স্পেনের বিরুদ্ধে টাইয়ে ভারতের টিম দেখে অবাকই হলাম। কেন লিয়েন্ডার পেজ-রোহন বোপন্নাদের জোর করে একসঙ্গে কোর্টে নামানো হবে? নির্বাচকদের এটাই জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হচ্ছে।
সোমদেব দেববর্মন, য়ুকি ভামব্রিদের চোট। সেখানে আর কে-ই বা আছে ডেভিস কাপ সিঙ্গলস খেলার মতো? তাই সাকেত মিনেনি, রামকুমারদের সিঙ্গলসের জন্য বাছাটা ঠিকই সিদ্ধান্ত। কিন্তু এত কিছু হয়ে যাওয়ার পর ডাবলসে লি-রোহন!
অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে, লিয়েন্ডার দেশের জন্য কম লড়াই করেনি। দেশের জার্সিতে অনেক অঘটন ঘটিয়েছে। রোহনের প্রশংসা করেও শেষ করা যায় না। কিন্তু পরিস্থিতি এখন অন্য রকম। ওদের দু’জনের সম্পর্ক যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এই সময় ওদের ডেভিস দলে রেখে কতটা লাভ হবে এটাই তো সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
অঘটন ছাড়া স্পেনের বিরুদ্ধে ডেভিসে টাই জেতা ভারতের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ৫১ বছর আগে যে বার আমরা স্পেনের বিরুদ্ধে শেষ ডেভিস টাই খেলেছিলাম, সে বার তুমুল লড়াই হয়েছিল। ২-৩ হেরেছিলাম। ১-৩ হয়ে যাওয়ার পর শেষ সিঙ্গলসটায় হুয়ান গিসবার্টকে আমি পাঁচ সেটে হারিয়েছিলাম। প্রথম সিঙ্গলসে রামনাথন কৃষ্ণণ ওকে স্ট্রেট সেটে হারিয়েছিল। ডাবলসে ম্যানুয়েল সান্তানা আর হোসে লুই আরিয়া আমাদের পাঁচ সেট লড়ে হারিয়ে দেয়। এ বার সেই লড়াইটা দিতে পারলে কিছুটা অবাকই হব।
ওদের সেরা প্লেয়াররা বেশিরভাগই বিশ্ব সিঙ্গলস র্যাঙ্কিংয়ে কুড়ির মধ্যে। দ্বিতীয় সারির দলও যদি আসে, তা হলেও তারা সবাই ৫০-এর মধ্যে। আর ভারতীয়রা কেউ সিঙ্গলসের একশোর মধ্যেই নেই। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এ রকম একটা মঞ্চে তরুণদের সুযোগ না দিলে আর কবে দেওয়া হবে?
আমি নির্বাচক হলে ডাবলসের জন্য দ্বিবিজ শরণ আর পূরব রাজাকে নিতাম। ওরা এই মাসেই মেক্সিকোয় এটিপি ওয়ার্ল্ড টুর ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এই সিজনে ওরা তিনটে চ্যালেঞ্জারও জিতেছে। লিয়েন্ডারের র্যাঙ্কিং যেখানে ৬২, সেখানে ওদের দু’জনের র্যাঙ্কিং ৭০-এর আশেপাশে। তা হলে অসুবিধা কী? এমনিতেও অঘটন না ঘটলে হয়তো লি-রোহন হারবে। দ্বিবিজ-পূরবদের নামালে ওরাও না হয় হারত। আসলে এটা ভাবা উচিত ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে টাইয়ের আগেই। ওদের ওই টাই থেকেই এক্সপোজার দেওয়া উচিত ছিল।
মঙ্গলবার কাগজে পড়লাম মহেশ বলেছে, রিওয় অলিম্পিক্সে লি-রোহনের একসঙ্গে আরও প্র্যাকটিস করা উচিত ছিল। একদম ঠিক কথা। আমি শুনেছি লি ওপেনিং সেরিমনির আগের দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রিওয় উড়ে গিয়ে তার পরের দিনই প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে। ওর মতো একজন অভিজ্ঞ প্লেয়ার এটা কী করে করল, তার কোনও ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। দিল্লিতে ডেভিস কাপ টাইয়ের আগে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন। ওখানে ওদের দ্বিতীয় সপ্তাহেও খেলতে হলে দিল্লিতে বেশি দিন প্র্যাকটিসের সুযোগ পাবে না। তাই এখানেও রিওর মতোই অবস্থা হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।
যদিও লিয়েন্ডার যখন আছে, তখন অঘটনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ওর বয়সটা তেতাল্লিশ। তাই আশঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে।