ইন্ডোরে আজ ভক্তদের মন ছুঁতে মার্টিনা

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ফ্লোরে ঠিক যে জায়গাটায় তিন দশক আগে অমিতাভ বচ্চন সেই বিখ্যাত ‘ছু কর মেরে মন কো’ শুরু করেছিলেন, আজ সেটাই ক্ষুদিরাম অনুশীলন এন্ডে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার বেসলাইন-ব্যাকহ্যান্ড উইনার মারার আদর্শ পজিশন!

Advertisement

সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:০৬
Share:

বিমানবন্দরে অভিবাসন ফর্ম ভরছেন নাভ্রাতিলোভা।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ফ্লোরে ঠিক যে জায়গাটায় তিন দশক আগে অমিতাভ বচ্চন সেই বিখ্যাত ‘ছু কর মেরে মন কো’ শুরু করেছিলেন, আজ সেটাই ক্ষুদিরাম অনুশীলন এন্ডে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার বেসলাইন-ব্যাকহ্যান্ড উইনার মারার আদর্শ পজিশন!

Advertisement

মেয়েদের টেনিসের প্রবাদপ্রতিম প্লেয়ারের পা শহরে বুধবারই প্রথম পড়লেও কলকাতার টেনিসপ্রেমীদের মন তিনি বহু বছর ছুঁয়ে আছেন।

অনেক অর্থেই কলকাতা টেনিস মাস্টার্স অভিনব। অভূতপূর্ব। মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা-লিয়েন্ডার পেজ আর তাঁদের বিপক্ষ সানিয়া মির্জা-মহেশ ভূপতি, দুই জুটির ট্রফি ক্যাবিনেটেই দু’টো করে মিক্সড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম। কিন্তু ২৫ নভেম্বর, ২০১৫-র আগে এই দুই জুটি কখনও কোথাও মুখোমুখি হয়নি। টেনিস-গ্রহে এর আগে কোনও দিন একই ম্যাচে খেলতে দেখা যায়নি লিয়েন্ডার-সানিয়া-মহেশকে। তিন জনই শহরে এক দশকেরও পরে র‌্যাকেট হাতে নামছেন।

Advertisement

লিয়েন্ডার জন্মভূমিতে খেলতে আসছেন বলেই হয়তো চব্বিশ ঘণ্টা আগে মুম্বইয়ে বসে জিলিপি খাওয়ার ছবি টুইটারে পোস্ট করে বুঝিয়েছেন তিনি আছেন কলকাতার মেজাজেই। মহেশ তো আবার ক্যাপশন-সহ টুইটারে ছবি পোস্ট করেছেন— কলকাতায় ২৫ তারিখের মিক্সড ডাবলসের জন্য প্র্যাকটিস চালাচ্ছি। এ দিনও ফোনে শহরের টেনিস কার্নিভালের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে বলেছেন, ‘‘আয়্যাম এক্সাইটে়ড’। বুধবার সকালে প্রাইভেট জেটে একসঙ্গে শহরে নামছেন লি-হেশ। তার কিছুক্ষণ আগে সানিয়া মা নাসিমা মির্জাকে নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে পৌঁছচ্ছেন। বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস তারকা ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, ‘‘সানফিস্ট ওপেনের কথা কখনও ভুলব না। তখন যেমন মাকে নিয়ে কলকাতায় খেলতে যেতাম, এ বারও তেমনই যাচ্ছি।’’


মায়ামি থেকে দীর্ঘ বিমানযাত্রার পর মঙ্গলবার গভীর রাতে শহরে পা রাখলেন মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা।
দমদম বিমানবন্দরে টেনিস মহাতারকাকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।

ভারতীয় টেনিসের তিন আইকনের মহাউজ্জ্বল হাজিরা সত্ত্বেও কলকাতা মাস্টার্সের মূল আকর্ষণ অবশ্যই মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। তিনি— সমকামী মার্টিনা গত ক্রিসমাসে বিয়ে করা তাঁর উভকামী বান্ধবী জুলিয়া লেমিগোভা, না এজেন্ট কাকে নিয়ে শহরে আসছেন? নিরামিষাশী মার্টিনা ‘লং জার্নিতে প্রোটিন শরীরে আবশ্যক’ যুক্তিতে গত কয়েক বছর ফের মাছ খাওয়া ধরেছেন। নেতাজি ইন্ডোরের আধ কিলোমিটারের মধ্যে মধ্য কলকাতার যে পাঁচতারা হোটেলে মার্টিনা এ দিন মধ্যরাত পেরিয়ে ঢুকেছেন, সেখানে আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় তাঁর মেনুতে মাছ থাকবে কি না, তা নিয়েও দেখা গেল মঙ্গল-সন্ধেয় প্রবল চিন্তাভাবনা চলছে।

নেতাজি ইন্ডোরে টেনিস-মহাভোজের অবশ্য সব কিছু চূড়ান্ত। বিকেল পৌনে চারটেয় শুরু চার মহাতারকার টেনিস ক্লিনিক। প্রত্যেকে ছয় জন করে খুদে প্লেয়ারকে নিয়ে পড়বেন। পাঁচ মিনিট বরাদ্দ থাকছে অটোগ্রাফ আর সেলফি-র জন্যও। এর পর আধ ঘণ্টা ডুয়েট গানের আসর শহরের দুই শিল্পীর। ঠিক পাঁচটায় মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছবেন স্টেডিয়ামে। পরের কুড়ি মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চার টেনিস তারকাকে সংবর্ধিত করার পর হয়তো র‌্যাকেট হাতে সানিয়ার সঙ্গে একটা শট খেলে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন ম্যাচের। ঠিক পাঁচটা কুড়িতে।

তিন সেটের ম্যাচ শেষে (যার চেয়ার আম্পায়ার হিসেবে ন’টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলানোর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শহরের টেনিস আম্পায়ার সৈকত রায়কে নিযুক্ত করাতেই স্পষ্ট খেলাটা আদৌ প্রদর্শনী ম্যাচের মেজাজে হবে না।) মার্টিনা নাভ্রাতিলোভাকে আবার আলাদা ভাবে এক হাজার ডলার আর স্মারক দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়ার পালা।

আসলে এই মুহূর্তে ভারতীয় টেনিসমণ্ডল-ই ‘মার্টিনার্ড’! বুধবারই চেন্নাইয়ে খেলতে নামছেন মার্টিনা হিঙ্গিস। যার প্রায় একই সময়ে কলকাতার কোর্টে আসল মার্টিনা!

ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য।

মার্টিনাকে দেখুন বিকেল ৪-৩০, ডিডি স্পোর্টসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন