Virat Kohli

টেস্ট ফাইনালে উঠতে চাই জয় বা ড্র, যত নজর সেই গোধূলিতে

ভারতীয় অধিনায়ক যদিও মানছেন, লাল বলের চেয়ে গোলাপি বল সামলানো অনেক বেশি কঠিন।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৩
Share:

মহারণ: দিনরাতের টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ, বুধবার আমদাবাদে। নতুন স্টেডিয়ামে পাশ করবেন বিরাটরা? ফাইল চিত্র।

বিরাট কোহালি এমনই একজন চরিত্র যাঁকে কঠিন প্রশ্নপত্র দিয়ে ভয় দেখানো যায় না। যে কোনও পরিবেশ, পিচ, বিপক্ষের জন্য বরাবরই তৈরি ভারতীয় অধিনায়ক। আমদাবাদের নতুন স্টেডিয়ামে আজ, বুধবার থেকে শুরু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দিনরাতের টেস্ট। বিরাট জানিয়ে দিয়েছেন, বিপক্ষ যতই কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিক, তাঁরা সামলে দিতে তৈরি।

Advertisement

ভারতীয় অধিনায়ক যদিও মানছেন, লাল বলের চেয়ে গোলাপি বল সামলানো অনেক বেশি কঠিন। পিচ যে রকমই হোক, গোলাপি বলের টেস্টে ম্যাচের বাইরে রাখা যাবে না পেসারদের। ব্যাটসম্যান হিসেবে কী কী সমস্যার মধ্যে পড়তে হতে পারে, ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে তা তুলে ধরলেন ভারতীয় অধিনায়ক। বিরাট বলেন, “পিচ যে রকমই হোক, গোলাপি বলে ব্যাট করা অনেক বেশি কঠিন কাজ। বিশেষ করে গোধূলি ও নৈশালোকে। কোনও দল যদি নৈশালোকে ইনিংস শুরু করে, তা হলে প্রথম এক-দেড় ঘণ্টা কাটানো খুবই কঠিন কাজ।”

রোহিত বলে গিয়েছেন, আমদাবাদে স্পিনাররাই বেশি সাহায্য পাবে। তবে বিরাট মনে করেন, গোলাপি বলের টেস্টে পেসারদের হাল্কা ভাবে নেওয়া যাবে না। বিরাটের ধারণা, “গোলাপি বল যতক্ষণ নতুন থাকবে ও চকচকে ভাব ধরে রাখবে, ততক্ষণ পেসারদের ম্যাচের বাইরে রাখা যাবে না। এই বিষয়টা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে হ্যাঁ, স্পিনাররাও সাহায্য পাবে।”

Advertisement

এখনও পর্যন্ত দু'টি দিনরাতের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে বিরাটের। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশকে চূর্ণ করে ভারত। দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার সেই লজ্জা এখনও তাজা সমর্থকদের মনে। দু'টি টেস্টের অভিজ্ঞতা থেকে বিরাট বলে দিচ্ছেন, “দিনরাতের টেস্টে দুপুরের সেশনে ব্যাট করা সব চেয়ে সহজ। তখন বল বেশি নড়াচড়া করে না। তাপমাত্রাও সব চেয়ে বেশি থাকে। আলো যত কমতে থাকে, ব্যাট করাও ততই কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে গোধূলির সময় ব্যাট করা খুব একটা সহজ নয়।” যোগ করেন, “আলো কমলে বল সহজে দেখা যায় না। আর ফ্লাডলাইটে ব্যাট করার অনুভূতি লাল বলের টেস্টের সকালের মতো। কারণ, তখনই সব চেয়ে বেশি সুইং করে বল। বলা যায়, লাল বলের ক্রিকেটের চেয়ে গোলাপি বলের ক্রিকেটের চরিত্র একেবারেই উল্টো।”

শেষ গোলাপি বলের টেস্টে ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার আতঙ্ক এখন আর গ্রাস করে না বিরাট-বাহিনীকে। ভারতীয় অধিনায়ক মনে করেন, ৪৫ মিনিটের খারাপ ক্রিকেট পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল ম্যাচে। ইংল্যান্ডও শেষ গোলাপি বলের টেস্টে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। বিরাট মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটে না। অধিনায়কের কথায়, “দু'টি ঘটনাই অদ্ভুত। ইংল্যান্ডও একই কথা বলবে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্টে কিন্তু আমরাই চেপে বসেছিলাম। ৪৫ মিনিটের খারাপ ক্রিকেট এত বড় পার্থক্য গড়ে দিল। কিছু কিছু সময় আসে, যখন কোনও কিছু করেই লাভ হয় না। অস্ট্রেলিয়ায় সেটাই হয়েছিল আমাদের। তবে এখন আমরা আত্মবিশ্বাসী। অ্যাডিলেডে ৩৬ অলআউট হওয়ার পরেও কিন্তু মেলবোর্নে জিতেছিলাম। সেটা প্রমাণ করে, কতটা দ্রুত আমরা মানসিক ভাবে তৈরি হতে পারি।”

আমদাবাদে গোলাপি বলের ম্যাচ জিতলেই ভারতের মাটিতে অধিনায়ক হিসেবে সব চেয়ে বেশি টেস্ট জেতার নজির গড়বেন বিরাট। ছাপিয়ে যাবেন তাঁর পূর্বসূরি ও অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। কিন্তু ভারত অধিনায়ক রেকর্ড নিয়ে ভাবতে নারাজ। তাঁর কাজ দলকে জেতানো। সেটা নিয়েই ভাবতে চান। রেকর্ডকে কখনওই সে ভাবে গুরুত্ব দিতে চান না বিরাট। তেমনই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার বাড়তি চাপ নিতেও নারাজ তিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২-১ সিরিজ জিতলেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলবে ভারত। অর্থাৎ সিরিজের বাকি দুই টেস্টে ভারত হারলে চলবে না। একটা ড্র একটা জয় পেলেও ফাইনালে চলে যাবেন বিরাটরা। ইংল্যান্ডকেও ফাইনালে যেতে বাকি দুই টেস্টে জিততে হবে। কিন্তু বিরাট চান, শেষ দু'টি টেস্টেই জিতুক তাঁর দল। বুধবার ইশান্ত শর্মাও শততম টেস্ট খেলতে নামছেন। কপিল দেবের পরে এই প্রথম ভারতীয় পেসার হিসেবে এই কীর্তি স্পর্শ করবেন ইশান্ত। ভারতের অভিজ্ঞ পেসারের এই কীর্তিতে খুশি বিরাটও। কারণ, রাজ্য স্তর থেকে ইশান্তের সঙ্গে দিল্লির হয়ে খেলতেন বিরাট। রুমমেটও ছিলেন বহু বার। এমনকি ইশান্তের ভারতীয় দলে প্রথম বার সুযোগ পাওয়ার খবর তাঁকে দেন বিরাটই। অধিনায়ক বলছিলেন, “ইশান্তকে ঘুম থেকে তুলে বলেছিলাম, তুই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিস। বুধবার ওর একশোতম টেস্ট ম্যাচে পাশে থাকতে পেরে আরও ভাল লাগছে। বরাবরই খুব পরিশ্রমী ও। আমার সঙ্গে ওর বোঝাপড়াও অসাধারণ। ইশান্তের জন্য আমি সত্যি খুশি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন