বাংলার সর্বকালের সেরা দল নিয়ে আড্ডা আর বিতর্ক

বঙ্গ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা দল নিয়ে শুরু হয়ে গেল বিতর্ক। এত দিন ধরে শহরের বিভিন্ন ক্রিকেট আড্ডায় মাঝেমধ্যে এই আলোচনা হলেও এমন বিতর্ক কখনও হয়নি বোধহয়। শুক্রবার আনন্দবাজারে প্রাক্তন বাংলা অধিনায়ক গোপাল বসুর সর্বকালের সেরা দল বাছাই যা উসকে দিল।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০৪:২৬
Share:

শনিবার যে মঞ্চে গোপাল বসুকে জীবনকৃতি সম্মান দেবে সিএবি, সেই মঞ্চে থাকবে জগমোহন ডালমিয়ার স্মৃতিও। অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি দেখতে হাজির সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার ইডেনে। -উৎপল সরকার

বঙ্গ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা দল নিয়ে শুরু হয়ে গেল বিতর্ক।

Advertisement

এত দিন ধরে শহরের বিভিন্ন ক্রিকেট আড্ডায় মাঝেমধ্যে এই আলোচনা হলেও এমন বিতর্ক কখনও হয়নি বোধহয়। শুক্রবার আনন্দবাজারে প্রাক্তন বাংলা অধিনায়ক গোপাল বসুর সর্বকালের সেরা দল বাছাই যা উসকে দিল।

ময়দানে যেমন এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক তুঙ্গে, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়াতেও বসে যায় ‘ফোরাম’।

Advertisement

সত্যিই এই দল সেরা? না এই একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারেন কেউ? হয়তো ঢুকতেও পারেন অনেকে? এই নিয়েই এ দিন বঙ্গ ক্রিকেটমহল ছিল সরগরম। আজ, শনিবার ইডেনে সিএবি-র বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মঞ্চে জীবনকৃতি সম্মান নিতে ওঠার আগে তাই গোপাল বসু ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

এ দিন সর্বকালের সেরা দল দেখে খুশি চূনী গোস্বামী যেমন বললেন, ‘‘বেশ ভাল টিম করেছে গোপাল। তবে এই টিমে আমি দু’টো পরিবর্তন করতে চাই।’’ ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৩— এই দশ বছর বাংলার হয়ে রঞ্জি খেলা ও শেষ তিন বছর বাংলাকে নেতৃত্ব দেওয়া চুনী বলছিলেন, ‘‘গোপালের টিম থেকে আমি দেবাঙ্গকে বাদ দিয়ে তার জায়গায় গোপালকেই ওপেনার হিসেবে পঙ্কজদার সঙ্গে রাখব। আর যে জায়গাটা ও খালি রেখেছে, সেই জায়গায় অম্বর রায়কে আনব।’’ চুনীর দলে আরও একটা পরিবর্তন— রণদেব বসুর জায়গায় দুর্গাশঙ্কর মুখোপাধ্যায়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যাঁর একশোর উপর উইকেট রয়েছে। ডান হাতি এই ফাস্ট মিডিয়াম পেসার ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন।

গোপালের সর্বকালের সেরা দল নিয়ে বিতর্কের আঁচ যে বাংলা, এমনকী দেশের বাইরেও পৌঁছেছে, তার আভাস পাওয়া গেল সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রকাশ পোদ্দারকে ফোন করে। ১৯৯০ রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন বাংলার অধিনায়ক সম্বরণ এখন বেলজিয়ামে। সেখান থেকে ফোনে বললেন, ‘‘এই দলে অম্বর রায় আর উৎপল চট্টোপাধ্যায়কে না দেখে বেশ অবাক হয়েছি। আমার দলে ওরা দু’জনই থাকবে।’’

দেড় দশকেরও বেশি সময় বাংলার হয়ে খেলা ও ১৯৭৬-৭৭-এ রঞ্জি টিমের ক্যাপ্টেন প্রকাশ পোদ্দার তাঁর সময়ের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটারকে তাঁর সেরা দলে রাখতে চান। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে বললেন, ‘‘শ্যামসুন্দর মিত্র, পুটু (নীরদ) চৌধুরী, সুঁটে বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চট্টোপাধ্যায়, সৌমেন কুণ্ডু ছাড়া এই দলের কথা ভাবতেই পারছি না। ওরা আমার সেরা এগারোর মধ্যে থাকবেই থাকবে।’’

যাঁর নেতৃত্বে বাংলা রঞ্জি ফাইনাল খেলেছে সেই দীপ দাশগুপ্ত বললেন, ‘‘আমি যাঁদের দেখিনি, তাঁদের আমার দলে রাখব না। ব্যতিক্রম পঙ্কজ রায় আর দিলীপ দোশী। ওঁদের পরিসংখ্যান আর রেকর্ড দেখে আমি ওঁদের রাখতে বাধ্য হব।’’ মনোজ তিওয়ারি না রোহন গাওস্কর কাকে রাখবেন, এই নিয়ে বেশ ধন্দে পড়েছিলেন দীপ। শেষ পর্যন্ত মনোজকে রাখার ব্যাখ্যা, ‘‘মনোজ চার নম্বরেরই স্পেশ্যালিস্ট। রোহন পাঁচ নম্বরের। আর পাঁচ নম্বরে যেখানে রোহনের প্রতিদ্বন্দ্বী সৌরভ, সেখানে তো আর ওকে রাখতে পারছি না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ওর প্রায় সাত হাজার রান আছে। এটাও অস্বীকার করা যায় না। যেহেতু ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী টিমটা বাছতে হচ্ছে, তাই ওকে রাখা গেল না।’’

প্রথম শ্রেণিতে আড়াইশোর উপর উইকেট থাকা সত্ত্বেও যে জন্য জায়গা পাননি সৌরাশিস লাহিড়ী। যে দলে দিলীপ দোশী, উৎপল চট্টোপাধ্যায়, সেই দলে আর অন্য কারও জায়গা হবে কী করে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement