান্তটা নিতে পারে। না হলে বুঝব, ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা ওর মধ্যে এখনও তৈরি হয়নি।

তা ছাড়া অমিত, হরভজনদের টেস্ট দলে ফিরিয়ে নির্বাচকরা বোধহয় এটাও বুঝিয়ে দিল, এই প্রজন্মের স্পিনাররা এখনও সে ভাবে তৈরি হয়ে উঠতে পারেনি। এই তো টিভিতেই শুনছিলাম, সুনীল গাওস্কর অক্ষর পটেলের খুব সমালোচনা করছিলেন। বলছিলেন, স্পিনার হিসেবে অক্ষরের ভবিষ্যৎ সে রকম উজ্জ্বল নয়। আমি অক্ষরকে নিয়ে সানিভাইয়ের মতো অতটা হতাশ নই। তবে এটা ঠিক যে, ওকে এখনও অনেক তৈরি হতে হবে।

টিমের বাকিটুকু প্রত্যাশিতই। চেতেশ্বর পূজারা আর রোহিত শর্মার মধ্যে প্রথম এগারোয় ঢোকার একটা লড়াই থাকবেই। আমি হলে এই লড়াইয়ে পূজারাকেই এগিয়ে রাখতাম। আরও একটা লড়াই হবে শিখর ধবন ও লোকেশ রাহুলের মধ্যে। আমার ধারণা রাহুলকে বাইরে বসতে হবে। বাংলাদেশে ধবন যে পারফরম্যান্স দেখিয়ে দিয়েছে, তার পর ওকে বাদ দিয়ে রাহুলকে খেলানোর সিদ্ধান্ত বিরাট নেবে বলে মনে হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন