শেষ পর্যন্ত ভারত জিতল। তবে তার আগে নিউজিল্যান্ডও কিন্তু ব্যাটিংয়ে একটা মরিয়া লড়াই দেখাল। যাতে ভারতকে জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হল পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত। ভারতের জন্য জয়টা দুর্দান্ত। বিশেষ করে প্রথম দিন ও রকম একটা অবস্থা থেকে লড়ে ম্যাচে ফেরার পর।
ভারত হয়তো আরও ভাল ব্যাটিং করতে পারত। বিরাট টস জেতার পর প্রথম দিন যে রকম ব্যাটিং দেখার আশা ছিল, সেটা হয়নি। তবে সেখান থেকেও ভারত কিন্তু দারুণ ভাবে উঠে দাঁড়িয়েছে। দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখাল ভারতীয় বোলাররা। তা-ও এমন একটা পিচে যেটা র্যাঙ্ক টার্নার নয়। ব্যাটসম্যানরা টিকে থাকতে পারলে রান আসছিল। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে ব্যাটসম্যান আর বোলার দু’তরফেই লড়াইটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ধৈর্যেরও।
কানপুরের পিচ নিয়ে কম কথা হয়নি। টেস্ট শুরু হওয়ার আগে এমনও কথা হচ্ছিল যে, পিচটা হয়তো খুব তাড়াতাড়ি ভাঙবে আর র্যাঙ্ক টার্নার হয়ে দাঁড়াবে। সেটা কিন্তু হয়নি। স্পিনাররা পিচ থেকে সাহায্য পাওয়া শুরু করেছে চতুর্থ দিন থেকে। উপমহাদেশের পিচে যেটা স্বাভাবিক। এটাই কিন্তু ম্যাচের ফয়সালা হতে পঞ্চম দিন গড়িয়ে যাওয়ার কারণ। বৃষ্টির জন্য নষ্ট হওয়া সময়ের কথা মাথায় রেখেই এটা বলছি।
ম্যাচটার মোড় ঘুরতে শুরু করে তৃতীয় দিন সকাল থেকে। ভারতীয় স্পিনাররা জোরালো আঘাত করার পর। তখনও নিউজিল্যান্ড ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়নি। অশ্বিন ওর জাত দেখিয়ে কেন উইলিয়ামসনকে স্বপ্নের ডেলিভারিটা ওই সময়ই করল। এর পর ওকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
ম্যাচের সেরা রবীন্দ্র জাডেজাও পিছিয়ে ছিল না। দু’ইনিংসেই জাডেজা ব্যাট হাতে যে রানটা করেছে, সেটাও পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে। যাতে ভারত তিনশো রানের গণ্ডি পেরনোটা নিশ্চিত করে ফেলেছিল। যেটা পরে বড় হয়ে দাঁড়াল। বল হাতেও জাডেজা দারুণ ছিল। অশ্বিনের একেবারে যথাযথ সঙ্গী।
পাশাপাশি ভারতের ফাস্ট বোলারদেরও প্রশংসা করতে হবে। এ রকম লো আর স্লো উইকেটে মহম্মদ শামি আর উমেশ যাদব দুর্দান্ত বোলিং করেছে। তার পুরস্কারটাও পেয়েছে ওরা। এই জয়ের পর ভারত নিশ্চয়ই দ্বিতীয় টেস্টে আরও আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দ্বিতীয় টেস্টে ভারত অপরিবর্তিত দল নামাবে।
এক নম্বরে উঠে এল ভারত
প্রথম টেস্ট জিতে আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানকে ছুঁয়ে ফেলল ভারত। প্রাপ্ত পয়েন্টের বিচারে ভারত ও পাকিস্তান এখন যুগ্মভাবে এক নম্বরে। দু’দলের রেটিং পয়েন্ট এখন ১১১। যদিও আইসিসি সরকারি ভাবে এখনও ঘোষণা করেনি। তবে র্যাঙ্কিংয়ের নিয়মে একটা টেস্ট জিতে ভারত এক পয়েন্ট পেল। পাকিস্তানের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ। পাকিস্তান যদি ৩-০-য় জেতে আর ভারত যদি ২-০-য় জেতে, তা হলে ভারতই পাকিস্তানকে টপকে শীর্ষে উঠে আসবে।