স্বপ্নভঙ্গ: এজবাস্টন টেস্টের ভাগ্য গড়ে দেওয়া সেই মুহূর্ত। বেন স্টোকসের ইনসুইঙ্গারে এলবিডব্লিউ কোহালি। বোলার স্টোকসের উল্লাস বলে দিচ্ছে, আসল শিকার হয়ে গিয়েছে। ছবি: গেটি ইমেজেস।
যেন একা তিনিই কুম্ভ রক্ষার দায়িত্বে। বার্মিংহামে বিরাট কোহালির সতীর্থ ব্যাটসম্যানেরা দুই ইনিংসে সবাই মিলে যা রান করলেন, অধিনায়ক একা তার চেয়ে মাত্র ১২ রান কম তুলেছেন। শনিবার দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর আউটের পরে ২১ রানের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ভারতের লড়াই। এই হারে ব্যাটসম্যানদের ভুল শট বাছাই ও অধ্যবসায়ের অভাবই দেখছেন ভারত অধিনায়ক।
প্রথম টেস্টে ৩১ রানে হারের পরে শনিবার বার্মিংহামে পুরস্কার বিতরণীতে এসে কোহালি বলেন, ‘‘আমরা বুঝে গেলাম, এর পরের টেস্টগুলোতে আমাদের কী কী করতে হবে। ব্যাটিংয়ে আরও অধ্যবসায় আনতে হবে। শট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে আমাদের।’’
দলের উপরের দিককার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে তিনি যে খুব খুশি নন, তা গোপন করেননি কোহালি। রাখঢাক না রেখে টেলএন্ডারদের লড়াইকে উদাহরণ করতে বলে দেন তিনি। অধিনায়ক বলেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে ইশান্ত ও উমেশ লড়াই করে ক্রিজে পড়ে ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসেও হার্দিকের সঙ্গে উমেশ অনেকটা সময় ব্যাট করে গেল। নীচের দিককার ব্যাটসম্যানদের থেকে শিক্ষা নিতে পারে উপরের দিককার ব্যাটসম্যানেরা।’’ কী ভাবে ফিরে আসতে পারে ভারত? কোহালি বলেন, ‘‘খেলার মাঠে লুকনোর কোনও জায়গা নেই। আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, কী আমি পারছি না। কোথায় পিছিয়ে আছি। সেগুলো ঠিকঠাক করে ফিরতে হবে। ভয়ডরহীন ভাবে খেলতে হবে।’’
দলের পারফরম্যান্সে খুব হতাশ নন বিরাট। একই সঙ্গে মানছেন, উন্নতি দরকার। ‘‘কয়েকটা মুহূর্তে আমরা খুবই ভাল খেলেছি। চালকের আসনে ছিলাম। কিন্তু ইংল্যান্ড টানা চাপটা রেখে যেতে পেরেছে,’’ ম্যাচের পরে সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে বলেন কোহালি। টেস্ট ক্রিকেটের পক্ষেও বলতে শোনা যায় তাঁকে। ‘‘দু’টো ভাল দল সংঘর্ষপূর্ণ ক্রিকেট খেলছে। আবারও প্রমাণ হল, টেস্ট ক্রিকেট কেন সেরা। আমি সব চেয়ে ভালবাসি এই ফর্ম্যাটকে। আশা করি, অনেকেই আমার সঙ্গে একমত হবেন। আশা করি, আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা অনেক মানুষকে এ ভাবেই আনন্দ দিয়ে যেতে পারব।’’
নিজের ব্যাটিং নিয়ে জিজ্ঞেস করায় কোহালি বললেন, ‘‘টিম জিতলে হয়তো সেঞ্চুরিটা উপভোগ করতে পারতাম। এখন আর প্রথম ইনিংস নিয়ে ভাবছিই না।’’ তবে এই হারে হতাশ হতে নারাজ তিনি। বলে দিচ্ছেন, ‘‘অবশ্যই ব্যাটিংয়ে আমরা আরও জেদ দেখাতে পারতাম। তবু ছেলেরা যে রকম লড়াই করেছে, তাতে আমি গর্বিত। এই টেস্ট থেকে ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আবার ঝাঁপাতে হবে।’’ বল হাতে সফল অশ্বিন কিন্তু ব্যাটসম্যানদের পাশেই দাঁড়ালেন। সাংবাদিক বৈঠকে এসে তিনি বলেন, ‘‘এই ম্যাচে দুই দলই কখনও এগিয়ে আবার কখনও পিছিয়ে থেকেছে। কারণ, এখানকার উইকেট পেসারদের যথেষ্ট সাহায্য করেছে। এই অবস্থাতেও আমরা খেলার মধ্যেই ছিলাম। ম্যাচটা ভালই শেষ করেছি আমরা। এখান থেকে ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়ার মতো অনেক কিছুই আছে। তাই হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’’
১৯৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। অশ্বিন বলেন, ‘‘ব্যাট করার পক্ষে মোটেই ভাল পিচ ছিল না এখানে। প্রথম ইনিংসে জো রুট ও জনি বেয়ারস্টোর মধ্যে পার্টনারশিপটা ছাড়া আর কোনও জুটি বড় রান তুলতে পারেনি। আর আমাদের অধিনায়ক বিরাট কোহালি শুধু এই উইকেটেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে।’’