দাবার বোর্ডে তাঁর এক সময়ের ‘শত্রু’ গ্যারি কাসপারভ যে এ ভাবে উচ্ছ্বাস দেখাবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বনাথন আনন্দও হয়তো আন্দাজ করতে পারেননি।
রিয়াধে বিশ্ব র্যাপিড দাবায় সেরার মুকুট পাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ, ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌরের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কাসপারভ টুইট করেন আনন্দকে। তিনি লিখেছেন, ‘অভিনন্দন জানাই, ষাটের দশকে জন্ম নেওয়া দাবাড়ুকে বিশ্ব র্যাপিড খেতাব জেতার জন্য। আশা করি তুমি এই খেতাব তাদের উৎসর্গ করবে, যারা এক সময় তোমার কাছে জানতে চেয়েছিল কবে অবসর নেবে।’
আনন্দ নিজেও যে কম উচ্ছ্বসিত নন সেটা তাঁর টুর্নামেন্ট জেতার পরে উচ্ছ্বাসেই পরিষ্কার। আনন্দ লিখেছেন, ‘‘সবাইকে ধন্যবাদ!!! মনে হচ্ছে যেন উড়ছি। বারবার মাথায় সেই গানটা ভেসে আসছে...উই আর চ্যাম্পিয়নস (আমরা চ্যাম্পিয়ন)। আশা করি এ রকমই উচ্ছ্বাস দেখাতে পারব ব্লিৎজ টুর্নামেন্টটা শেষ হওয়ার পরেও।’
র্যাপিড রাউন্ডের পরে এ বার ব্লিৎজ চ্যাম্পিয়নশিপে নামছেন আনন্দ। তার আগে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দাবাড়ু জানিয়েছেন কী ভাবে নিজেও চমকে গিয়েছেন এই পারফরম্যান্সে। আনন্দ বলেছেন, ‘‘খুব কঠিন একটা বছর কাটিয়ে এই টুর্নামন্টে এসেছিলাম। বিশেষ করে লন্ডন টুর্নামেন্টের পরে খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম (আনন্দ সর্বশেষ স্থান পেয়েছিলেন এই টুর্নামেন্টে)। তা ছাড়া আমার শেষ দুটো র্যাপিড টুর্নামেন্টেও খুব খারাপ গিয়েছিল।’’
উৎসব: নৈশভোজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। সঙ্গে ভারতীয় দলের সদস্যরা।
আনন্দ টুর্নামেন্টে নামার আগেও ঠিক কী রকম মানসিকতা নিয়ে নামেন তাও বলেন। ‘‘রিয়াধে এই টুর্নামেন্টে নামার আগে খুব একটা আশা ছিল না। কিন্তু এ রকম একটা সুন্দর চমক দিতে পারব বুঝতে পারিনি। প্রথম দিন মনে হয়েছিল আমি ভালই খেলছি। আমি যেন এর পরে পুরনো দিনগুলোয় চলে গিয়েছিলাম। যখন র্যাপিড দাবায় আমিই দাপট দেখাতাম।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘এর পরে আমি পিটার লেকোকে হারাই। গেমটা খুব ভাল খেলেছিলাম। একটা ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয়েছিল এর পরে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তটা ছিল ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারানো। খুব ভাল ফর্মে ছিল বরাবরের মতো কার্লসেন। ওর বিরুদ্ধে খেলার সময় ন্যুনতম ড্র নিশ্চিত হওয়ার পরেই আমি জয়ের জন্য ঝাঁপাই। দু’মিনিট পরেই বুঝতে পারি আমি গেমটা জিততে চলেছি।’’