কালনার চা গ্রামে চলছে মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতা। মঙ্গলবার। -নিজস্ব চিত্র
তখন বেলা ২টো। একটু-একটু করে ভিড় জমছে কালনার চা গ্রামের খাঁপুকুরের পাড়ে। ফুটবল খেলতে কলকাতার ‘টিম’ আসছে যে!
কলকাতা ফুটবলের তিন প্রধানের কেউ না কি! ভুল ভাঙাল মাইক। ঘোষণা হল, লড়াই হবে কলকাতা মহিলা একাদশ ও মেদিনীপুর বালিকা বিদ্যাপীঠের মধ্যে। তা দেখতেই ভিড় করেছেন চাগ্রাম, বহরা, ইছাপুর, ধাপাসপাড়া, গোয়ারা, নোয়ারা-সহ ১০টি গ্রামের মানুষ।
চা গ্রামে এক দিনের মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতা এ বার দু’বছরে পা দিল। উদ্যোক্তা স্থানীয় ‘খাঁপুকুর আদিবাসী জার্মান অ্যাসোসিয়েশন’। উদ্যোক্তাদের দাবি, এলাকায় মহিলা ফুটবলের প্রচার ও প্রসার চাইছিলেন তাঁরা। সে কথা মাথায় রেখেই দ্বারস্থ হন রাজ্য যুবকল্যাণ দফতরের। সেখান থেকে সাহায্য পাওয়ার পরেই রবিবার দুপুরে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
দু’দলের ফুটবলারেরা মাঠে নামতেই আদিবাসী রীতিতে অভিবাদন জানানো হয় তাঁদের। মাঠে বল গড়াতেই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। মিনিট সাতেকের মাথায় মাঝমাঠ থেকে ‘থ্রু-পাস’ ধরে বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে কলকাতাকে এগিয়ে দেন স্ট্রাইকার দেবনীতা রায়। ১৪ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ান কলকাতার জৈতি শর্মা। প্রথমার্ধে আরও কয়েকবার দেবনীতা মেদিনীপুরের রক্ষণকে বিপদে ফেললেও গোল আসেনি। তবে এর পরেও মেদিনীপুরের মেয়েরা খেলা থেকে হারিয়ে যাননি। তাঁদের তুলসি হেমব্রম গোল করে ব্যবধান কমান। খেলার একেবারে শেষ লগ্নে ফের একটি গোল করেন কলকাতার জৈতি।
মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে ৭০ মিনিটের গোটা ম্যাচ দেখে এলাকার বাসিন্দা তরুণী গোপা মাণ্ডি, বন্দনা মাজিরা বলে গেলেন, ‘‘ফুটবল নিয়ে আবেগের আবার ছেলে-মেয়ে বাছাবিচার কী! মেয়েরা ফুটবল নিয়ে মাঠ কাঁপাচ্ছে। তা দেখে আমাদের এলাকার মেয়েরাও উৎসাহিত হবে বলে মনে হয়।’’