পাখির চোখ মণিপুর

ফুটবলে স্বপ্ন দেখাচ্ছে কৃষ্ণা

ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল সে। এখন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। বছর পনেরোর কৃষ্ণা সিংহ। বাংলার হয়ে স্কুল ফুটবলে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় খেলতে মণিপুর যাচ্ছে সে। এ বার স্কুল ফুটবলের অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে মণিপুরে।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪০
Share:

ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল সে। এখন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।

Advertisement

বছর পনেরোর কৃষ্ণা সিংহ। বাংলার হয়ে স্কুল ফুটবলে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় খেলতে মণিপুর যাচ্ছে সে। এ বার স্কুল ফুটবলের অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে মণিপুরে।

জেলাস্তরের স্কুল ফুটবলেও কৃষ্ণার সাফল্য চোখে পড়ার মতো। ২০১৩ সালে জেলাস্তরের অনূর্ধ্ব-১৪ প্রতিযোগিতায় তার সাফল্য ছিল নজরকাড়া। স্কুল ফুটবলের রাজ্য দলে সহজেই জায়গা করে নেয় সে। ওই বছর উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় রাজ্য রানার্স হয়েছিল। এ বার স্কুল ফুটবলের অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। জেলার জয়ে বড় ভূমিকা ছিল কৃষ্ণার।

Advertisement

গৈতা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী কৃষ্ণার বাড়ি নারায়ণগড়ের প্রত্যন্ত গ্রাম কোটবাড়ে। দিনমজুর পরিবারের মেয়ে কৃষ্ণার বাবা রবি সিংহ চাষের কাজ করেন। নিজের জমি সামান্যই। অন্যের জমিতে মজুর খেটেই চলে সংসার। রবিবাবুর তিন মেয়ের মধ্যে কৃষ্ণা মেজো।

এই অনটনের সংসারেই লুকিয়ে আছে নিরলস লড়াই। দারিদ্র্যতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। গৈতা হাইস্কুলের শিক্ষক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ই কৃষ্ণার কোচ। জগন্নাথবাবুর কাছেই ফুটবলের প্রশিক্ষণ নেয় সে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিনয় দাস মাল মানছেন, “গ্রামেগঞ্জে প্রতিভা রয়েছে। প্রতিভা তুলে আনাটাই জরুরি। এখন গ্রামেগঞ্জে ফুটবল খেলা আগের থেকে বেড়েছে। অনেক ছোট ছোট মেয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এটা ফুটবলের উন্নতির জন্য ভাল বিষয়।” নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোৎ ঘোষও বলছেন, “এই এলাকার গ্রামেগঞ্জে প্রতিভা রয়েছে। বিশেষ করে ফুটবলে। কৃষ্ণারা বেশ ভাল খেলছে।”

ফুটবলের উন্নতিতে দারিদ্রতাই যে প্রধান বাধা তাও মানছেন ক্রীড়াবিদরা। কৃষ্ণারা অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। কৃষ্ণার বাবা রবিবাবু বলছেন, “মেয়েকে নিয়ে আমাদের অনেক আশা। লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছি।” আর কৃষ্ণার কথায়, “ফুটবল খেলতে ভাল লাগে। আরও বড় হতে চাই। ভাল ফুটবল খেলতে চাই।’’এই লড়াই স্বপূরণের লড়াই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন