যে রসায়ন ঘুম কেড়েছে ওয়েঙ্গারের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দু’বার ছুটি হয়ে গিয়েছে বার্সেলোনার সৌজন্যে। মঙ্গলবারও কি আর্সেন ওয়েঙ্গারের আর্সেনালের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বেই সে রকম কিছু অপেক্ষা করছে?
এর আগের দু’বারই খেলতে হয়েছিল পেপ গুয়ার্দিওলার বার্সেলোনাকে। যেখানে মেসিকে বাদ দিলে জাভি, ইনিয়েস্তা, বুস্কেতসদের মাঝমাঠই ছিল বার্সার তিকিতাকার পাওয়ার হাউস। আর এ বার লুই এনরিকের বার্সায় সেই বুস্কেতস, ইনিয়েস্তাদের সঙ্গে রয়েছে এমএসএন ত্রিফলা। যা ফালাফালা করে দিচ্ছে ইউরোপের টিমগুলোকে।
লিভারপুল ছেড়ে বার্সেলোনায় আসার পর ৬৬ গোল করে ফেলেছেন সুয়ারেজ। আর চলতি মরসুমে মেসি-সুারে-নেইমার ত্রিফলার মিলিত অবদান ৮৫ গোল। শেষ ১৩ ম্যাচে টানা জয়। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে অবধারিত ভাবেই সেই প্রশ্ন ছুটে এসেছে আর্সেনাল কোচ ওয়েঙ্গারের কাছে। যা শুনে সাংবাদিক সম্মেলনে আসা কিংবদন্তি আর্সেনাল কোচ দি’স্তেফানো, পুসকাস, জেন্টোদের সেই অমর রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে তুলনায় পৌঁছে গিয়েছিলেন একটা সময়। পরে অবশ্য বলেন, ‘‘বার্সা সুপার ফেভারিট। তবে ওদের হারানো যায়। আর তা করতে গেলে আমাদের আরও ফোকাসড থাকতে হবে।’’
বার্সার ত্রিফলার ধার সম্পর্কে বলতে গিয়ে ওয়েঙ্গার জোর দিয়েছেন কাতালান ক্লাবের তিন লাতিন স্ট্রাইকারের বন্ধুত্বে। ‘‘মাঠের ভিতর যে রকম তালমিল, মাঠের বাইরেও সেই একই রকম বন্ধুত্ব রয়েছে ওদের। তাই যে কোনও পরিস্থিতিতে যখন তখন গোল করে দিতে পারে ওরা।’’ এমনিতেই সুয়ারেজ সম্পর্কে ওয়েঙ্গারের দুর্বলতা সর্বজনবিদিত। দু’বছর আগে সুয়ারেজ যখন লিভারপুল ছাড়তে মরিয়া, তখন ওয়েঙ্গার চেয়েছিলেন তাঁকে নিজের দলে। সোমবারও বললেন, ‘‘সুয়ারেজকে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন ওকে আটকানোর প্ল্যানই কষছি। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ সম্পর্কটা এত মসৃণ ওর জন্যই।’’
দু’দলের সাত বারের সাক্ষাতে এ পর্যন্ত একবার জিতেছে আর্সেনাল। সে কথা মনে করাতে ওয়েঙ্গারও পাল্টা মনে করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর কিপার পের চেকের বিরুদ্ধে কখনও গোল করতে পারেননি মেসি। গত শনিবার হাল সিটির বিরুদ্ধে এফএ কাপে ড্রয়ের পর দ্রুত সাংবাদিক সম্মেলন সেরে মেসিদের ম্যাচ টিভিতে দেখতে চলে গিয়েছিলেন আর্সেনাল কোচ।
মেসিদের বিরুদ্ধে ফিরছেন মেসুট ওজিল। সে কথা জানিয়ে লন্ডনের ঐতিহ্যশালী ক্লাবের বহু বছরের ফরাসি কোচ বলেন, ‘‘আক্রমণের সঙ্গে এই ম্যাচে রক্ষণটাকেও পোক্ত করে নামতে হবে। যাতে অ্যাওয়ে ম্যাচের আগেই না ম্যাচটা শেষ হয়ে যায় আমাদের কাছে।’’ তাই মার্তেস্যাকার, কসিয়েলনিদের রক্ষণকে নিয়ে এ দিন প্র্যাক্টিস সেশনে মেসিদের আটকানোর জন্য বুস্কেতসদের বাড়ানো বল বন্ধ করা, বিশেষ করে শেষ পঁয়তাল্লিশ মিনিট এমএসএনের সুনামি বন্ধ করার জন্য বিশদে আলোচনা করেছেন ওয়েঙ্গার। দু’টিমেই খেলা প্রাক্তন তারকা থিয়েরি অঁরি বলছেন, ‘‘কাউন্টার অ্যাটাকে ওদের কোণঠাসা না করতে পারলে এই বার্সাকে আটকানো অসম্ভব।’’ একই কথা ওয়েঙ্গারের গলাতেও।
পর পর দু’বার ইউরোপ সেরা হওয়ার নজির আরিগো সাক্কির এসি মিলান ছাড়া আর কারও নেই। এমএসএন ত্রিফলাকে ভোঁতা করে অ্যালেক্সিস স্যাঞ্চেজ-ওজিলরা সেই রেকর্ডটাকে অক্ষত রাখার পাশাপাশি নিজেদের আগের দু’বারের হারের বদলা নিতে পারবেন কি? দেখতে মুখিয়ে আর্সেনাল সমর্থকেরা।