হ্যাটট্রিকের হাসি। মিক্সড ডাবলসে এ বার যুক্তরাষ্ট্র ওপেনও। ছবি: এএফপি।
শুক্র-রাতের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে কোনটা বেশি অবাকের? বেশি তাৎপর্যপূর্ণ?
দুই প্রাক্তন ডাবলস বিশ্বসেরার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সিঙ্গলস ফাইনালে মুখোমুখি হওয়া? নাকি পাওয়ার আর ফিটনেস সর্বস্য টেনিসের যুগে ৪২ বছর, ১ মাস, ২৫ দিন বয়সি এক ভারতীয়ের ২০১৫-এ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের হ্যাটট্রিক?
মেয়েদের সিঙ্গলস ফাইনাল রবার্তা ভিঞ্চি বনাম ফ্লাভিয়া পেনেত্তা হওয়াটা যদি মহানাটকীয় ঘটনা হয়, তা হলে বেকবাগান রো-র লিয়েন্ডার আদ্রিয়ান পেজের ১৬ বছরের ব্যবধানে ফের এক বছরে তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব রোমাঞ্চকর কীর্তি!
সেই ১৯৯৯-এ ফরাসি ওপেনে ডাবলস আর উইম্বলডনে ডাবলসের সঙ্গে মিক্সড ডাবলসও জিতেছিলেন লিয়েন্ডার। তার পর এ বছর অস্ট্রেলীয় ওপেন, উইম্বলডনের পর এ দিন গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনেও মিক্স়ড ডাবলস চ্যাম্পিয়ন হলেন তিনি। তিনটেই মার্টিনা হিঙ্গিসকে জুটি নিয়ে।
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম কোর্টে মেয়েদের সেমিফাইনালে মহানাটক ঘটে যাওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই পাশের লুই আর্মস্ট্রং স্টেডিয়ামে প্রায় সমপরিমাণ নাটক তৈরি করে মিক্স়ড ডাবলস ফাইনালে শীর্ষ বাছাই লিয়েন্ডার-হিঙ্গিস জুটি স্থানীয় মার্কিন জুটি বেথানি মাটেক-স্যাম কুয়েরির প্রবল চ্যালেঞ্জকে সুপার টাইব্রেকে মুছে দেন ৬-৪, ৩-৬, ১০-৭।
এই সংক্রান্ত আরও খবর লিয়েন্ডারের ইতিহাস, ৪৬ বছর পর মিক্সড ডাবলসে হ্যাটট্রিক জীবননদে দৃপ্ত হুঙ্কার
টাইব্রেকে ১-৪ পিছিয়ে পড়েও লিয়েন্ডারের দু’-তিনটে অসাধারণ রিটার্ন আর রিফ্লেস-ই ইতিহাস গড়ল। ছেচল্লিশ বছর পর (শেষ বার ১৯৬৯-এ) গ্র্যান্ড স্ল্যামে একই জুটি এক বছরে তিনটে মিক্স়ড ডাবলস খেতাব জিতল।
যতই এ মাসেই পঁয়ত্রিশে পা দিতে চলা সুইস তারকা হিঙ্গিস বাঁ দিকের (অ্যাডভান্টেজ) কোর্টে খেলায় ডাবলসে সানিয়া মির্জার মতোই মিক্সড ডাবলসে আর এক ভারতীয় লিয়েন্ডারও সৌভাগ্যবান হোন, জুটিদ্বয়ের বোঝাপড়া চূড়ান্ত কার্যকর হোক, বিয়াল্লিশেও গ্র্যান্ড স্ল্যামে অনবদ্য ধারাবাহিকতার জন্য কোনও প্রশংসাই বোধহয় যথেষ্ট নয় লিয়েন্ডারের। ডাবলস-মিক্স়়ড ডাবলস মিলিয়ে ১৭টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম হয়ে গেল। ৮টা ডাবলসের পাশাপাশি ৯টা মিক্স়়ড ডাবলস খেতাব।
মার্কিন টেনিসের কিংবদন্তি জিমি কোনর্স অবধি লিয়েন্ডারদের ফাইনালের আগে টুইট করেছিলেন, ‘লিয়েন্ডার-হিঙ্গিস, এগিয়ে চলো। নিজেদের দেশের জন্য আরও একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম আনো। আমি তোমাদের দেখছি, দেখব।’ আর লিয়েন্ডারের তো টুইটেই স্পষ্ট, তাঁর মহাসাফল্যের ‘ওয়ার্ক এথিকস’ কেমন? ফাইনালের আগের রাত প্রায় সাড়ে বারোটায় লিয়েন্ডারের পোস্ট ছিল, ‘ইউএস ওপেনের জিমে মাঝরাতেও তৈরি হচ্ছি আমার ৩৩ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য। যে কেরিয়ার আশীর্বাদধন্য।’
ধন্য লিয়েন্ডার পেজ-ও!