Cricket

অস্ট্রেলিয়া নাকি মরুদেশ, কুড়ির বিশ্বকাপ-বিভ্রাট

গত বার আইপিএল করার অভিজ্ঞতা থেকে বোর্ড কর্তারা অনেকে আত্মবিশ্বাসী মরুদেশে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট ভাল ভাবেই আয়োজন করা যাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৭:১৫
Share:

মুখোমুখি: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোহালি বনাম ম্যাক্সওয়েল লড়াই কোথায় হয় তা নিয়ে চলছে চর্চা। ফাইল চিত্র।

আইপিএলের বাকি থাকা ৩১ ম্যাচের পাশাপাশি এ বছরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাগ্য কী হতে চলেছে, তা নিয়েও কালো মেঘ তৈরি হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলে অনেকের মনে এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, ভারতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যে রকম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তাতে এ বছর আর এখানে কুড়ির বিশ্বকাপ আয়োজন করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে একমাত্র বিকল্প হচ্ছে, বিশ্বকাপ বাইরে নিয়ে যাওয়া।

Advertisement

প্রশ্ন হচ্ছে, বাইরে বলতে কোথায়? ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কাছে এখনও সেরা বিকল্প সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। গত বার আইপিএল করার অভিজ্ঞতা থেকে বোর্ড কর্তারা অনেকে আত্মবিশ্বাসী মরুদেশে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট ভাল ভাবেই আয়োজন করা যাবে। এমন সম্ভাবনার কথা আগেই লেখা হয়েছে যে, আইপিএলের বাকি থাকা অংশ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দু’টো প্রতিযোগিতাই পর-পর আয়োজিত হতে পারে আমিরশাহিতে। সে ক্ষেত্রে বিরাট কোহালিদের ইংল্যান্ড সফরের পরে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেখা যেতে পারে দু’টি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট।

এর পাশাপাশি, আরও একটি সম্ভাবনার দরজা খোলা রাখা হচ্ছে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, এ বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছিল ভারতে, আগামী বছর ফের কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ হবে অস্ট্রেলিয়ায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, এ বারের বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজন করে পরের বারের প্রতিযোগিতা ভারতে করা যায় কি না, সেই আলোচনাও চলছে। কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়াতেই আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল। ভারতে ছিল তার পরে। অতিমারির জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্থগিত হয়ে যায়। আইসিসি সভায় ঠিক হয়, তা হবে ভারতে বিশ্বকাপ হওয়ার পরে। এখন পুরনো অবস্থানে ফিরে যাওয়া হবে কি না, সেটাই দেখার।

Advertisement

ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে যথেষ্ট ভাল সম্পর্ক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের। অজিঙ্ক রাহানেরা যখন অস্ট্রেলিয়া সফর করছিলেন, সে দেশের সরকার নিভৃতবাস পর্ব নিয়ে খুবই কড়াকড়ি করছিল। ভারতীয় বোর্ডের অনুরোধে অস্ট্রেলীয় বোর্ডের কর্তারা সরকারের সঙ্গে কথা বলে হোটেলের মধ্যে ঘোরাঘুরি এবং খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে কঠোর বিধি শিথিল করে দেন। এ বারে তেমনই আইপিএল স্থগিত হতেই ভারতীয় বোর্ডের কর্তারা জরুরি ভিত্তিতে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের মলদ্বীপ পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। স্মিথ, ওয়ার্নার, কামিন্সদের বোর্ডের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশও করা হয়। মনে করা যেতেই পারে, এই উষ্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে ভারতীয় বোর্ডের সঙ্কটে তাদের পাশে দাঁড়াতেই পারে অস্ট্রেলিয়া।

ঘটনা হচ্ছে, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড আগ্রহ প্রকাশ করলেই হবে না। সে দেশের সরকারকেও রাজি হতে হবে। বিশ্বকাপ মানে অনেক বেশি লোকের জমায়েত। জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে নিশ্ছিদ্র আয়োজন করতে হবে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের দরজা এখনও সে ভাবে খোলেনি কামিন্সদের দেশে। ভারতের সঙ্গে উড়ান ভ্রমণ তো এখন পুরোপুরি বন্ধই। কবে যে সীমান্ত খুলবে অস্ট্রেলিয়া, কেউ জানে না। তাই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের ইচ্ছা থাকলেই যে সব সম্ভব হবে, তা-ও নয়। অনেক কিছু নির্ভর করবে তাদের দেশের সরকারের মনোভাবের উপরে।

ওয়াকিবহাল মহল থেকে এ দিন শোনা গেল, ‘‘অস্ট্রেলিয়া, ভারত, আইসিসি সকলে মিলে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। কোন দেশে কোন বিশ্বকাপ হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলতেই পারে। কিন্তু সবই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তার উপরে।’’ এ বারের কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ যে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হবে, তা মোটামুটি ধরে রাখা যায়। অর্থাৎ, আর্থিক ক্ষতি স্বীকারের বিশ্বকাপ। আইসিসি আর্থিক ভরসা না দিলে অস্ট্রেলিয়া এই ঝক্কি নিতে রাজি হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কারও কারও মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলীয় সরকারের বিদেশি ঢুকতে দেওয়া নিয়ে যে রকম অনড় মনোভাব, অক্টোবরেই তা একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন