ফ্রান্সের জোরদার প্রস্তুতি।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হেরেছে জার্মানি। আটকে গিয়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল। ফ্রান্স যে পুরো পয়েন্ট পেয়েছে তার জন্য দরকার হয়েছে ভিডিয়ো অ্যাসিসট্যান্ট রেফারির সৌজন্য। এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও পল পোগবাদের খেলা স্বাভাবিক ছন্দের হাজার মাইলের মধ্যে ছিল না।
ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ে দেশঁ অবশ্য নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার আর একটা সুযোগ পাচ্ছেন বৃহস্পতিবার। কারণ তাদের সামনে পেরু। যে পেরু শুরুতেই ডেনমার্কের কাছে হেরে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এবং বিশ্বকাপেও খেলতে এসেছে কোয়ালিফায়ারের বাধা কোনও রকমে উতরে।
এ বার ফ্রান্সের রক্ষণ সামলানোর দায়িত্বে যাঁরা, তাঁদের একজন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রাফায়েল ভারান স্বীকার করেছেন, প্রথম ম্যাচে দল যা খেলেছে তা দিয়ে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে দারুণ কিছু করা অসম্ভব। পরিষ্কার বুঝিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্সের পারফরম্যান্স মোটেই সুখকর নয়। ‘‘জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা জিততে পারেনি। আমরা পেরেছি। তার মানে এই নয় যে বিরাট কিছু খেলেছি আমরা। বরং উল্টোটাই সত্যি। দেখতে হবে কোথায় কোথায় আমরা মার খাচ্ছি।’’
কোথায় মার খাচ্ছে ফ্রান্স তাও বলতে ছাড়েননি ভারান, ‘‘অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে লক্ষ করলাম ফুটবলারদের মধ্যে এক ধরনের শারীরিক উদ্যমহীনতা। এটা কেন হবে? সবার আগে আমাদের আরও একাত্ম হওয়ার দরকার।’’
হতে পারে একাত্মতার অভাব ছিল ফ্রান্সের খেলায়। কিন্তু ফুটবল পণ্ডিতদের চোখে লেগেছে ফরাসি স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতা। অথচ কী সব নাম! অতোঁয়া গ্রিজম্যান, কিলিয়ান এমব্যাপে, উসমান দেমবেলে। এবং একটু পিছন থেকে এসে যিনি ইপিএলে হামেশাই গোল করে থাকেন সেই পল পোগবা। শুধু তো ফুটবল পণ্ডিতেরা নয়। অসম্ভব উদ্বেগে দেশঁও। আটানব্বইয়ের বিশ্বজয়ী ফ্রান্সের অধিনায়ক সম্ভবত পেরুর বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণ নতুন করে সাজাবেন। এবং প্রথম ম্যাচে খেলা ত্রয়ীর যে কোনও একজনের জায়গায় চলে আসতে পারেন অলিভিয়ের জিহু। অন্তত ফ্রান্সের বিশ্বকাপ দলের কাছাকাছি থাকা ফরাসি সাংবাদিকদের তেমনটাই অনুমান। দেশঁ অবশ্য এটা নিয়ে এখনও পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। ফরাসি কোচের কথা, ‘‘জিতলেও এখনও প্রচুর উন্নতি করতে হবে আমাদের। তবে সঠিক রাস্তা কোনটা আমরা জানি।’’
কিন্তু ফ্রান্সকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে যেতে এমব্যাপে কতখানি তৈরি? অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে তাঁর খেলা হতাশাজনক বললেও কম বলা হবে। ভারান কিন্তু এই খুদে প্রতিভার পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। ‘‘ওর বয়সটা একবার ভাবুন। মাত্র ১৯। এই বয়সে ক’জন ফ্রান্সের জার্সি পেয়েছে? একটু সময় তো ওকে দিতেই হবে।’’
শুধু এমব্যাপে নয়। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ভাল খেলতে পারেননি পোগবাও। এবং এখানেও আশ্বস্ত করছেন ভারান। ‘‘আর একটু দেখুন। মাথা ঠান্ডা রাখুন। পল কবে কী করে দেবে কেউ জানে না।’’ এ দিকে পোগবা নিজে কিন্তু দিব্যি খোশমেজাজে আছেন। রাশিয়াতে পৌঁছেও চুলে নতুন ছাঁট দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে হোটেলের সেলুনে গিয়েছিলেন এমব্যাপেও। আর লে ব্লুজ দু’ঘণ্টার বিমানযাত্রা করে রাশিয়ার প্রত্যন্ত দক্ষিণে একাতেরিনবার্গে পৌঁছেও গিয়েছে। এমনকি অনুশীলনও করেছেন গ্রিজম্যানরা। এখানেই বৃহস্পতিবার পেরুর সঙ্গে তাঁদের লড়াই।