মণিপুরে বর্ষবরণের মধ্যেই হুঙ্কার

রিওর টিকিট পাব, সোনা নিয়েও ফিরব

এক জন কুস্তিগীর। অন্য জন বক্সার। অন্য জন বক্সার। প্রথম জন পুরুষ। পরের জন মেয়ে। তবু যেই রিওর কথা আসবে, কী অদ্ভুত মিল অলিম্পিক্স পদকজয়ী দুই ভারতীয়ের!

Advertisement

স্বপন সরকার

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:০৬
Share:

এক জন কুস্তিগীর। অন্য জন বক্সার।

Advertisement

প্রথম জন পুরুষ। পরের জন মেয়ে।

তবু যেই রিওর কথা আসবে, কী অদ্ভুত মিল অলিম্পিক্স পদকজয়ী দুই ভারতীয়ের!

Advertisement

সেটা কিন্তু মোটেই দু’জনের অলিম্পিক্স পদকের রং এক— ব্রোঞ্জ বলে নয়। এ-ও নয় যে, দু’জনেরই অলিম্পিক্স পদক এসেছিল চার বছর আগে লন্ডন গেমস থেকে।

বরং তার চেয়েও বেশি মিল— পরের বছরের অলিম্পিক্স নিয়ে দু’জনের দর্শনে। মিল দু’জনের এই মুহূর্তের অবস্থানেও।

যোগেশ্বর দত্তর মতোই মেরি কম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, ২০১৬ রিও-ই হবে তাঁর শেষ অলিম্পিক্স।

তবে হরিয়ানার কুস্তিগীরের মতোই মণিপুরের বক্সার এখনও রিওর টিকিট জোগাড় করতে পারেননি।

যদিও দু’জনের টার্গেটই এক— লন্ডনে জেতা অলিম্পিক্স পদকের রং রিওতে পাল্টানোর। এবং‌ সেটা সোনার কমে কিছু নয়!

ফোনে মেরি কম বলছিলেন, “ঈশ্বরের দয়ায় বক্সিং থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। লোকেরা যখন আমাকে বলে আমি নাকি ভারতীয় মেয়েদের অনুপ্রেরণা, তখন আমার দারুণ অনুভূতি হয়। সব সময় মনে হয় ওদের মধ্যে থেকে আরও মেরি কম উঠে আসবে।”

এই মুহূর্তে অবশ্য তিন সন্তানের মা মেরি বক্সিং, অলিম্পিক্স, রিও— সব সরিয়ে রেখে পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ক্রিসমাস এবং নিউ ইয়ার্স উদযাপনে ব্যস্ত মণিপুরের বাড়িতে। সেখান থেকে ফোনে হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘প্রায় বছরভর নিজের পেশাদারি দায়বদ্ধতার জন্য আমার পরিবার, বন্ধুদের সময়ই দিতে পারি না। অনেক দিন পর সেই সুযোগ পেয়ে তাই ওদের সঙ্গে জমিয়ে উত্‌সব উপভোগ করছি।”

তার মধ্যেই সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ভবিষ্যতে নিজের বক্সিং গ্লাভস তুলে রাখা নিয়ে বললেন, “দেখুন, অনেক দিন আগেই ঠিক করে রেখেছি রিও থেকে আমার দ্বিতীয় অলিম্পিক্স পদক জিতে বক্সিংকে বিদায় জানাব। আর সেই পদকটা সোনা যাতে হয় তার জন্য নিজের শেষ বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করব। তার জন্য প্রচণ্ড কঠিন পরিশ্রম করছি। বিশ্বাস করি রিওর ঠিক আগে নিজেকে মানসিক আর শারীরিক ভাবে সেরা জায়গায় নিয়ে যেতে পারব। সেরা ফর্মে পৌঁছে যাব। ঈশ্বর নিশ্চয়ই আমার পাশে থাকবেন।”

তবে লক্ষ্যে পৌঁছনোর পথটা যে আদৌ সহজ নয় সেটাও খুব ভাল ভাবে মাথায় রাখছেন মেরি। “আমার ক্যাটেগরি একান্ন কেজিতে রিওর জন্য কোয়ালিফাই করাটাই সহজ নয়। তার পর পদক জেতা তো আরওই কঠিন। তাও আমি কিন্তু আশাবাদী। তার জন্য মার্চে কোয়ালিফাইং টুর্নামেন্টে নিজেকে নিংড়ে দেব। লড়াই আমি ছাড়ছি না,” বলে দিলেন সম্প্রতি রিওতেই আর্ন্তজাতিক বক্সিং সংস্থা (আইবা) আয়েজিত অলিম্পিক্স টেস্ট ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী মেরি কম।

গত বছর এশিয়াডে সোনা জেতার প্রায় এক বছর পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। যোগেশ্বরের মতোই চোট-আঘাত সারিয়ে রিংয়ে ফিরতে প্রায় পুরো বছরটা লেগে গিয়েছে মেরিরও। নিজের বর্তমান ফিটনেস নিয়ে যিনি বলছেন, “এখন আমি পুরোপুরি ফিট।”

ভারতের কোনও বক্সারই এখনও রিও অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র যোগাড় করে উঠতে পারেননি। মেরি ছাড়াও যে লক্ষ্যে লড়ছেন সরিতা দেবী এবং পুরুষদের মধ্যে রয়েছেন শিবা থাপা, মনদীপ জাঙ্গরা, বিকাশ কৃষ্ণরা। আসন্ন ২৩ মার্চ- ৩ এপ্রিল চিনের কিয়ানানে বসতে চলেছে এশিয়ান অলিম্পিক কোয়ালিফাইং চ্যাম্পিয়নশিপ।

রিও যেতে মেরি-শিবা-সরিতাদের এখন পাখির চোখ কিয়ানান!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন