উমেশের ঘোষণা, ব্রাত্য থাকতে চাই না

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ফুট উপরে কৃষ্ণগিরি স্টেডিয়ামে দু’দিনে ১২ উইকেট নিয়ে উমেশের বার্তা, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট যাতে তাঁকে আর ব্রাত্য করে রাখতে না পারে, তা নিশ্চিত করার লড়াই-ই শুরু করে দিয়েছেন তিনি। 

Advertisement

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

নায়ক: ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে জেতালেন উমেশ। ফাইল চিত্র

কেরলের শৈলশহর শীতল ওয়ায়নাড়-এ আগুন ঝরিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যর্থতার জ্বালা মেটালেন উমেশ যাদব? তাঁর দাপটেই তো ঘরের মাঠে পাঁচ দিনের রঞ্জি ট্রফি সেমিফাইনালে দু’দিনেই ধরাশায়ী কেরল।

Advertisement

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ফুট উপরে কৃষ্ণগিরি স্টেডিয়ামে দু’দিনে ১২ উইকেট নিয়ে উমেশের বার্তা, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট যাতে তাঁকে আর ব্রাত্য করে রাখতে না পারে, তা নিশ্চিত করার লড়াই-ই শুরু করে দিয়েছেন তিনি।

গত দু’দিনের বিধ্বংসী বোলিংয়ের পরে উমেশ শুক্রবার বিকেলে আনন্দবাজারকে ফোনে বললেন, ‘‘যদি কেউ মনে করে থাকেন, উমেশ যাদব আর ফর্মে নেই, তারা নিশ্চয়ই এ বার মত বদলাবেন।’’

Advertisement

ওয়ায়নাড়ের পরিবেশ ও উইকেট যে তাঁকে সাহায্য করেছে, তা স্বীকার করে নেন ৩১ বছর বয়সি পেসার। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে নাগপুরের পাটা উইকেটেও ঝড় তুলে যে ছন্দ পেয়েছেন, তাও জানাতে ভোলেননি। বলেন, ‘‘উইকেট, পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই। কিন্তু একজন বোলার যখন তার সেরা ফর্মে থাকে, তখন বোধহয় এগুলো অতটা গুরুত্বপূর্ণ থাকে না। তখন লাইন-লেংথ আর ছন্দ সব ঠিক থাকে। এখন আমার তা-ই হচ্ছে। আশা করি, ফাইনালেও এই ছন্দ বজায় থাকবে।’’

নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় রওনা হওয়ার সময় তাঁর মুকুটে জ্বলজ্বল করছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদে নেওয়া দশ উইকেটের পালক। তাই অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্টে উমেশ যাদবকে মাঠে দেখতে না পেয়ে অবাক হয়েছিলেন অনেকে। পার্‌থে দ্বিতীয় টেস্টে তিনি সুযোগ পান ঠিকই, কিন্তু মহম্মদ শামি (৬), যশপ্রীত বুমরা (৫), ইশান্ত শর্মারা (৫) যেখানে সফল হন, সেখানে গোটা ম্যাচে মাত্র দু’টি উইকেট পান উমেশ।

অস্ট্রেলিয়ায় ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে তাঁর অবদান এটুকুই। তাই সেখান থেকে ফিরে এসেছিলেন নিজেকে আরও উন্নত করার সংকল্প নিয়ে। বলেন, ‘‘বিদর্ভের নেটে ফিরে পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আরও উন্নতি করার চেষ্টা করেছি। আমি হাল ছাড়তে চাইনি। ভারতীয় দলে জায়গা পাকা করতেই হবে। এটাই এখন আমার চ্যালেঞ্জ।’’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দশ উইকেট নেওয়ার পরেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে প্রথম এগারোয় না থাকা তাঁকে মানসিক ভাবে কিছুটা পিছিয়ে দেয় বলে জানান উমেশ। বলেন, ‘‘নিয়মিত ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে একজন খেলোয়াড় যতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারে, দলে তার পাকা জায়গা না হলে আত্মবিশ্বাস অতটা থাকে না। আমার ক্ষেত্রেও সে রকমই হয়েছে।’’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে ২৩৪ আন্তর্জাতিক উইকেটের শিকারি বলেন, ‘‘রঞ্জি ট্রফিতে নিয়মিত খেলতে পারছি বলেই আত্মবিশ্বাসটা পাই। যা আমি পার্‌থে পাইনি। আসলে নিয়মিত না খেললে ছন্দটা নষ্ট হয়ে যায়। বোঝা যায় না কোথায় ভুল হচ্ছে, কোথায় আরও উন্নতি প্রয়োজন। তাই ভারতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ পেতে আমাকে আরও লড়তে হবে। সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি।’’

এক দিকে আশিস নেহরা, অন্য দিকে সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, এই দুই মেন্টরের সাহায্যে নতুন লড়াই চলছে উমেশের। বলেন, ‘‘আশিস-পাজি আর সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁদের লড়াইয়ের দিনগুলোর কথা আমাকে প্রায়ই বলেন। আমার লড়াইয়েও এখন এগুলোই সম্বল।’’

লড়াকু উমেশ কতদূর এগোতে পারেন, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন